Ads

'সত্যিকারের ভালবাসা' বলতে কী বোঝায়? @মিঃ মধু

'সত্যিকারের ভালবাসা' বলতে কী বোঝায়?  @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা
'সত্যিকারের ভালবাসা' 
বলতে কী বোঝায়?
নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করছেন "মেঘ"

'মেঘ' এর জবানীতেঃ----
সরকারি একটা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স এ অধ্যয়ন করছি। 
আমার উনি'র নাম আদ্রিতা। 
সে ও মাস্টার্স করছে বেসরকারি একটা ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। 
টিউশনি করে যা পাই তা দিয়েই নিজের পড়ালেখার খরচটা চালিয়ে নেই! 

এখন গল্পে আসি!

পৌষের এক সন্ধ্যাইয়, সাতটা নাগাদ ওর সাথে শাড়ি কিনতে যাবার কথা ছিলো। 
হঠাৎ স্টুডেন্ট ফোন করে বললো,

-- স্যার আজ একটু সাতটার দিকে আসেন। আমরা রাতে বাইরে যাবো।

কাল ওর জন্মদিন। পকেটে মাত্র একশো টাকা আর কিছু ভাংতি আছে। আজ টিউশনির টাকাটা দেবার কথা রয়েছে। আমি আগে থেকে বলে রেখেছিলাম। কিন্তু ওর সাথে শাড়ি কিনতে যাবার কথাও বেশ আগে থেকেই হচ্ছে। ওকে ফোন করে বললাম,

-- আমাকে হঠাৎ সন্ধ্যায় পড়াতে যেতে বলেছে। তুমি না হয়, মাকে নিয়েই যাও।

সে অবশ্য একবার বলেছিলো,

-- কোনভাবে কি পরে যাওয়া যায় না?

তবে জোর করেনি। পড়াতে না গিয়েও উপায় নেই যে! টাকাটা যে খুব দরকার! ওর সাথে কাল বিকালে ঘুরবো। ওকে তো কিছু দিতে হবে! রাতে আবার ওর মা যেতে বলেছে। উনি প্রথমত আমাদের জানতেন আমরা একসাথে পড়ি, শুধুই বন্ধু। তখন আমাকে তিনি তেমন একটা পছন্দ করতেন না। 

একদিন হঠাৎ যখন আদ্রিতা খুব অসুস্থ হয়ে পরে, তখন হাসপাতালে আমিই ওদের সাথে সাথে ছিলাম। 
প্রিয় মানুষটার জন্য এতোটুকু তো সবাই করে। তারপর থেকে আমার আর আদ্রিতার যোগাযোগ কখনোই ওর মায়ের কাছে বিরক্তিকর মনে হয়নি! এখন উনি একটু আধটু জানেন আমাদের দুজনের সম্পর্কের কথা। তাছাড়া খালি হাতে তো আর ওদের বাড়িতে যাওয়া যায় না!

পড়াতে যেতে দেরি হয়ে গেলো। স্টুডেন্টদের বাসায় পৌঁছে দেখি সাড়ে সাতটার একটু বেশি। 
তখন তারা বাসা থেকে বের হচ্ছে। আন্টি বললো,

-- বাবা আজ আর পড়াতে হবে না, আমরা বের হচ্ছি। তুমি বরং কাল এসো।

তখন মুখের উপর টাকার কথাটা বলতে পারলাম না। শুধু "হুম" বলে চলে আসলাম। তক্ষুনি ওকে ফোন দিলাম, বললো ও নাকি শাড়ি কিনতে যায়নি। অভিমানে গাল ফুলিয়ে বসে আছে। 
( ভালোবাসার মানুষটার এই অভিমানটুকু তো ভাঙাতেই হবে)
   

'সত্যিকারের ভালবাসা' বলতে কী বোঝায়?  @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা
পরদিন সকালে স্টুডেন্টকে ফোন করে বললাম, আমাকে টাকাটা বিকাশ করতে পারবে কিনা! দরকার হলে, আমি গিয়ে না হয় নিয়ে আসবো। বললো, ওর বাবা-মা নাকি হঠাৎ করেই গ্রামের বাড়ি চলে গেছে। দাদু অসুস্থ। টাকা রেখে যায়নি!

টাকা গিফট সব আশা হাতছাড়া করে দুপুরে শুয়ে ছিলাম। বিকাল চারটা,  ঘুম ভাঙলো ওর ফোনে। বললো, ও নাকি বাসার নিচে রিকশা নিয়ে পনেরো মিনিটের ভিতর আসবে। চট করে চোখ-মুখ ধুয়ে একটা দোমড়ানো মোচড়ানো শার্ট গায়ে দিয়ে নিচে নামলাম। শার্টটা ইস্ত্রি করার কথা একদমই খেয়াল নেই। ও একটা কচি কলাপাতা রঙের শাড়ি পরে এলো। মেয়েটাকে অদ্ভুত রকমের সুন্দর দেখাচ্ছে!।
মেয়েটাকে যতোবার দেখি ততোবারই মনে হয় নতুন করে ভালোবেসে ফেলি! এতোটা মায়াবি তার চোখের চাহনি। আর ভয়ংকর সুন্দর হাসি!

তারপর ওই রিকশা করে গেলাম এয়ারপোর্ট রোডে। দু'পাশে শুকনো কাশফুল। সেখানে কিছু পথশিশু যেন আমাদের জন্যেই অপেক্ষা করছিলো। তাদের সাথে নাকি ওর আগে থেকেই ভাব। কাছে যেতেই ওরা জড়িয়ে ধরে ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে বললো,
আরও পড়ুন 👇👇
১) কি আছে একজন নারীর শরীরে ?
২) কীভাবে নিজেকে পরিবর্তন করা যায়?
৩) বউ যখন অবাধ্য হবে তখন কী করা উচিত?
৪) হিন্দুরা যদি পর্দা করতো, তাহলে কী হতো?
৫) পৃথিবীতে সবচাইতে সত্য কথা কোনগুলো ?
-- হ্যাপি বার্থডে মিষ্টি আপু!

বাচ্চাগুলো ওর জন্যে পদ্মের মালা বানিয়েছে। আমার জন্যেও বানিয়েছে একটা। ওরা নাকি আমাকে চেনে! ও নাকি আমার ছবি বাচ্চাগুলোকে দেখিয়েছে। আমি তো পুরোই অবাক! ওদের মুঠো ভরে চকলেট আর কাপ-কেক দিয়ে চলে এলাম শহরের দিকে। তারপর দু'জন শপিংমলে গিয়ে একটা সাদা পাঞ্জাবী কিনলাম। পরশু নাকি ওর মামাতো ভাই বাইরে থেকে আসছে। তার জন্যেই কিনলো!

পকেটে এখনো সেই ১০০ টাকার নোটটা নিয়ে ঘুরছি। আমাকে একপ্রকার জোর করেই ফুচকার দোকানে টেনে নিয়ে গেলো। একটাই আবদার, তাকে নাকি ফুচকা খাইয়ে দিতে হবে আজ। নিজে একটাও হাত দিয়ে খাবে না। খাইয়ে দেয়ার পুরোটা সময় মেয়েটা আমার দিকে যে মায়াবি দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো, 
আমি আবার নতুন করে মন হলো তাকে ভালোবেসে ফেললাম।

জোরপূর্বক বিলটা আমিই দিলাম। বড্ড খারাপ লাগছে, আজকের দিনেও খালি হাতে দেখা করতে হলো ওর সাথে। রাত আট'টার দিকে রিকশায় দু'জনে ওর বাড়ির দিকে রওনা হলাম। পকেটে আর মাত্র কুড়ি'টা টাকা আছে, তাই আর কিচ্ছু নেবার কথা মাথায়ও আসলো না। পথে যেতে, ও কিছু ফুল আর মিষ্টি কিনলো। বললো, মা নাকি নিতে বলেছে!

ওদের বাসায় পৌঁছাতেই ওর মা এসে দরজা খুললো। ও মায়ের হাতে মিষ্টি আর ফুলগুলো দিয়ে বললো,

-- দেখো মা, ওকে কতো করে নিষেধ করলাম এগুলো না আনার জন্য। কিন্তু কিছুতেই আমার কথা শুনলো না।

শুনে, আমি মুহূর্তেই শক্ত হয়ে গেলাম। কিন্তু মুখে একটা শুষ্ক হাসি হাসলাম। রুমে ঢুকতেই মা বললো,

-- আচ্ছা তোরা দু'জন বসে কথা বল, আমি একটু রান্নাঘরের দিকে গেলাম।

অমনি ও আমার হাতের কব্জিটা ধরে এক ঝটকায় ওর রুমে নিয়ে দরজা আটকে বললো,

-- আমি দেয়ালের দিকে মুখ করে দাড়াচ্ছি, তুমি চট করে এই পাঞ্জাবীটা পরে নাও।

-- মানে কি? ওটা তো তোমার ভাইয়ের জন্য নিলে!

-- কোনো ভাই টাই নেই আমার। তোমার জন্যেই এনেছি, দ্রুত পরো। মা এক্ষুনি চলে আসবে!

আসলেই মেয়েরা তাদের প্রিয় মানুষটাকে কোন কথা দিয়ে কি বুঝায় তা বোঝা বড় ই মুশকিল।



আমি পাঁচ বছরের বাচ্চার মতো নিশ্চুপ হয়ে, পাঞ্জাবীটা পরে নিলাম।
তারপর, রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেরিয়ে এলাম। 
আসার সময় আমার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো, 
নিতে না চাইলেও জোর করে সাথে দিয়ে দিলো।
পকেটের বাকি টাকাটা দিয়ে রিকশা করে বাসায় আসলাম। 
এসে ব্যাগ খুলে দেখি একটা টিফিনবক্স। তার ভেতর খাবার আর উপরে একটা ছোট্ট খাম।
খামের ভেতরে পাঁচশো টাকার চারটে নোট আর ছোট্ট একটা চিরকুট। তাতে লেখা ছিলো,,,,,,,,
"খাবারটা কাল সকালে খেয়ে নিও। অবশ্যই একটু গরম করে নিও।  আর এই টাকাটা তুমি রাখো। বিয়ের পর সুদে আসলে নিয়ে নিবো কিন্তু! বাকিটা জীবন এভাবেই পাশে থেকো।
আর রাস্তা পার হবার সময় আমার হাতটা শুধু শক্ত করে ধরো!"

আহা, পরম সুখে চোখ'টা কি আমার ভিজে উঠলো?
আসলে সত্যি বলতে, ছেলেরা একটা বয়সের পর আর চোখের জল ফেলতে পারে না।
হোক সেটা সুখে কিংবা দুঃখে!


সময় নিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য-
আপনাকে ধন্যবাদ। 

ধন্যবাদান্তেঃ------
মওদুদ আহমেদ মধু (মিঃ মধু)
@মিঃ বুদ্ধিমান গাধা
#_দৃশ্যমান_জীবনের_অদৃশ্য_কাব্য✅





No comments

Powered by Blogger.