ফেইসবুকে স্যাড রোমান্টিক স্ট্যাটাস এর বিশাল কালেকশান--০৫ @মিঃ মধু
ফেইসবুকে স্যাড রোমান্টিক স্ট্যাটাস এর বিশাল কালেকশান--০৫
স্ট্যাটাসঃ- ০১যাদেরকে ছোট বেলা থেকে শুনতে হয় "অসুন্দর, বাজে দেখতে",
যারা নিজেদেরকে কখনো সুন্দর মনে করে না, যাদের পকেটে টাকা নেই,
যাদের মাথায় বুদ্ধি কম, যারা ছোটবেলায় লাস্ট বেঞ্চে বসতো,
তারা খুব ভালোভাবে বুঝে যায়, যে তাদের জন্য কোথাও কোনো মানুষ কোনোদিন অপেক্ষা করবে না,
তারা খুব ভালোভাবে বুঝে যায়, যে তাদের জন্য কোথাও কোনো মানুষ কোনোদিন অপেক্ষা করবে না,
তাদের জন্য কোনো মানুষ ঘরের কোনায় বসে হাউমাউ করে কাঁদবে না।
তারা বুঝে যায়, শেষ ট্রেনে করে তাদের জন্য কেউ বাড়ি ফিরবে না, তাদের জন্মদিনে কেউ তাদের কোনো সারপ্রাইজ দেবে না। ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের কথা ভেবে কেউ ফাঁকা স্টেশনে বসে মেসেজ দেবে না.....
তারা বুঝে যায়, তাদের জন্য কেউ ভাতের থালা আগলে ঘুমভর্তি চোখ নিয়ে জেগে থাকবে না।
তারা বুঝে যায়, শেষ ট্রেনে করে তাদের জন্য কেউ বাড়ি ফিরবে না, তাদের জন্মদিনে কেউ তাদের কোনো সারপ্রাইজ দেবে না। ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের কথা ভেবে কেউ ফাঁকা স্টেশনে বসে মেসেজ দেবে না.....
তারা বুঝে যায়, তাদের জন্য কেউ ভাতের থালা আগলে ঘুমভর্তি চোখ নিয়ে জেগে থাকবে না।
গায়ের চাদর সরে গেলে তাদের গায়ে চাদর জড়িয়ে দেবে না, ঠান্ডা লাগলে ফ্যান অফ করে দেবে না....
তারা বুঝে যায়, বৃষ্টির দিনে তাদের কেউ ছাতা ধরিয়ে দেবে না হাতে, প্রখর রোদে ফিরলে ঘরে রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মোছানোর একটা লোকও থাকবে না তাদের কাছে....
তারা খুব ভালোভাবে বুঝে যায়, তারা ঘরে না থাকলে কেউ তাদের বিছানা ঝেড়ে দেবে না, ধুলো ভর্তি তাক ঝেড়ে মুছে ফুলদানি সাজিয়ে রাখবে না....
তারা বুঝে যায়, জ্বর হলে মিনিটে মিনিটে কেউ ফোন করে তাদের খবর নেবে না, ওষুধ এগিয়ে দেবে না....
এই মানুষগুলো নিজের মনখারাপ নিজেরাই সারিয়ে ফেলে, নিজেরাই মাথা ব্যথার ওষুধ খেয়ে খালিপেটে ঘুমিয়ে পড়ে, নিজেদের জন্য নিজেরাই ভাত রান্না করে, সময় পেলে নিজেদের ঘর নিজেই গোছায়, ঠান্ডা লাগলে মাঝরাতে নিজেরাই ফ্যান অফ করতে ওঠে....
এদের কারোর কাছেই কোনো এক্সপেক্টেশন থাকে না, সবার আড়ালে লুকিয়ে বাঁচিয়ে চোখ নীচু করে হেঁটে যায়।যে মানুষগুলোর কেউ থাকে না, সেই মানুষগুলো ভেতর ভেতর হাজার বার মরে গিয়ে নিজের জন্য বাঁচতে শিখে যায়....
একটা সময়ের পর এই মানুষগুলো এতটাই শক্ত হয়ে যায় যে নিজের জীবনে আর কাউকেই হুটহাট ভিড় বাড়াতে দেয় না....
স্ট্যাটাসঃ- ০২
মানুষ সম্পর্ক লুকোতে পারে, প্রিয়জনের নাম লুকিয়ে রাখতে পারে কিন্তু আবেগগুলো লুকোতে পারে না।
মানুষ রাগ, ক্ষোভ, অপমান লুকোতে পারে, কিন্তু অভিযোগ লুকাতে পারে না।
মানুষ ভেঙে পড়লেও চুপ থাকতে পারে, কিন্তু তার দুই চোখ বলে দেয় তার একটা আশ্রয়ের দরকার প্রচন্ড, একটা কোলের দরকার।
মানুষ কান্না, দুঃখ, যন্ত্রণা, চিৎকার লুকোতে পারে, কিন্তু গভীর অভিমান লুকাতে পারে না।
মানুষ কাছের মানুষকে সবার আড়ালে সরিয়ে রাখতে পারে, কিন্তু কাছের মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার ভয় লুকোতে পারে না....
মানুষ তীব্র রোদেও হেঁটে যেতে পারে, তবুও তার দীর্ঘশ্বাস বলে তার একটা ছায়ার দরকার....
মানুষ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে কিন্তু ভালোবাসায় পড়লে তার অনুভূতিগুলোকে লুকোতে পারে না, আয়নায় নিজেকে দেখলেই বুঝতে পারে,
তারা বুঝে যায়, বৃষ্টির দিনে তাদের কেউ ছাতা ধরিয়ে দেবে না হাতে, প্রখর রোদে ফিরলে ঘরে রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মোছানোর একটা লোকও থাকবে না তাদের কাছে....
তারা খুব ভালোভাবে বুঝে যায়, তারা ঘরে না থাকলে কেউ তাদের বিছানা ঝেড়ে দেবে না, ধুলো ভর্তি তাক ঝেড়ে মুছে ফুলদানি সাজিয়ে রাখবে না....
তারা বুঝে যায়, জ্বর হলে মিনিটে মিনিটে কেউ ফোন করে তাদের খবর নেবে না, ওষুধ এগিয়ে দেবে না....
এই মানুষগুলো নিজের মনখারাপ নিজেরাই সারিয়ে ফেলে, নিজেরাই মাথা ব্যথার ওষুধ খেয়ে খালিপেটে ঘুমিয়ে পড়ে, নিজেদের জন্য নিজেরাই ভাত রান্না করে, সময় পেলে নিজেদের ঘর নিজেই গোছায়, ঠান্ডা লাগলে মাঝরাতে নিজেরাই ফ্যান অফ করতে ওঠে....
এদের কারোর কাছেই কোনো এক্সপেক্টেশন থাকে না, সবার আড়ালে লুকিয়ে বাঁচিয়ে চোখ নীচু করে হেঁটে যায়।যে মানুষগুলোর কেউ থাকে না, সেই মানুষগুলো ভেতর ভেতর হাজার বার মরে গিয়ে নিজের জন্য বাঁচতে শিখে যায়....
একটা সময়ের পর এই মানুষগুলো এতটাই শক্ত হয়ে যায় যে নিজের জীবনে আর কাউকেই হুটহাট ভিড় বাড়াতে দেয় না....
স্ট্যাটাসঃ- ০২
মানুষ সম্পর্ক লুকোতে পারে, প্রিয়জনের নাম লুকিয়ে রাখতে পারে কিন্তু আবেগগুলো লুকোতে পারে না।
মানুষ রাগ, ক্ষোভ, অপমান লুকোতে পারে, কিন্তু অভিযোগ লুকাতে পারে না।
মানুষ ভেঙে পড়লেও চুপ থাকতে পারে, কিন্তু তার দুই চোখ বলে দেয় তার একটা আশ্রয়ের দরকার প্রচন্ড, একটা কোলের দরকার।
মানুষ কান্না, দুঃখ, যন্ত্রণা, চিৎকার লুকোতে পারে, কিন্তু গভীর অভিমান লুকাতে পারে না।
মানুষ কাছের মানুষকে সবার আড়ালে সরিয়ে রাখতে পারে, কিন্তু কাছের মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার ভয় লুকোতে পারে না....
মানুষ তীব্র রোদেও হেঁটে যেতে পারে, তবুও তার দীর্ঘশ্বাস বলে তার একটা ছায়ার দরকার....
মানুষ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে কিন্তু ভালোবাসায় পড়লে তার অনুভূতিগুলোকে লুকোতে পারে না, আয়নায় নিজেকে দেখলেই বুঝতে পারে,
সে কাউকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে....
স্ট্যাটাসঃ- ০৩
আমি কখনো আফসোস করি না কেউ যদি আমার সাথে স্রেফ দরকারের সম্পর্ক রাখে।
স্ট্যাটাসঃ- ০৩
আমি কখনো আফসোস করি না কেউ যদি আমার সাথে স্রেফ দরকারের সম্পর্ক রাখে।
আমি কখনো আফসোস করি না, যে কেউ শুধু বিপদে আপদে পড়লে আমায় মনে করে....
আমি কখনো আফসোস করি না, কেউ যদি সবসময় ফোন করে নিজের সমস্যার কথা বলে....
একটা মানুষের উপকারে কাজে লাগতে পারা অনেক বড় আত্মতৃপ্তি, একটা মানুষকে উপকার করতে পারা বিরাট গর্বের বিষয়, এটা আমি উপলব্ধি করেছি বহুবার....
কোনো মানুষ দিশেহারা হয়ে আমার কাছে এসেছে আমার উপকার চাইতে! অর্থাৎ আমাকে সে ঠিক কতখানি বিশ্বাস করে, যে অসহায় হয়ে আমার কাছে এসেছে! এই বিশ্বাস অর্জন করা একটা এচিভমেন্টের ব্যাপার.....
আমি শুধু আফসোস করি সেইসব দুমুখো মানুষদের জন্য, যারা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও একটাও প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারে না। দিনের পর দিন কথা দিয়েও ভুলে যায় সেই কথা.....
আমি শুধু আফসোস করি সেইসব মানুষদের জন্য যারা সবসময় হাত পেতে চাইতে জানে,
আমি কখনো আফসোস করি না, কেউ যদি সবসময় ফোন করে নিজের সমস্যার কথা বলে....
একটা মানুষের উপকারে কাজে লাগতে পারা অনেক বড় আত্মতৃপ্তি, একটা মানুষকে উপকার করতে পারা বিরাট গর্বের বিষয়, এটা আমি উপলব্ধি করেছি বহুবার....
কোনো মানুষ দিশেহারা হয়ে আমার কাছে এসেছে আমার উপকার চাইতে! অর্থাৎ আমাকে সে ঠিক কতখানি বিশ্বাস করে, যে অসহায় হয়ে আমার কাছে এসেছে! এই বিশ্বাস অর্জন করা একটা এচিভমেন্টের ব্যাপার.....
আমি শুধু আফসোস করি সেইসব দুমুখো মানুষদের জন্য, যারা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও একটাও প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারে না। দিনের পর দিন কথা দিয়েও ভুলে যায় সেই কথা.....
আমি শুধু আফসোস করি সেইসব মানুষদের জন্য যারা সবসময় হাত পেতে চাইতে জানে,
দুই মুঠো খুলে কখনো উপড়ে দিতে জানে না....
আমি শুধু আফসোস করি তাদের জন্য যারা সাহায্য নেওয়ার পর অকৃতজ্ঞ বেঈমান হয়ে যায়। যার কাছ থেকে সাহায্য পায় তাকেই লাথি মারে, যার থালায় খায়, তার থালায় থুতু ফেলে....
আর ঠিক এই কারণেই সবাইকে সাহায্য করতে নেই, কারণ সবাই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য হয় না....
স্ট্যাটাসঃ- ০৪
আমরা যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করি, তাকে পরীক্ষানিরীক্ষা না করেই ভালোবাসি। আমরা যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করি, তার জন্য নিজের সবটা খালি করে দিতে পারি একঝটকায়....
আমরা যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করি, তার কাছে বারবার অপমানিত হয়েও পড়ে থাকি, তার কাছে আমরা ঠকতে চাই বারবার....
আমরা আগের থেকেই ঠিক করে নিই যে এই মানুষটা আমাদের জন্য পারফেক্ট, আমাদের যত্ন নেওয়ার জন্য এই মানুষটাই পারফেক্ট। একজন অচেনাকে যাচাই না করেই ভেবেনি আমাদের আগলে রাখার ক্ষমতা এই মানুষটার আছে....
সে হয়তো পাত্তাও দেয় না আমাদের, তিনচারদিন বাদে একবার খোঁজ নেয়, অথচ আমরা তার জন্যই অপেক্ষা করি। ভাত খেতে খেতে তার কথা ভাবি, একটা রিংটোন, তার একটা গলার আওয়াজ শোনার জন্য রাতের পর রাত জেগে থাকি....
একবার সে "শুনছো" বলে ডাকলে কেমন যেন মাতাল মাতাল লাগে নিজেকে, সে যত দূরে ঠেলে দেয়, ততই কাছে যাওয়ার তীব্রতা বেড়ে যায়, জেদ চেপে যায় মাথায়। যতই সে আঘাত করে, ততই আরো আরো বেশি করে ভালোবেসে ফেলি তাকে, দূর থেকে তাকে ছুঁতে চাই, তার থেকে পাওয়া ব্যথা গুলোকে ভেতর ভেতর যাপন করি....
সে বারবার অপমান করে তাড়িয়ে দিলেও আমরা কোনোদিন অপমান করতে পারি না তাকে, বরং তার থেকে অপমান পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি....
আসলে ভীষণভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটা ভীষণরকম জাঁকানো যন্ত্রণার দরকার, যাকে জাপটে ধরে সারাটা জীবন "বেঁচে আছি, ভালো আছি" বলা যায়...
স্ট্যাটাসঃ- ০৫
"আক্ষেপ" ভীষণ ভারী একটা শব্দ, জীবনে অনেককিছুই হারিয়েছি, অনেক মানুষ, অনেক মুহূর্ত হারিয়েছি কিন্তু কখনো আক্ষেপ করিনি....
টাকাপয়সা বাড়িগাড়ি পাইনি বলে কখনো আক্ষেপ করিনি, প্রিয়জন ঠকিয়ে চলে গেছে বলে কখনো আক্ষেপ করিনি.....
নিজের কাছের মানুষের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়েছি, কিন্তু বুকের ভেতরে কোনো আক্ষেপ পুষে রাখিনি....
পা ভেঙে দুই মাস বিছানায় থাকাতে স্কুলের পরীক্ষা দিতে পারিনি বলে কান্নাকাটি করেছি কিন্তু কখনো আক্ষেপ করিনি, নিজের মনকে বুঝিয়েছি "যা হয়, ভালোর জন্যই হয়"......
প্রথম প্রেমে চূড়ান্ত ভাবে ঠকে যাওয়ার পরেও কোনোদিন আক্ষেপ করিনি.....
আক্ষেপ শব্দটা একটা গোটা জীবনকে কুরেকুরে শেষ করে দেয়। এক একটা দীর্ঘশ্বাস এক একটা আক্ষেপের জন্ম দেয়,আর চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে মাঝরাতে.....
আক্ষেপের একটা ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে ঠিক পেঁয়াজের মতো অনেকটা। যখনই কোনোকিছু না পাওয়ার জন্য আক্ষেপ করেছি, তখনই শুধুই কান্না ছাড়া আর কিছু জমাতে পারিনি দু হাতের মুঠোয়...
তাই নিজের জীবন নিয়ে, জীবনে না পাওয়া সুযোগ নিয়ে, হারিয়ে ফেলা মানুষজন নিয়ে আর আক্ষেপ করি না। এখন আর কোনো মানুষকে আটকে রাখি না, এখন নিজেকে বুঝিয়ে নিয়েছি কিছু মানুষ চলে যাওয়ার জন্যই আমাদের জীবনে আসে....
এখন মানুষের আসা যাওয়াটা আর কোনো ম্যাটার করে না। কেউ যদি থেকে যায় তাকে গুরুত্ব দিই, আর কেউ না থাকতে চাইলে তাকে দরজা খুলে দিই....
আর কোনো আক্ষেপ করি না কারোর জন্য, এখন অনেকটা পরিণত হয়ে গেছি। একা থাকতে শিখে গেছি, নিজেকে গোছাতে শিখে গেছি....
আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে শিখে গেছি,
"যা কিছু হয় সব ভালোর জন্যই হয়".....
স্ট্যাটাসঃ- ০৬
আমি এত উদার নই, আমি এত ভালো মানুষ নই, আমি আমার প্রিয় মানুষটাকে সবার সাথে ভাগ বাটোয়ারা করতে পারবো না কখনোই। যে আমার, সে শুধু আমারই....
আমি চাই আমার প্রিয় মানুষটা সবার সাথেই মিশুক, আড্ডা দিক, কাজের কথা বলুক, গল্প করুক, কিন্তু দিনের শেষে সেই সমস্ত গল্পগুলো আমার সাথে ভাগ করে নিক, আমার সাথে কথা না বলে যেন কোনো রাতে সে ঘুমিয়ে না পড়ে....
প্রিয় মানুষটারও ভালো লাগার মানুষ থাকতে পারে, ক্রাশ ট্রাস থাকতেই পারে কিন্তু ক্রাশের সাথে যেন কোনো সম্পর্ক না থাকে তার। তার ভীষণ ভালো লাগার মানুষদের সাথে যেন তার ডেইলি যোগাযোগ না হয়, রোজ কথা না হয়, দরকার ছাড়া যেন ওইসব ভালো লাগার মানুষদের সাথে কথা না হয়।
ওই অমুক তমুকের সাথে আমি আমার মানুষটাকে কখনোই ভাগ করে নিতে পারবো না....
আমার সম্পূর্ণ অধিকার যেন থাকে আমার প্রিয় মানুষটার উপর, আমি যখন তখন তাকে যেন কল দিতে পারি। তার মনখারাপ হলে সে যেন আমার সাথেই তার মনের সমস্ত কথা ভাগ করে নেয়, আমি যেন তার জীবনে বেস্ট ফ্রেন্ড হই.....
আমার সাথে ছাড়া আর কারোর সাথে যেন কোনোদিন সে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান না করে।
তার বন্ধুবান্ধবের সাথে, তার ফ্যামিলির সাথে যেমন আমার সুসম্পর্ক থাকবে, তেমনই আমারও বন্ধুবান্ধবের ব্যাপারে ফ্যামিলির ব্যাপারে সে সবকথা জানবে....
রাতের বেলায় যেন তার ফোনে অন্য অচেনা নম্বর থেকে ফোন না আসে, কারণ ওই রাতটুকু একান্ত আমাদের....
হ্যাঁ এতগুলো ডিমান্ড যদি পূরণ না হয়, তাহলে কোনো সম্পর্কই ভালো চলতে পারে না। সম্পর্কে প্রাইভেসি, নিজস্ব স্বাধীনতা,অভিযোগ, অভিমান ঢুকে গেলেই সম্পর্ক নষ্ট হয়....
না, আমি কখনোই তার ফোন চেক করবো না, কারণ একটা বিশ্বাস থাকবে যে সে কখনোই আমায় ছাড়া অন্য কাউকে গুরুত্ব দেবে না। আর এই বিশ্বাসটাই সম্পর্কের বন্ধন.…..
এই বিশ্বাসটা না থাকলে সম্পর্ক না রাখাই ভালো।
এই বিশ্বাসটা দুজনকেই বহন করতে হবে, কোনো তৃতীয় ব্যক্তি আমাদের ভেতরে আসতে চাইলে দুজনকেই সেই তৃতীয় ব্যক্তিকে বাইরে ছুঁড়ে ফেলতে জানতে হবে.....
দুজনের ভেতর বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস, ভালোবাসা বজায় থাকলে কেউ কোনোদিন ইচ্ছে করলেও সম্পর্ক ভাঙতে পারবে না....
আর কিছু মানুষকে কখনোই অন্যের সাথে ভাগ করতে নেই, ধীরে ধীরে সম্পর্কের ভেতর দূরত্ব বাড়তে থাকে তাহলেই....
স্ট্যাটাসঃ- ০৭
"জীবনে চাহিদা যত কম থাকবে জীবন ততই বেশি সুন্দর হবে" আমি এই তত্ত্বে বিশ্বাসী নই....
সবার জীবন এক সরলরেখায়, এক যুক্তিতে, এক নিয়মে, এক সূত্রে চলে না....
এক একজনের জীবনে চাহিদা খুব কম থাকে, সেটা অবশ্যই ভালো। কিন্তু যার জীবনে অনেক চাহিদা আছে, অনেক ইচ্ছে আছে, অনেক স্বপ্ন আছে তাকে কেনই বা কম্প্রোমাইজ করতে হবে, তাকে কেনই বা মানিয়ে নিতে হবে? তাকে কেনই বা নিজের চাওয়াপাওয়া গুলোর সাথে বোঝাপড়া করতে হবে.....
ব্যাপারটা হলো, যার জীবনে অল্প চাহিদা আছে, সেও যেমন সুন্দর, আবার যার জীবনে অনেক অনেক চাহিদা আছে সেও সুন্দর। শুধু নিজের সমস্ত চাহিদাগুলোকে পূরণ করার পথটা জানতে হবে....
নিজেকে পরিশ্রম করতে হবে, নিজের ইচ্ছেগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে, সেগুলো নিয়ে দিনরাত খোলা চোখে স্বপ্ন দেখতে হবে....
এবং সবচেয়ে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, জীবনের কাছে যাদের বিশাল চাহিদা আছে তারা যেন নিজের জীবনে নিজের মতোই একজন লাইফ পার্টনার পায়....
জীবনের কাছে অনেক অনেক চাহিদা থাকা মানুষগুলোর এমন একজন পার্টনার থাকা দরকার, যে পার্টনার সেই চাহিদাগুলোকে গুরুত্ব দেবে এবং দুজনে মিলে দিনরাত পরিশ্রম করে সেইসব চাহিদাগুলোকে, স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করবে....
আমার যদি ফ্ল্যাট কিনতে ইচ্ছে হয়, সেই ফ্ল্যাটটাকে নিজের মতো সাজাতে ইচ্ছে হয়, তাহলে যেন আমার পার্টনারও একইসাথে ফ্ল্যাট কেনার এবং ফ্ল্যাটটাকে সাজানোর স্বপ্নটা দেখে। দুজনে মিলে একসঙ্গে লড়াই করলেই জীবনে সব স্বপ্ন পূরণ হতে পারে....
একা একা লড়াই করে নিজের ইচ্ছেগুলো পূরণ করা ভীষণ শক্ত, অসম্ভব নয়, তবে শক্ত। সেই জায়াগায় দুজনে মিলে যদি একটাই স্বপ্ন দেখে, সেই স্বপ্নটাকে যদি একসঙ্গে পূরণ করার জন্য পরিশ্রম করে, তাহলে জীবন সুন্দর হয়ে ওঠে....
জীবনের কাছে প্রচুর প্রচুর চাহিদা থাকা জীবনে দুঃখ পাওয়ার কারণ হতে পারে না, যদি আমরা সেইসব চাহিদা গুলোকে পূরণ করার সঠিক পথ খুঁজে পাই....
অন্যের ঘাড়ের উপর নিজের সব দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে দিনরাত "আমার কোনো স্বপ্ন পূরণ হলো না, আমি জীবনে কিছুই পেলাম না" বলে ঘ্যানঘ্যান করলে জীবন থেকে দুঃখ কোনোদিন কমবে না....
দুজনে মিলে লড়াই করতে হবে, আর তার জন্য একজন সঠিক লাইফ পার্টনার থাকা আবশ্যিক। জীবনে প্রচুর চাহিদা থাক, শুধু সেই চাহিদাগুলোকে পূরণ করার মতো জেদ, ইচ্ছে, সাহস ও আত্মবিশ্বাসও যেন থাকে, তাহলেই কোনো রাস্তা কঠিন হয়....
স্ট্যাটাসঃ- ০৮
হাজারটা অবহেলা অপমান সহ্য করেও তুমি এতদিন যে মানুষটার পাশে ছিলে, সেই মানুষটার পাশ থেকে জাস্ট কদিনের জন্য সরে যাও....
তুমি সরে গিয়ে দেখো সে তোমায় খুঁজছে কিনা! নিজেকে তার কাছ থেকে আড়াল করে দেখো সে তোমায় গুরুত্ব দিচ্ছে কিনা!....
ভালোবাসা একতরফা হতে পারে, কিন্তু সম্পর্ক কখনোই একতরফা গড়ে ওঠে না। তাই একটা সম্পর্কে দুজনেরই দুজনের প্রতি একিরকমের ডেডিকেশন, বিশ্বাস, বন্ধুত্ব থাকা উচিত....
যে মানুষটা সারাটাদিন অপেক্ষা করে তার কাছের মানুষটার গলার আওয়াজ শোনার জন্য, থালা আগলে সারাটা রাত বসে থাকে, হাজারটা অপমান সহ্য করে, হাজারটা অভিমান জমিয়েও প্রিয় মানুষটার জন্মদিন কখনো ভুলে যায় না, বারবার অবহেলিত হয়েও প্রিয় মানুষটার জ্বর হলে ছুটে যায়, সেই মানুষটাকে ইগনোর করা পাপ....
উল্টোদিকের মানুষটা যদি নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাহলে এভাবে কোনো সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হতে পারে না। তাই সেই মুহূর্তে নিজের থেকেই কিছুদিনের জন্য দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়া উচিত উল্টোদিকের মানুষটার থেকে...
দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার পর যদি উল্টোদিকের মানুষটা তোমায় খোঁজে, নিজের ভুল বুঝতে পেরে তোমার কাছে ক্ষমা চায়, তাহলে বুঝে নিও সম্পর্ক এখনো ভালো আছে, জাস্ট কয়েক মুহূর্তের জন্য সম্পর্কটা শিথিল হয়ে গিয়েছিল.....
আর যদি তুমি দূরে সরে যাওয়ার পরও উল্টোদিকের মানুষটা তোমায় একবারও না খোঁজে, একবারও না তোমার সাথে কথা বলতে চায়, তাহলে বুঝে যেও সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গেছে, তখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো....
নষ্ট সম্পর্কে পড়ে থাকার চেয়ে একা থাকা ভালো।
আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে সস্তা বানাই প্রিয় মানুষদের কাছে, আমরাই প্রয়োজনের থেকে বেশি যত্ন নিই প্রিয় মানুষটার, নিজের ইচ্ছেগুলোকে দমিয়ে উল্টোদিকের মানুষটার ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দিই সবসময়, আর সেখানেই সবচেয়ে বড় ভুল করি....
যে মানুষ নিজেকে গুরুত্ব দেয় না, তাকে কেউ কোনোদিন গুরুত্ব দেবে না, এটাই সমাজের নিয়ম...
একটা সম্পর্কে সবকিছুই সমান সমান হয়, কেউ একজন বেশি গুরুত্ব পাবে, আর কেউ একজন কোনো গুরুত্বই পাবে না, এভাবে সম্পর্ক দীর্ঘদিন টিকে থাকে না....
একটা সম্পর্কে দুজনকেই দুজনের ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দেওয়াটা দরকার। একজনের চাহিদা পূরণ হবে, আর একজনের কোনো চাহিদা পূরণ হবে না, এভাবে সম্পর্ক সুন্দর হয় না, বরং "বোঝা" হয়ে যায় একটা সময়ের পর....
তাই আমি মনে করি, কিছু কিছু সময় নিজের থেকেই সামান্য দূরত্ব বাড়িয়ে দেখে নেওয়া উচিত উল্টোদিকের মানুষটা আদৌ আমাদের পরোয়া করছে কিনা!
সামান্য দূরত্ব বাড়িয়ে দেখে নেওয়া উচিত সম্পর্কটা আদৌ ভালো আছে কিনা!.....
স্ট্যাটাসঃ- ০৯
কারোর সাথে সেক্স করার জন্য ভালোবাসার নাটক করবেন না, কারোর অনেক অর্থ বলেই তাকে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দেবেন না। কেউ আপনার হাতে পায়ে ধরে ভালোবাসার ভিক্ষা চাইছে বলেই তাকে ভালোবাসার কথা বলে বসবেন না....
যদি ভালোবাসতে পারেন পুরোপুরি মন থেকে, তবেই ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিন। যদি একসাথে থাকার সদিচ্ছা থাকে, যদি পাশাপাশি থাকার সদিচ্ছা থাকে, যদি যে কোনো সমস্যায় একসঙ্গে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন তবেই ভালোবাসাবাসির কথা বলুন....
অন্যকিছু পাওয়ার জন্য বা কাউকে করুণা করে "ভালোবাসি" বলে নাটক করবেন না, নাটক কিন্তু বেশিদিন করা যায় না।
হ্যাঁ জানি, সেক্স, টাকাপয়সা, উপহার এগুলো জীবনে চলার পথে খুবই দরকার। কিন্তু ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য কেবলমাত্র ভালোবাসা থাকাটা দরকার.....
ভালোবাসা থাকলে দুজনে মিলে একসঙ্গে লড়াই করে নিজেদের সমস্ত ইচ্ছে পূরণ করা যাবে, ভালোবাসা থাকলে দুজনেই দুজনের কাছে নিজেকে আপনা থেকেই সমর্পণ করবে।
কিন্তু টাকাপয়সা, বা শরীর পাওয়ার জন্য ভালোবাসার অজুহাত দেবেন না। আর কাউকে করুণা করেও ভালোবাসার কথা বলবেন না....
"ভালোবাসা" শব্দটার উপর একটা মানুষের গোটাজীবন নির্ভর করে, অনেক স্বপ্ন, অনেক লড়াই নির্ভর করে....
একটা মানুষের বিশ্বাস ভেঙে দেওয়া পাপ, আপনি আজকে একজনের বিশ্বাস ভাঙলে, কালকে কিন্তু কেউ না কেউ ঠিকই আপনার বিশ্বাস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে, মনে রাখবেন প্রকৃতি ঠিকই প্রতিশোধ নেয়....
স্ট্যাটাসঃ- ১০
"সবার জীবনে একটা গোপন প্রেম থাকলে, জীবনটা খুব সুন্দর হয়। যে প্রেমের কথা দুটো মানুষ ছাড়া আর কেউ কোনোদিন জানবে না".....
আমি আগে এমনটাই ভাবতাম, কিন্তু যত বয়স বেড়েছে ততই ধারণা পাল্টেছে। গোপন শব্দটাই একটা ভয়ঙ্কর শব্দ, গোপন কোনোকিছুই বেশিদিন ভালো নয়....
গোপন প্ৰেম হোক বা গোপন মান অভিমান, রাগ, দুঃখ, ব্যথা, গোপন সম্পর্ক! কোনোকিছুই বেশিদিন ভালো নয়.....
কোনো মানুষের প্রতি যে কোনো অনুভূতিই একটা সময়ের পর স্বীকৃতি পেতে চায়, একটা মর্যাদা চায়, একটা সম্মান চায়।
যে কোনো গোপন প্রেম একটা প্রাণখোলা বারান্দা চায়, যে বারান্দায় বসে বর্ষাদিনে চায়ের কাপ হাতে রাস্তায় জমা কাদায় বাচ্চাদের হুটোপুটি করতে দেখা যায়....
যে বারান্দায় রোদ উঠলে ন্যাপথলিন মাখানো পুরোনো কাপড় গরম করে নেওয়া যায়....
যে বারান্দায় গোলাপ ফুলের টব রাখা যায়, খুব মেঘ করলে গরম গরম চপ ভেজে যে বারান্দায় বসে রবীন্দ্রগান শোনা যায়....
লুকিয়ে চুরিয়ে প্রেম করার একটা বয়স থাকে, সেই বয়সটা পেরোনোর পর গোপন প্রেমটা বড্ড তড়পায়, সাংঘাতিক কষ্ট দেয়....
একটা বয়সের পর দুটো মানুষ একে অপরের হাত ধরে মাথা উঁচু করে রাস্তায় হাঁটতে চায়, সংসার পাততে চায়, মাসকাবারির বাজারের ফর্দ করতে করতে ছিঁড়ে যাওয়া বোতাম লাগাতে চায় জামায়...
সব প্ৰেম একটা বয়সের পর বটগাছ হয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে চায়, সমস্ত ঝড়বৃষ্টি পেরিয়েও একে অপরের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে চায়....
আর যে প্রেমকে সারাজীবন আড়ালে গোপনে বাঁচিয়ে রাখতে হয়, যে প্রেম কোনোদিনই মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে না, যে প্রেমের ব্যাপারে চিৎকার করে কোনোদিনই কাউকে বলা যায় না!
সেই প্রেম সারাজীবনই শুধু ব্যথা দিয়ে যায়, সেই প্রেম সারাজীবন কষ্ট দেয়, ভেতর ভেতর মরে যায় মানুষ নিজের প্রেমটাকে গোপন রাখতে রাখতে....
আড়ালে আবডালে লুকিয়ে সম্মান বা শ্রদ্ধা করা যায় কোনো মানুষকে....
কিন্তু গোপনে আড়ালে লুকিয়ে সারাজীবন প্রেম করা যায় না, ইনফ্যাক্ট লুকিয়ে লুকিয়ে কারোর সাথেই সারাজীবন সম্পর্ক রাখাও উচিত নয়...
যে সম্পর্ক সকলের সামনে সম্মান পায় না, সেই সম্পর্কে থাকা দুটো মানুষও একটা সময়ের পর থেকে একে অপরকে অসম্মান করতে শুরু করে....
একে অপরকে অপমান করতে শুরু করে, একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করে....
গোপন প্রেম বা সম্পর্ক একসঙ্গে অনেকগুলো জীবন নষ্ট করে দেয়, দুটো পরিবারকে শেষ করে দেয়....
স্ট্যাটাসঃ- ১১
প্রায় দুবছর হতে গেল, আমরা একসাথে শুইনি, একে অপরকে ছুঁয়েও দেখিনি ঠিক করে, আজ ভীষণ ক্লান্ত....
খুব সামান্য কথাও ঘুরিয়ে বলেছি, ঝামেলা করেছি, গোটা দিন না খেয়ে বাইরে ঘুরে বেড়িয়েছি, তবু বাড়ি ফিরিনি শুধু কেউ কারোর মুখ দেখতে চাই না বলে...
একসাথে বাজার করতে যাইনি কতদিন! রেস্টুরেন্টে পাশাপাশি বসে একে অপরকে কতদিন খাইয়ে দিইনি, ছাদ থেকে দুজনে দুজনের জামাকাপড় তুলে আনিনি, নিজের কাপড়টুকু গুছিয়ে নিয়ে নেমে এসেছি নীচে....
একে অপরের জন্মদিনটাও ফেসবুকের নোটিফিকেশন দেখে মনে রাখতে হয়েছে, নইলে সেটাও মনে থাকতো না....
আমাদের জ্বর হলে কেউই কারোর কপাল ছুঁইয়ে একবারও দেখিনি জ্বরটা বাড়লো কিনা.....
আমাদের মধ্যে কথা ফুরিয়ে এসেছে, অধিকার ফুরিয়ে এসেছে, যত্ন ফুরিয়ে এসেছে, আবদার ফুরিয়ে এসেছে....
আমরা স্রেফ সম্পর্কটুকু গোছাতে পেরেছি হয়তো, কিন্তু আমরা দুজনেই দুজনের কাছে ফুরিয়ে এসেছি....
আমরা না এতটাই আলাদা হয়ে গেছি একে অন্যের থেকে, যে পাশাপাশি শুয়েও কেউ কারোর মন খারাপের কারণ জিগ্যেস করতে পারি না! কেমন যেন একটা লাগে! মনে হয়, ধুর, আবার ঝগড়া হবে, তার চেয়ে থাক যে যেমন আছে.....
আমরা এতটাই দূরে সরে গেছি যে দুজনে দুজনের গায়ের গন্ধটাও ভুলতে বসেছি, আমরা একে অপরের চোখে নিজেদেরকে আর খুঁজে পাই না.....
একটা সময়ের পর মানুষকে বুঝতে শিখতে হয়, নিজের জায়গা ছেড়ে দিতে হয়, একটা সময়ের পর মানুষ মানুষের কাছে কিছু চাওয়া পাওয়ার আশায় কিংবা শারীরিক হওয়ার আশায় যায় না। স্রেফ প্রাণ খুলে দুটো সুখ দুঃখের কথা বলতে যায়....
যাদের মধ্যে কথা বলার সুযোগটুকুও থাকে না, তাদের আলাদা হয়ে যেতে হয়, "ভালো থেকো" বলে দেওয়াল তুলে দিতে হয়.....
আসলে ভালোবাসা মানুষকে সম্পূর্ণ নতুন রূপে গড়েও তুলতে পারে, আবার ধ্বংসও করতে পারে। আমরা খুব যত্ন করে একে অন্যকে ধ্বংস করে ফেলেছি, এবার সরে যাওয়ার পালা, যাতে বাকি জীবন কিছুটা কম অভিনয় করতে হয়....
দূরত্ব বাড়লে একে অপরের চোখে আর মায়া ভরা জল দেখতে পায় না মানুষ....
স্ট্যাটাসঃ- ১২
খুব বকবক করা মানুষগুলো একটা সময়ের পর চুপ হয়ে যায়। ক্রমশ আঘাত পেতে পেতে চুপ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনোদিন খোলামেলা ভাবে সেই মানুষগুলো বকবক করতে পারে না....
ভালবেসে বারবার ঠকে যাওয়ার পর মানুষ ভালোবাসতে ভুলে যায়। আর একবার ভালোবাসার উপর বিশ্বাস উঠে গেলে তাকে কেউ যতই বুক দিয়ে আগলানোর চেষ্টা করুক, সে আর কখনোই ভালোবাসায় ফেরে না....
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর মানুষকে একা থাকতে শিখতেই হয়। আর একবার একা থাকতে শিখে গেলে সে আর কোনোদিন কারোর সাথে সংসার করতে পারে না। সে তখন ডানা লাগানো পাখির মতো উড়তে চায়, ঘুরতে চায়, তাকে বেঁধে রাখার ক্ষমতা আর কারোর থাকে না.....
বারবার বিশ্বাস করে প্রতারিত হওয়ার পর মানুষকে শক্ত হতে হয়। আর একবার সে শক্ত হয়ে গেলে তাকে আর কেউ কোনোদিন ভাঙতে পারে না, এমনকি সে নিজে কারোর কাছে ভাঙতে চাইলেও আর আগের মতো করে ভেঙে টুকরো টুকরো হয় না। কারণ ততদিনে তার চোখের জল শুকিয়ে যায়....
ভালোবাসা মানুষকে সৃষ্টিও করে, ধ্বংসও করে কিন্তু একবার ধ্বংস হওয়ার পর নিজেকে নিজে গড়ে তুললে তাকে কেউ যতই ভালোবাসুক, সে আর কাউকে কোনোদিন ভালোবাসতে পারে না ঠিক করে।
স্রেফ নিজের দায়িত্ব টুকু পালন করে, কিন্তু আর কারোর প্রতিই তার তীব্র ভালোবাসা জন্মায় না....
স্ট্যাটাসঃ- ১৩
আমি দেখেছি খুব শক্তপোক্ত সম্পর্কগুলোতে রোজ ফোন দেওয়া নেওয়ার গল্প নাই, কারণ তাঁরা জানে প্রাণের মানুষটা যেখানেই থাক, ফিরে আসবেই দিনের শেষে তাঁদের কাছে।
তাঁরা শুধু দুহাত খুলে অপেক্ষা করে প্রিয়জনের জন্য, কাছে এলেই যাতে মুঠো ভরে কুড়িয়ে নিতে পারে আপনজনের সুখ দুঃখ গুলো....
খুব দৃঢ় সম্পর্কগুলোতে দুইবেলা "খেয়েছো, ঘুমিয়েছো" জিগ্যেস করে না কেউ কাউকে! কিন্তু একজন না খেলে আর একজন ঠিক পেট ভরে খেতে পারে না, কোনরকমে থালা এঁটো করে উঠে যায় হাত ধুয়ে....
খুব শক্তপোক্ত সম্পর্কগুলোতে ছোট ছোট কথায় চারবেলা অভিমান করে কেউই মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে না, কিংবা ঝামেলাও করে না। বরং মানিয়ে নেয় তরকারিতে বেশি নুন হলেও, আবার জন্মদিনে উপহার আনতে ভুলে গেলেও হাসিমুখে মানিয়ে নেয়....
রোজ রোজ ঝগড়া করে দিনের শেষে জাপটে ধরে চুমুও খায় না একে অপরকে, কিন্তু একজন বেসামাল হয়ে পথ চললেই অন্যজন হাত টেনে ধরে, জলভর্তি সিঁড়িতে পা পিছলে পড়ার আগে ঠিকই সামলে নেয় একে অপরকে....
অফিস ফুরোলে ফোন করে "ভালোবাসি ভালোবাসি" বলে চেঁচায় না কেউই, কিন্তু মাঝেমধ্যে হাতে করে গরম জিলিপি নিয়ে আসে একসঙ্গে খাবে বলে....
দামি উপহার আনে না ঠিকই, কিন্তু বাজারের ব্যাগটা ভারী হলেই দুইজনে একটা ব্যাগের দুটো হাতল ভাগাভাগি করে ধরে নিয়ে এসে উপচে দেয় শাকসবজি রান্নাঘরের মেঝেতে....
প্রতি সপ্তাহে সিনেমা দেখতে বা রেস্টুরেন্টে খেতে যায় না ওরা, কিন্তু প্রতিবেশীর বিয়েতে সেজেগুজে বেরোনোর সময় চোখে চোখ রেখে একজন অন্যজনকে বলে "আজ তোমায় খুব ভালো লাগছে, অনেকেই তোমায় দেখে চোখ ফেরাতে পারবে না দেখো"....
প্রতিদিন হয়তো একে অপরের যত্ন নেওয়ার সময় হয় না, কিন্তু একজনের জ্বর হলে অপরজন ঠিকই রাতের বেলায় বারবার উঠে থার্মোমিটারে জ্বর মাপে, কপালে জল্পট্টি দেয়....
খুব সাদামাটা সম্পর্কগুলোতে হাঁড়িতে ভাত কম থাকলে একজন একটু কম খেয়ে অন্যজনের মুখের সামনে ভাতের থালা এগিয়ে দেয়, মাঝরাতে চাদর সরে গেলে একজন ঠিকই আর একজনের গায়ে আলতো করে চাদর জড়িয়ে দেয়....
খুব গরমে দুপুরবেলায় একজন বাড়ি ফিরলে অন্যজন হাতে করে শরবত এগিয়ে দেয়। অফিসের ফাইলটা থেকে রান্নাঘরের মশলাটা সব ঠিকঠাক করে গুছিয়ে রাখে দুজনেই....
মানুষকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে মানুষ সম্পর্কে জড়ায় না, কিন্তু দুইটা মানুষ একটা সম্পর্ককে যদি লালন করতে পারে, তবে দুইজন দুইজনকে এমনভাবে গড়ে তোলে, সেই দুটো মানুষকে ভাঙার ক্ষমতা আর কারোর থাকে না....
জীবনে এমন মানুষ পেলে, মুঠো ভরে কুড়িয়ে নিতে হয়, কখনো হারাতে দিতে নেই....
আমি শুধু আফসোস করি তাদের জন্য যারা সাহায্য নেওয়ার পর অকৃতজ্ঞ বেঈমান হয়ে যায়। যার কাছ থেকে সাহায্য পায় তাকেই লাথি মারে, যার থালায় খায়, তার থালায় থুতু ফেলে....
আর ঠিক এই কারণেই সবাইকে সাহায্য করতে নেই, কারণ সবাই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য হয় না....
স্ট্যাটাসঃ- ০৪
আমরা যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করি, তাকে পরীক্ষানিরীক্ষা না করেই ভালোবাসি। আমরা যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করি, তার জন্য নিজের সবটা খালি করে দিতে পারি একঝটকায়....
আমরা যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করি, তার কাছে বারবার অপমানিত হয়েও পড়ে থাকি, তার কাছে আমরা ঠকতে চাই বারবার....
আমরা আগের থেকেই ঠিক করে নিই যে এই মানুষটা আমাদের জন্য পারফেক্ট, আমাদের যত্ন নেওয়ার জন্য এই মানুষটাই পারফেক্ট। একজন অচেনাকে যাচাই না করেই ভেবেনি আমাদের আগলে রাখার ক্ষমতা এই মানুষটার আছে....
সে হয়তো পাত্তাও দেয় না আমাদের, তিনচারদিন বাদে একবার খোঁজ নেয়, অথচ আমরা তার জন্যই অপেক্ষা করি। ভাত খেতে খেতে তার কথা ভাবি, একটা রিংটোন, তার একটা গলার আওয়াজ শোনার জন্য রাতের পর রাত জেগে থাকি....
একবার সে "শুনছো" বলে ডাকলে কেমন যেন মাতাল মাতাল লাগে নিজেকে, সে যত দূরে ঠেলে দেয়, ততই কাছে যাওয়ার তীব্রতা বেড়ে যায়, জেদ চেপে যায় মাথায়। যতই সে আঘাত করে, ততই আরো আরো বেশি করে ভালোবেসে ফেলি তাকে, দূর থেকে তাকে ছুঁতে চাই, তার থেকে পাওয়া ব্যথা গুলোকে ভেতর ভেতর যাপন করি....
সে বারবার অপমান করে তাড়িয়ে দিলেও আমরা কোনোদিন অপমান করতে পারি না তাকে, বরং তার থেকে অপমান পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি....
আসলে ভীষণভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটা ভীষণরকম জাঁকানো যন্ত্রণার দরকার, যাকে জাপটে ধরে সারাটা জীবন "বেঁচে আছি, ভালো আছি" বলা যায়...
স্ট্যাটাসঃ- ০৫
"আক্ষেপ" ভীষণ ভারী একটা শব্দ, জীবনে অনেককিছুই হারিয়েছি, অনেক মানুষ, অনেক মুহূর্ত হারিয়েছি কিন্তু কখনো আক্ষেপ করিনি....
টাকাপয়সা বাড়িগাড়ি পাইনি বলে কখনো আক্ষেপ করিনি, প্রিয়জন ঠকিয়ে চলে গেছে বলে কখনো আক্ষেপ করিনি.....
নিজের কাছের মানুষের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়েছি, কিন্তু বুকের ভেতরে কোনো আক্ষেপ পুষে রাখিনি....
পা ভেঙে দুই মাস বিছানায় থাকাতে স্কুলের পরীক্ষা দিতে পারিনি বলে কান্নাকাটি করেছি কিন্তু কখনো আক্ষেপ করিনি, নিজের মনকে বুঝিয়েছি "যা হয়, ভালোর জন্যই হয়"......
প্রথম প্রেমে চূড়ান্ত ভাবে ঠকে যাওয়ার পরেও কোনোদিন আক্ষেপ করিনি.....
আক্ষেপ শব্দটা একটা গোটা জীবনকে কুরেকুরে শেষ করে দেয়। এক একটা দীর্ঘশ্বাস এক একটা আক্ষেপের জন্ম দেয়,আর চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে মাঝরাতে.....
আক্ষেপের একটা ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে ঠিক পেঁয়াজের মতো অনেকটা। যখনই কোনোকিছু না পাওয়ার জন্য আক্ষেপ করেছি, তখনই শুধুই কান্না ছাড়া আর কিছু জমাতে পারিনি দু হাতের মুঠোয়...
তাই নিজের জীবন নিয়ে, জীবনে না পাওয়া সুযোগ নিয়ে, হারিয়ে ফেলা মানুষজন নিয়ে আর আক্ষেপ করি না। এখন আর কোনো মানুষকে আটকে রাখি না, এখন নিজেকে বুঝিয়ে নিয়েছি কিছু মানুষ চলে যাওয়ার জন্যই আমাদের জীবনে আসে....
এখন মানুষের আসা যাওয়াটা আর কোনো ম্যাটার করে না। কেউ যদি থেকে যায় তাকে গুরুত্ব দিই, আর কেউ না থাকতে চাইলে তাকে দরজা খুলে দিই....
আর কোনো আক্ষেপ করি না কারোর জন্য, এখন অনেকটা পরিণত হয়ে গেছি। একা থাকতে শিখে গেছি, নিজেকে গোছাতে শিখে গেছি....
আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে শিখে গেছি,
"যা কিছু হয় সব ভালোর জন্যই হয়".....
স্ট্যাটাসঃ- ০৬
আমি এত উদার নই, আমি এত ভালো মানুষ নই, আমি আমার প্রিয় মানুষটাকে সবার সাথে ভাগ বাটোয়ারা করতে পারবো না কখনোই। যে আমার, সে শুধু আমারই....
আমি চাই আমার প্রিয় মানুষটা সবার সাথেই মিশুক, আড্ডা দিক, কাজের কথা বলুক, গল্প করুক, কিন্তু দিনের শেষে সেই সমস্ত গল্পগুলো আমার সাথে ভাগ করে নিক, আমার সাথে কথা না বলে যেন কোনো রাতে সে ঘুমিয়ে না পড়ে....
প্রিয় মানুষটারও ভালো লাগার মানুষ থাকতে পারে, ক্রাশ ট্রাস থাকতেই পারে কিন্তু ক্রাশের সাথে যেন কোনো সম্পর্ক না থাকে তার। তার ভীষণ ভালো লাগার মানুষদের সাথে যেন তার ডেইলি যোগাযোগ না হয়, রোজ কথা না হয়, দরকার ছাড়া যেন ওইসব ভালো লাগার মানুষদের সাথে কথা না হয়।
ওই অমুক তমুকের সাথে আমি আমার মানুষটাকে কখনোই ভাগ করে নিতে পারবো না....
আমার সম্পূর্ণ অধিকার যেন থাকে আমার প্রিয় মানুষটার উপর, আমি যখন তখন তাকে যেন কল দিতে পারি। তার মনখারাপ হলে সে যেন আমার সাথেই তার মনের সমস্ত কথা ভাগ করে নেয়, আমি যেন তার জীবনে বেস্ট ফ্রেন্ড হই.....
আমার সাথে ছাড়া আর কারোর সাথে যেন কোনোদিন সে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান না করে।
তার বন্ধুবান্ধবের সাথে, তার ফ্যামিলির সাথে যেমন আমার সুসম্পর্ক থাকবে, তেমনই আমারও বন্ধুবান্ধবের ব্যাপারে ফ্যামিলির ব্যাপারে সে সবকথা জানবে....
রাতের বেলায় যেন তার ফোনে অন্য অচেনা নম্বর থেকে ফোন না আসে, কারণ ওই রাতটুকু একান্ত আমাদের....
হ্যাঁ এতগুলো ডিমান্ড যদি পূরণ না হয়, তাহলে কোনো সম্পর্কই ভালো চলতে পারে না। সম্পর্কে প্রাইভেসি, নিজস্ব স্বাধীনতা,অভিযোগ, অভিমান ঢুকে গেলেই সম্পর্ক নষ্ট হয়....
না, আমি কখনোই তার ফোন চেক করবো না, কারণ একটা বিশ্বাস থাকবে যে সে কখনোই আমায় ছাড়া অন্য কাউকে গুরুত্ব দেবে না। আর এই বিশ্বাসটাই সম্পর্কের বন্ধন.…..
এই বিশ্বাসটা না থাকলে সম্পর্ক না রাখাই ভালো।
এই বিশ্বাসটা দুজনকেই বহন করতে হবে, কোনো তৃতীয় ব্যক্তি আমাদের ভেতরে আসতে চাইলে দুজনকেই সেই তৃতীয় ব্যক্তিকে বাইরে ছুঁড়ে ফেলতে জানতে হবে.....
দুজনের ভেতর বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস, ভালোবাসা বজায় থাকলে কেউ কোনোদিন ইচ্ছে করলেও সম্পর্ক ভাঙতে পারবে না....
আর কিছু মানুষকে কখনোই অন্যের সাথে ভাগ করতে নেই, ধীরে ধীরে সম্পর্কের ভেতর দূরত্ব বাড়তে থাকে তাহলেই....
স্ট্যাটাসঃ- ০৭
"জীবনে চাহিদা যত কম থাকবে জীবন ততই বেশি সুন্দর হবে" আমি এই তত্ত্বে বিশ্বাসী নই....
সবার জীবন এক সরলরেখায়, এক যুক্তিতে, এক নিয়মে, এক সূত্রে চলে না....
এক একজনের জীবনে চাহিদা খুব কম থাকে, সেটা অবশ্যই ভালো। কিন্তু যার জীবনে অনেক চাহিদা আছে, অনেক ইচ্ছে আছে, অনেক স্বপ্ন আছে তাকে কেনই বা কম্প্রোমাইজ করতে হবে, তাকে কেনই বা মানিয়ে নিতে হবে? তাকে কেনই বা নিজের চাওয়াপাওয়া গুলোর সাথে বোঝাপড়া করতে হবে.....
ব্যাপারটা হলো, যার জীবনে অল্প চাহিদা আছে, সেও যেমন সুন্দর, আবার যার জীবনে অনেক অনেক চাহিদা আছে সেও সুন্দর। শুধু নিজের সমস্ত চাহিদাগুলোকে পূরণ করার পথটা জানতে হবে....
নিজেকে পরিশ্রম করতে হবে, নিজের ইচ্ছেগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে, সেগুলো নিয়ে দিনরাত খোলা চোখে স্বপ্ন দেখতে হবে....
এবং সবচেয়ে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, জীবনের কাছে যাদের বিশাল চাহিদা আছে তারা যেন নিজের জীবনে নিজের মতোই একজন লাইফ পার্টনার পায়....
জীবনের কাছে অনেক অনেক চাহিদা থাকা মানুষগুলোর এমন একজন পার্টনার থাকা দরকার, যে পার্টনার সেই চাহিদাগুলোকে গুরুত্ব দেবে এবং দুজনে মিলে দিনরাত পরিশ্রম করে সেইসব চাহিদাগুলোকে, স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করবে....
আমার যদি ফ্ল্যাট কিনতে ইচ্ছে হয়, সেই ফ্ল্যাটটাকে নিজের মতো সাজাতে ইচ্ছে হয়, তাহলে যেন আমার পার্টনারও একইসাথে ফ্ল্যাট কেনার এবং ফ্ল্যাটটাকে সাজানোর স্বপ্নটা দেখে। দুজনে মিলে একসঙ্গে লড়াই করলেই জীবনে সব স্বপ্ন পূরণ হতে পারে....
একা একা লড়াই করে নিজের ইচ্ছেগুলো পূরণ করা ভীষণ শক্ত, অসম্ভব নয়, তবে শক্ত। সেই জায়াগায় দুজনে মিলে যদি একটাই স্বপ্ন দেখে, সেই স্বপ্নটাকে যদি একসঙ্গে পূরণ করার জন্য পরিশ্রম করে, তাহলে জীবন সুন্দর হয়ে ওঠে....
জীবনের কাছে প্রচুর প্রচুর চাহিদা থাকা জীবনে দুঃখ পাওয়ার কারণ হতে পারে না, যদি আমরা সেইসব চাহিদা গুলোকে পূরণ করার সঠিক পথ খুঁজে পাই....
অন্যের ঘাড়ের উপর নিজের সব দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে দিনরাত "আমার কোনো স্বপ্ন পূরণ হলো না, আমি জীবনে কিছুই পেলাম না" বলে ঘ্যানঘ্যান করলে জীবন থেকে দুঃখ কোনোদিন কমবে না....
দুজনে মিলে লড়াই করতে হবে, আর তার জন্য একজন সঠিক লাইফ পার্টনার থাকা আবশ্যিক। জীবনে প্রচুর চাহিদা থাক, শুধু সেই চাহিদাগুলোকে পূরণ করার মতো জেদ, ইচ্ছে, সাহস ও আত্মবিশ্বাসও যেন থাকে, তাহলেই কোনো রাস্তা কঠিন হয়....
স্ট্যাটাসঃ- ০৮
হাজারটা অবহেলা অপমান সহ্য করেও তুমি এতদিন যে মানুষটার পাশে ছিলে, সেই মানুষটার পাশ থেকে জাস্ট কদিনের জন্য সরে যাও....
তুমি সরে গিয়ে দেখো সে তোমায় খুঁজছে কিনা! নিজেকে তার কাছ থেকে আড়াল করে দেখো সে তোমায় গুরুত্ব দিচ্ছে কিনা!....
ভালোবাসা একতরফা হতে পারে, কিন্তু সম্পর্ক কখনোই একতরফা গড়ে ওঠে না। তাই একটা সম্পর্কে দুজনেরই দুজনের প্রতি একিরকমের ডেডিকেশন, বিশ্বাস, বন্ধুত্ব থাকা উচিত....
যে মানুষটা সারাটাদিন অপেক্ষা করে তার কাছের মানুষটার গলার আওয়াজ শোনার জন্য, থালা আগলে সারাটা রাত বসে থাকে, হাজারটা অপমান সহ্য করে, হাজারটা অভিমান জমিয়েও প্রিয় মানুষটার জন্মদিন কখনো ভুলে যায় না, বারবার অবহেলিত হয়েও প্রিয় মানুষটার জ্বর হলে ছুটে যায়, সেই মানুষটাকে ইগনোর করা পাপ....
উল্টোদিকের মানুষটা যদি নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাহলে এভাবে কোনো সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হতে পারে না। তাই সেই মুহূর্তে নিজের থেকেই কিছুদিনের জন্য দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়া উচিত উল্টোদিকের মানুষটার থেকে...
দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার পর যদি উল্টোদিকের মানুষটা তোমায় খোঁজে, নিজের ভুল বুঝতে পেরে তোমার কাছে ক্ষমা চায়, তাহলে বুঝে নিও সম্পর্ক এখনো ভালো আছে, জাস্ট কয়েক মুহূর্তের জন্য সম্পর্কটা শিথিল হয়ে গিয়েছিল.....
আর যদি তুমি দূরে সরে যাওয়ার পরও উল্টোদিকের মানুষটা তোমায় একবারও না খোঁজে, একবারও না তোমার সাথে কথা বলতে চায়, তাহলে বুঝে যেও সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গেছে, তখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো....
নষ্ট সম্পর্কে পড়ে থাকার চেয়ে একা থাকা ভালো।
আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে সস্তা বানাই প্রিয় মানুষদের কাছে, আমরাই প্রয়োজনের থেকে বেশি যত্ন নিই প্রিয় মানুষটার, নিজের ইচ্ছেগুলোকে দমিয়ে উল্টোদিকের মানুষটার ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দিই সবসময়, আর সেখানেই সবচেয়ে বড় ভুল করি....
যে মানুষ নিজেকে গুরুত্ব দেয় না, তাকে কেউ কোনোদিন গুরুত্ব দেবে না, এটাই সমাজের নিয়ম...
একটা সম্পর্কে সবকিছুই সমান সমান হয়, কেউ একজন বেশি গুরুত্ব পাবে, আর কেউ একজন কোনো গুরুত্বই পাবে না, এভাবে সম্পর্ক দীর্ঘদিন টিকে থাকে না....
একটা সম্পর্কে দুজনকেই দুজনের ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দেওয়াটা দরকার। একজনের চাহিদা পূরণ হবে, আর একজনের কোনো চাহিদা পূরণ হবে না, এভাবে সম্পর্ক সুন্দর হয় না, বরং "বোঝা" হয়ে যায় একটা সময়ের পর....
তাই আমি মনে করি, কিছু কিছু সময় নিজের থেকেই সামান্য দূরত্ব বাড়িয়ে দেখে নেওয়া উচিত উল্টোদিকের মানুষটা আদৌ আমাদের পরোয়া করছে কিনা!
সামান্য দূরত্ব বাড়িয়ে দেখে নেওয়া উচিত সম্পর্কটা আদৌ ভালো আছে কিনা!.....
স্ট্যাটাসঃ- ০৯
কারোর সাথে সেক্স করার জন্য ভালোবাসার নাটক করবেন না, কারোর অনেক অর্থ বলেই তাকে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দেবেন না। কেউ আপনার হাতে পায়ে ধরে ভালোবাসার ভিক্ষা চাইছে বলেই তাকে ভালোবাসার কথা বলে বসবেন না....
যদি ভালোবাসতে পারেন পুরোপুরি মন থেকে, তবেই ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিন। যদি একসাথে থাকার সদিচ্ছা থাকে, যদি পাশাপাশি থাকার সদিচ্ছা থাকে, যদি যে কোনো সমস্যায় একসঙ্গে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন তবেই ভালোবাসাবাসির কথা বলুন....
অন্যকিছু পাওয়ার জন্য বা কাউকে করুণা করে "ভালোবাসি" বলে নাটক করবেন না, নাটক কিন্তু বেশিদিন করা যায় না।
হ্যাঁ জানি, সেক্স, টাকাপয়সা, উপহার এগুলো জীবনে চলার পথে খুবই দরকার। কিন্তু ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য কেবলমাত্র ভালোবাসা থাকাটা দরকার.....
ভালোবাসা থাকলে দুজনে মিলে একসঙ্গে লড়াই করে নিজেদের সমস্ত ইচ্ছে পূরণ করা যাবে, ভালোবাসা থাকলে দুজনেই দুজনের কাছে নিজেকে আপনা থেকেই সমর্পণ করবে।
কিন্তু টাকাপয়সা, বা শরীর পাওয়ার জন্য ভালোবাসার অজুহাত দেবেন না। আর কাউকে করুণা করেও ভালোবাসার কথা বলবেন না....
"ভালোবাসা" শব্দটার উপর একটা মানুষের গোটাজীবন নির্ভর করে, অনেক স্বপ্ন, অনেক লড়াই নির্ভর করে....
একটা মানুষের বিশ্বাস ভেঙে দেওয়া পাপ, আপনি আজকে একজনের বিশ্বাস ভাঙলে, কালকে কিন্তু কেউ না কেউ ঠিকই আপনার বিশ্বাস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে, মনে রাখবেন প্রকৃতি ঠিকই প্রতিশোধ নেয়....
স্ট্যাটাসঃ- ১০
"সবার জীবনে একটা গোপন প্রেম থাকলে, জীবনটা খুব সুন্দর হয়। যে প্রেমের কথা দুটো মানুষ ছাড়া আর কেউ কোনোদিন জানবে না".....
আমি আগে এমনটাই ভাবতাম, কিন্তু যত বয়স বেড়েছে ততই ধারণা পাল্টেছে। গোপন শব্দটাই একটা ভয়ঙ্কর শব্দ, গোপন কোনোকিছুই বেশিদিন ভালো নয়....
গোপন প্ৰেম হোক বা গোপন মান অভিমান, রাগ, দুঃখ, ব্যথা, গোপন সম্পর্ক! কোনোকিছুই বেশিদিন ভালো নয়.....
কোনো মানুষের প্রতি যে কোনো অনুভূতিই একটা সময়ের পর স্বীকৃতি পেতে চায়, একটা মর্যাদা চায়, একটা সম্মান চায়।
যে কোনো গোপন প্রেম একটা প্রাণখোলা বারান্দা চায়, যে বারান্দায় বসে বর্ষাদিনে চায়ের কাপ হাতে রাস্তায় জমা কাদায় বাচ্চাদের হুটোপুটি করতে দেখা যায়....
যে বারান্দায় রোদ উঠলে ন্যাপথলিন মাখানো পুরোনো কাপড় গরম করে নেওয়া যায়....
যে বারান্দায় গোলাপ ফুলের টব রাখা যায়, খুব মেঘ করলে গরম গরম চপ ভেজে যে বারান্দায় বসে রবীন্দ্রগান শোনা যায়....
লুকিয়ে চুরিয়ে প্রেম করার একটা বয়স থাকে, সেই বয়সটা পেরোনোর পর গোপন প্রেমটা বড্ড তড়পায়, সাংঘাতিক কষ্ট দেয়....
একটা বয়সের পর দুটো মানুষ একে অপরের হাত ধরে মাথা উঁচু করে রাস্তায় হাঁটতে চায়, সংসার পাততে চায়, মাসকাবারির বাজারের ফর্দ করতে করতে ছিঁড়ে যাওয়া বোতাম লাগাতে চায় জামায়...
সব প্ৰেম একটা বয়সের পর বটগাছ হয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে চায়, সমস্ত ঝড়বৃষ্টি পেরিয়েও একে অপরের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে চায়....
আর যে প্রেমকে সারাজীবন আড়ালে গোপনে বাঁচিয়ে রাখতে হয়, যে প্রেম কোনোদিনই মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে না, যে প্রেমের ব্যাপারে চিৎকার করে কোনোদিনই কাউকে বলা যায় না!
সেই প্রেম সারাজীবনই শুধু ব্যথা দিয়ে যায়, সেই প্রেম সারাজীবন কষ্ট দেয়, ভেতর ভেতর মরে যায় মানুষ নিজের প্রেমটাকে গোপন রাখতে রাখতে....
আড়ালে আবডালে লুকিয়ে সম্মান বা শ্রদ্ধা করা যায় কোনো মানুষকে....
কিন্তু গোপনে আড়ালে লুকিয়ে সারাজীবন প্রেম করা যায় না, ইনফ্যাক্ট লুকিয়ে লুকিয়ে কারোর সাথেই সারাজীবন সম্পর্ক রাখাও উচিত নয়...
যে সম্পর্ক সকলের সামনে সম্মান পায় না, সেই সম্পর্কে থাকা দুটো মানুষও একটা সময়ের পর থেকে একে অপরকে অসম্মান করতে শুরু করে....
একে অপরকে অপমান করতে শুরু করে, একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করে....
গোপন প্রেম বা সম্পর্ক একসঙ্গে অনেকগুলো জীবন নষ্ট করে দেয়, দুটো পরিবারকে শেষ করে দেয়....
স্ট্যাটাসঃ- ১১
প্রায় দুবছর হতে গেল, আমরা একসাথে শুইনি, একে অপরকে ছুঁয়েও দেখিনি ঠিক করে, আজ ভীষণ ক্লান্ত....
খুব সামান্য কথাও ঘুরিয়ে বলেছি, ঝামেলা করেছি, গোটা দিন না খেয়ে বাইরে ঘুরে বেড়িয়েছি, তবু বাড়ি ফিরিনি শুধু কেউ কারোর মুখ দেখতে চাই না বলে...
একসাথে বাজার করতে যাইনি কতদিন! রেস্টুরেন্টে পাশাপাশি বসে একে অপরকে কতদিন খাইয়ে দিইনি, ছাদ থেকে দুজনে দুজনের জামাকাপড় তুলে আনিনি, নিজের কাপড়টুকু গুছিয়ে নিয়ে নেমে এসেছি নীচে....
একে অপরের জন্মদিনটাও ফেসবুকের নোটিফিকেশন দেখে মনে রাখতে হয়েছে, নইলে সেটাও মনে থাকতো না....
আমাদের জ্বর হলে কেউই কারোর কপাল ছুঁইয়ে একবারও দেখিনি জ্বরটা বাড়লো কিনা.....
আমাদের মধ্যে কথা ফুরিয়ে এসেছে, অধিকার ফুরিয়ে এসেছে, যত্ন ফুরিয়ে এসেছে, আবদার ফুরিয়ে এসেছে....
আমরা স্রেফ সম্পর্কটুকু গোছাতে পেরেছি হয়তো, কিন্তু আমরা দুজনেই দুজনের কাছে ফুরিয়ে এসেছি....
আমরা না এতটাই আলাদা হয়ে গেছি একে অন্যের থেকে, যে পাশাপাশি শুয়েও কেউ কারোর মন খারাপের কারণ জিগ্যেস করতে পারি না! কেমন যেন একটা লাগে! মনে হয়, ধুর, আবার ঝগড়া হবে, তার চেয়ে থাক যে যেমন আছে.....
আমরা এতটাই দূরে সরে গেছি যে দুজনে দুজনের গায়ের গন্ধটাও ভুলতে বসেছি, আমরা একে অপরের চোখে নিজেদেরকে আর খুঁজে পাই না.....
একটা সময়ের পর মানুষকে বুঝতে শিখতে হয়, নিজের জায়গা ছেড়ে দিতে হয়, একটা সময়ের পর মানুষ মানুষের কাছে কিছু চাওয়া পাওয়ার আশায় কিংবা শারীরিক হওয়ার আশায় যায় না। স্রেফ প্রাণ খুলে দুটো সুখ দুঃখের কথা বলতে যায়....
যাদের মধ্যে কথা বলার সুযোগটুকুও থাকে না, তাদের আলাদা হয়ে যেতে হয়, "ভালো থেকো" বলে দেওয়াল তুলে দিতে হয়.....
আসলে ভালোবাসা মানুষকে সম্পূর্ণ নতুন রূপে গড়েও তুলতে পারে, আবার ধ্বংসও করতে পারে। আমরা খুব যত্ন করে একে অন্যকে ধ্বংস করে ফেলেছি, এবার সরে যাওয়ার পালা, যাতে বাকি জীবন কিছুটা কম অভিনয় করতে হয়....
দূরত্ব বাড়লে একে অপরের চোখে আর মায়া ভরা জল দেখতে পায় না মানুষ....
স্ট্যাটাসঃ- ১২
খুব বকবক করা মানুষগুলো একটা সময়ের পর চুপ হয়ে যায়। ক্রমশ আঘাত পেতে পেতে চুপ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনোদিন খোলামেলা ভাবে সেই মানুষগুলো বকবক করতে পারে না....
ভালবেসে বারবার ঠকে যাওয়ার পর মানুষ ভালোবাসতে ভুলে যায়। আর একবার ভালোবাসার উপর বিশ্বাস উঠে গেলে তাকে কেউ যতই বুক দিয়ে আগলানোর চেষ্টা করুক, সে আর কখনোই ভালোবাসায় ফেরে না....
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর মানুষকে একা থাকতে শিখতেই হয়। আর একবার একা থাকতে শিখে গেলে সে আর কোনোদিন কারোর সাথে সংসার করতে পারে না। সে তখন ডানা লাগানো পাখির মতো উড়তে চায়, ঘুরতে চায়, তাকে বেঁধে রাখার ক্ষমতা আর কারোর থাকে না.....
বারবার বিশ্বাস করে প্রতারিত হওয়ার পর মানুষকে শক্ত হতে হয়। আর একবার সে শক্ত হয়ে গেলে তাকে আর কেউ কোনোদিন ভাঙতে পারে না, এমনকি সে নিজে কারোর কাছে ভাঙতে চাইলেও আর আগের মতো করে ভেঙে টুকরো টুকরো হয় না। কারণ ততদিনে তার চোখের জল শুকিয়ে যায়....
ভালোবাসা মানুষকে সৃষ্টিও করে, ধ্বংসও করে কিন্তু একবার ধ্বংস হওয়ার পর নিজেকে নিজে গড়ে তুললে তাকে কেউ যতই ভালোবাসুক, সে আর কাউকে কোনোদিন ভালোবাসতে পারে না ঠিক করে।
স্রেফ নিজের দায়িত্ব টুকু পালন করে, কিন্তু আর কারোর প্রতিই তার তীব্র ভালোবাসা জন্মায় না....
স্ট্যাটাসঃ- ১৩
আমি দেখেছি খুব শক্তপোক্ত সম্পর্কগুলোতে রোজ ফোন দেওয়া নেওয়ার গল্প নাই, কারণ তাঁরা জানে প্রাণের মানুষটা যেখানেই থাক, ফিরে আসবেই দিনের শেষে তাঁদের কাছে।
তাঁরা শুধু দুহাত খুলে অপেক্ষা করে প্রিয়জনের জন্য, কাছে এলেই যাতে মুঠো ভরে কুড়িয়ে নিতে পারে আপনজনের সুখ দুঃখ গুলো....
খুব দৃঢ় সম্পর্কগুলোতে দুইবেলা "খেয়েছো, ঘুমিয়েছো" জিগ্যেস করে না কেউ কাউকে! কিন্তু একজন না খেলে আর একজন ঠিক পেট ভরে খেতে পারে না, কোনরকমে থালা এঁটো করে উঠে যায় হাত ধুয়ে....
খুব শক্তপোক্ত সম্পর্কগুলোতে ছোট ছোট কথায় চারবেলা অভিমান করে কেউই মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে না, কিংবা ঝামেলাও করে না। বরং মানিয়ে নেয় তরকারিতে বেশি নুন হলেও, আবার জন্মদিনে উপহার আনতে ভুলে গেলেও হাসিমুখে মানিয়ে নেয়....
রোজ রোজ ঝগড়া করে দিনের শেষে জাপটে ধরে চুমুও খায় না একে অপরকে, কিন্তু একজন বেসামাল হয়ে পথ চললেই অন্যজন হাত টেনে ধরে, জলভর্তি সিঁড়িতে পা পিছলে পড়ার আগে ঠিকই সামলে নেয় একে অপরকে....
অফিস ফুরোলে ফোন করে "ভালোবাসি ভালোবাসি" বলে চেঁচায় না কেউই, কিন্তু মাঝেমধ্যে হাতে করে গরম জিলিপি নিয়ে আসে একসঙ্গে খাবে বলে....
দামি উপহার আনে না ঠিকই, কিন্তু বাজারের ব্যাগটা ভারী হলেই দুইজনে একটা ব্যাগের দুটো হাতল ভাগাভাগি করে ধরে নিয়ে এসে উপচে দেয় শাকসবজি রান্নাঘরের মেঝেতে....
প্রতি সপ্তাহে সিনেমা দেখতে বা রেস্টুরেন্টে খেতে যায় না ওরা, কিন্তু প্রতিবেশীর বিয়েতে সেজেগুজে বেরোনোর সময় চোখে চোখ রেখে একজন অন্যজনকে বলে "আজ তোমায় খুব ভালো লাগছে, অনেকেই তোমায় দেখে চোখ ফেরাতে পারবে না দেখো"....
প্রতিদিন হয়তো একে অপরের যত্ন নেওয়ার সময় হয় না, কিন্তু একজনের জ্বর হলে অপরজন ঠিকই রাতের বেলায় বারবার উঠে থার্মোমিটারে জ্বর মাপে, কপালে জল্পট্টি দেয়....
খুব সাদামাটা সম্পর্কগুলোতে হাঁড়িতে ভাত কম থাকলে একজন একটু কম খেয়ে অন্যজনের মুখের সামনে ভাতের থালা এগিয়ে দেয়, মাঝরাতে চাদর সরে গেলে একজন ঠিকই আর একজনের গায়ে আলতো করে চাদর জড়িয়ে দেয়....
খুব গরমে দুপুরবেলায় একজন বাড়ি ফিরলে অন্যজন হাতে করে শরবত এগিয়ে দেয়। অফিসের ফাইলটা থেকে রান্নাঘরের মশলাটা সব ঠিকঠাক করে গুছিয়ে রাখে দুজনেই....
মানুষকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে মানুষ সম্পর্কে জড়ায় না, কিন্তু দুইটা মানুষ একটা সম্পর্ককে যদি লালন করতে পারে, তবে দুইজন দুইজনকে এমনভাবে গড়ে তোলে, সেই দুটো মানুষকে ভাঙার ক্ষমতা আর কারোর থাকে না....
জীবনে এমন মানুষ পেলে, মুঠো ভরে কুড়িয়ে নিতে হয়, কখনো হারাতে দিতে নেই....
ধন্যবাদান্তেঃ------
মওদুদ আহমেদ মধু (মিঃ মধু)
দৃশ্যমান_জীবনের_অদৃশ্য_কাব্য
No comments