Ads

একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা-আরও চারটি ছোটো গল্প। @মিঃ মধু

একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা
এবং আরও চারটি ছোটো বাস্তব গল্প

একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা-আরও চারটি ছোটো গল্প। @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা


ধরো আমরা দুজন সদ্য কলেজে উঠা তরুন তরুনী !
পুরো ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখি সবসময়, তবে আমরা দুজন হবো দুই স্বভাবের।
ধরো আমাদের পরিচয়টাই শুরু ঝগড়া দিয়ে।
এক স্যারের ক্লাসে কে প্রশ্নের উত্তরটা আগে দিবে সেই বিষয়টা নিয়ে।
এরপর যত বারই আমাদের দেখা হবে আমরা দুজন দুজনকে আড়চোখে দেখবো। এভাবেই অনেকগুলো দিন কেটে যাবে।

তারপর ধরো আমরা দুজনই বিজ্ঞান বিভাগে পড়ি! 
তোমার গণিত ভীষণ প্রিয় আর আমার কবিতা ভীষণ প্রিয়!
গণিতের ক্লাসে তুমি একমনে অঙ্ক করবে আর আমি,
আনমনা হয়ে খাতায় কি যেন লিখতে থাকবো।
তুমি আমায় তখনো আড় চোখেই দেখবে,
তোমার ইচ্ছে হবে আমি কি লিখছি তা দেখার, কিন্তু পারবে না।

এরপর ধরো আমরা একই স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ি।
একদিন ভুলে আমার গনিতের খাতা তোমার ব্যাগে চলে যাবে।
এরপর যে যার মত করে বাড়িতে চলে যাবো।
বাড়িতে এসে যখন আমি খাতাটা খুঁজতে থাকবো,
তখন আর পাবো না! আমার খুব মন খারাপ হবে!
আমি ভাবতেই, ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়বো !
ধরো তখন মধ্যরাত, তোমার নিত্যদিনের পড়া শেষ করে তুমি যখন ব্যাগে হাত দিবে, তোমার হাতে পড়বে আমার খাতাটা।
নাম দেখেই বুঝে যাবে সেই খাতাটা আমার। কিছুটা অনাগ্রহে রেখে দিতে চাইবে,
তারপর কি মনে করে আবার খাতাটা হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতে থাকবে।
তুমি যতই দেখবে ততই অবাক হবে। দেখতে পাবে খাতার প্রতিটি পাতা জুড়ে,
তোমার নাম, তোমার কথা লেখা।                                                   কেনো আপনার প্রয়োজন সহযোগীতার একটি হাত

তোমার চোখের রং, তুমি কেমন করে হাঁটো? তোমার হাসি কেমন?
অভিমানে তোমায় ঠিক কেমন লাগে?
একটা সময় এসে তোমার চোখ ভিজে যাবে, য
খন খাতার শেষটায় তোমার নাম দিয়ে ছোট্ট করে লেখা থাকবে "ভালোবাসি"..।
সে রাতে তোমার ঘুম হবে না। আমার কথা ভাবতে ভাবতেই রাত কেটে যাবে।
পরদিন খাতাটায় কি যেন লিখে তারাতারি কলেজে চলে আসবে।
তোমার উৎসুক চোখজোড়া আমায় খুঁজতে থাকবে।
এরপর আমার দেখা পেয়ে ছুটে আসবে, আমার হাতে খাতাটা ধরিয়ে দিয়ে বলবে "
এই ছেলে একটু খেয়াল করে রাখতে পারো না? এতো উদাস হলে হয়!?
তারপর এক গাল হাসি দিয়ে তুমি চলে যাবে।

আমার হাত পা কাঁপতে থাকবে, আমি লজ্জায় তখন আর তোমার দিকে তাকাতে পারব না। 
তারপর খাতা খুলে যখন দেখবো আমার লেখার পাশে তোমার-
"ভালোবাসি আমিও" লেখাটা , তখন মুহূর্তেই সব ভয় চলে যাবে।
আমি হাসি হাসি মুখে তোমার দিকে বারবার তাকাতে থাকবো শুধু।

এভাবেই দুজনের হাত ধরে নতুন কোন গল্পের সূচনা হবে।
আমাদের ইচ্ছেরও ভাগাভাগি হবে।
তখন তোমার প্রিয় হবে কবিতা আর আমার গণিত।
এরপর মাঝে মাঝে আমাদের তুমুল ঝগড়া হবে।
অভিমানে কথাও হবে না দু-চার মাস।

এরপর হঠাৎ একদিন আমার মুঠোফোনে মেসেজ আসবে
"কলেজ ছুটির পর কেউ আর আমার জন্য অপেক্ষা করে না"
আর উত্তরে আমিও পাঠিয়ে দিবো """
"গণিতের খাতায় কেউ আর ভালোবাসি লিখে না"
=সমাপ্ত= 



                                ( নিচের চারটি "ছোটো গল্প"  ফেইসবুক থেকে সংগ্রহ করা )

একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা  ।   @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা


যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি ---

হারুন সাহেব তড়িঘড়ি করে বাসায় আসলেন।
উনার চেহারার মাঝে একটা অজানা ভয়ের ছাপ ভেসে উঠেছে।
উনার স্ত্রী রেহানা উনাকে দেখে বললেন,
-"তোমায় এমন দেখাচ্ছে কেন? তুমি ঠিক আছো তো?"
হারুন সাহেব উনার কপালে জমে থাকা ঘামটা মুছতে মুছতে বললেন,
-"আমায় এক গ্লাস পানি দাও তো"
রেহানা স্বামীর দিকে পানির গ্লাসটা বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
-"তোমার শরীর ঠিক আছে তো? তুমি এই শীতের মাঝে এইভাবে ঘামছো কেন?"
একদমে পুরো গ্লাসের পানি শেষ করে হারুন সাহেব উনার স্ত্রীকে বললো,
-"ছেলে আর ছেলের বউকে এইখানে একটু আসতে বলো।"
রেহানা উনার একমাত্র ছেলে সজীব আর ছেলের বউকে ডাকলেন। 

সবাই যখন এসে হারুন সাহেবের সামনে বসলেন তখন হারুন সাহেব উনার সাথে থাকা কালো ব্যাগটা দেখিয়ে সবাইকে বললেন,
-" আমি বাসায় ফেরার পথে এই ব্যাগটা পেয়েছি। কৌতূহল বশত খুলে দেখি ব্যাগভর্তি টাকা। 
এখন এই টাকা গুলো কি করবো ঠিক বুঝতে পারছি না।"
সবাই একসাথে এতোগুলো টাকা দেখে চমকে গেলো। তখন ছেলে বললো,
-" কি করবে মানে! আমরা নিজেরা এই টাকা গুলো ভোগ করবো। এতোদিনে আল্লাহ আমাদের দিকে তাকিয়েছেন। আমাদের সংসারে আর কোন অভাব থাকবে না।"
                                                                                                                               কেনো আপনার প্রয়োজন সহযোগীতার একটি হাত
ছেলের বউ আনন্দে উচ্ছ্বাসিত হয়ে হারুন সাহেবকে বললো,

-"বাবা, আপনারা কিন্তু বিয়েতে আমায় খুব একটা গহনা দেন নি। এইবার আমায় কিন্তু একটা গলার সিতা হার আর কানের নতুন ঝুমকো বানিয়ে দিতে হবে"
হারুন সাহেব টাকার ব্যাগটা বুকে জড়িয়ে ধরে বললো,
-" সবার আশাই পূরণ হবে এখন তোমরা সবাই রুমে যাও।"
হারুন সাহেব আলমারিতে টাকার ব্যাগটা রেখে কয়েকবার চেক করছিলেন আলমারির তালাটা ঠিকমতো লাগানো হয়েছে কিনা। তখন উনার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা উনার স্ত্রী বললো,
-" এই টাকাটা নিজেরা ভোগ করা কি উচিত হবে?"
হারুন সাহেব কিছুটা বিরক্তিকর চোখে উনার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন,
-" উচিত হবে কি হবে না সেটা আমি বুঝবো। তোমার সেটা ভাবতে হবে না। তুমি গিয়ে দেখো বাসার দরজাটা ঠিক মতো লাগানো হয়েছে কিনা।"

সারারাত হারুন সাহেব বিছানার এপাশ ওপাশ করলেন কিন্তু ঘুম আসছে না। বিছানা থেকে উঠে উনি যখন রুম থেকে বের হবেন তখন উনার পাশে শুয়ে থাকা উনার স্ত্রী বললো,

-"কি ব্যপার তুমি এতোরাতে কোথায় যাচ্ছো?"
হারুন সাহেব তখন বললেন,
-" দেখে আসি বাসার দরজাটা ঠিক মতো লাগানো হয়েছে কিনা।"
উনার স্ত্রী তখন বললেন,
-"তুমি ঘুমাও তো আমি দরজা ঠিকমতোই লাগিয়েছি"
পরের দিন সকালে হারুন সাহেবের ছেলের বউ হারুন সাহেবকে বললেন,
-"বাবা, আপনি চা খাবেন? একটু অপেক্ষা করেন আমি নিজ হাতে চা বানিয়ে আপনার জন্য নিয়ে আসছি"
এই কথা বলে ছেলের বউ চলে গেলো।
                                                                                                সত্যিকারের ভালবাসা কেমন হওয়া উচিত?????
ছেলের বউয়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে হারুন সাহেব বেশ অবাক হয়ে গেলেন। যে ছেলের বউ বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত উনাকে এককাপ চা করে খাওয়ায় নি সেই ছেলের বউ কিনা আজ উনাকে চা বানিয়ে খাওয়াবেন।

হারুন সাহেবের দিকে চায়ের কাপটা বাড়িয়ে দিয়ে উনার ছেলের বউ বললো,
-"বাবা, আমি চাইছিলাম আমরা নিজেরাই একটা ফ্ল্যাট কিনি। আর কত মানুষের বাসায় ভাড়া থাকবো"
হারুন সাহেব চায়ে চুমুক দিয়ে বিড়বিড় করে বললেন,
-"ঠিক আছে দেখি কি করা যায়"
বিকালের দিকে ছেলে বাসায় আসার পর হারুন সাহেবকে দেখে বললো,
-"বাবা, তোমার শরীর কেমন? ঔষধ ঠিকমতো খাচ্ছো তো?"
ছেলের কথা শুনে হারুন সাহেব আরো বেশি অবাক হয়ে গেলেন। যে ছেলে সারা বছরেও উনার খোঁজ নেন না উনি কেমন আছে সেই ছেলে কিনা এখন তার খোঁজ নিচ্ছে। 
হারুন সাহেব বললো,-"আছে শরীর ভালো"
ছেলে তখন বাবার পাশে বসে বললো,
-"বাবা আমি চাচ্ছিলাম জবটা ছেড়ে দিয়ে নিজে ব্যবসা করতে। পরের গোলামি করতে আমার ভালো লাগে না। তুমি যদি টাকাটা দিতে তাহলে ব্যবসাটা শুরু করে দিতাম"
হারুন সাহেব বিড়বিড় করে বললেন,
-"ঠিক আছে, ভেবে দেখছি বিষয়টা"
  
টাকাটা পাওয়ার পর হারুন সাহেব নিজের মাঝে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন। আগে হারুন সাহেবের সময় পার হতো বাসার বাহিরে হয় চায়ের দোকানে বসে নয়তো বিভিন্ন মানুষের সাথে আলাপচারিতা করে। আর এখন উনি সারাক্ষণ বাসায় থাকেন। এক অজানা ভয়ে সবসময়ই ভিতু থাকেন। সব সময় মনে হয় কেউ উনার টাকাগুলো এসে নিয়ে যাবে।

একদিন হারুন সাহেবের স্ত্রী উনার হাতটা ধরে বললো,
-" দেখো আমরা জীবনের বেশিভাগ সময় অতিবাহিত করে ফেলেছি। কয়েকদিন পর তুমি আমি এই দুনিয়াতে থাকবো না কিন্তু আমাদের এই পাপের টাকাগুলো দুনিয়াতে রয়ে যাবে। এই টাকাগুলো পরকালে আমাদের শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তুমি টাকাগুলো ফিরিয়ে দাও। দুনিয়ার একটু সুখ বিলাসিতার জন্য পাপের পাল্লাটা ভারী করো না।"

স্ত্রীর কথা শুনে হারুন সাহেব মুখে কিছু বললেন না। কিন্তু কথাগুলো খুব গভীরভাবে অনুভব করলেন...

পরেরদিন হারুন সাহেব খুব খুশিমনে বাসায় ঢুকলেন। ড্রয়িংরুমে বসে থাকা উনার ছেলে তখন বললো,
-"বাবা তোমায় আজ এতো খুশি খুশি লাগছে যে?"
হারুন সাহেব একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে হাসতে হাসতে বললো,
-" আজ বুকের উপর থেকে অনেক বড় একটা পাথর নেমে গেছে। তাই খুব আনন্দ লাগছে।"
ছেলে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো,
-"মানে!"
                                                                                                সত্যিকারের ভালবাসা কেমন হওয়া উচিত?????
হারুন সাহেব হেসে বললো,
-" যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। এই টাকার জন্য আমি ঠিকমতো খেতে পারতাম না, 
ঘুমাতে পারতাম না, সারাক্ষণ ভয়ে অস্থির থাকতাম কিন্তু আজ থেকে আর এমনটা হবে না।"
হারুন সাহেবের কথা শুনে উনার ছেলে রাগে চিৎকার করে বললো,
-" তুমি এটা কি করলে! টাকা গুলো ফিরত দিয়ে দিলে? তুমি জানো এই টাকা নিয়ে আমার কত স্বপ্ন ছিলো? আমাদের বাড়ি হবে গাড়ি হবে।আর তুমি সব শেষ করে দিলে।"
হারুন সাহেব ছেলের দিকে তাকিয়ে বললো,
-"অন্যের টাকার প্রতি আমরা কেন লোভ করবো? নিজের স্বপ্ন নিজের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে পূরণ কর। অন্যের টাকা দিয়ে কেন?"
ছেলে তখন আরো রেগে গিয়ে বললো,
-" এতো জ্ঞনের কথা আমায় বলবে না। সারাটা জীবন তো আমাদের অভাবে বড় করেছো। আজ ভাগ্য যখন আমাদের দিকে ফিরে তাকালো তুমি সেটা নষ্ট করলে। একটা কথা কান খুলে রাখো তুমি যেহেতু আমার আর আমার স্ত্রীর কথা ভাবো নি সেহেতু তোমাদের কথাও আমি ভাবতে পারবো না। 
তোমরা এই মুহুর্তে বাসা থেকে বের হয়ে যাও"। 

হারুন সাহেব ছেলের কথা শুনে কান্নাভেজা চোখে ছেলের বউয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,

-"বউমা এক গ্লাস পানি দিবে? বুকটা খুব ব্যথা করছে। পানিটা খেয়েই বাসা থেকে চলে যাবো"
ছেলের বউ পানি না দিয়ে রেগে সামনে থেকে চলে গেলো।
হারুন সাহেব নিজের স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বাসায় বের হয়ে আসলেন।
উনার স্ত্রী যখন কাঁদছিলেন তখন উনি মুচকি হেসে উনার স্ত্রীকে বললেন,
-"দেখলে আমার ছেলে আমার সততার কি পুরষ্কার দিলো?"

উনার স্ত্রী কান্নাভেজা চোখ গুলো মুছতে মুছতে বললেন,
-" দুনিয়ায় পুরষ্কার না পেলেও পরকালে নিশ্চয়ই পাবো"


একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা  ।   @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা
তিন বছর পর 

বিয়ের ৫ বছর পরও কোনো বেবি নেই আবির আর ইতির সংসারে, সমস্যাটা ইতির। 
ছোটবেলায় এক ছোট অপারেশন করতে গিয়ে ইতির ওভারির একটা নালি কেটে যায়। 
এরপর থেকে ইতি সন্তান নিতে অক্ষম।  অথচ কথাটি সে জানতে পারে বিয়ের তিনবছর পর ।

যখন ও আর আবির পাগলের মতো এক ডাক্তার থেকে আরেক ডাক্তারের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছে বেবির আশায়। সে রাতে ইতি উন্মাদের মতো কেঁদেছিলো। নিজের চাইতেও ওর বেশি কষ্ট হচ্ছিলো আবিরের জন্য। ওর তো কোনো দোষ নেই। কেবল ইতির জন্যই সারাজীবন বাবা ডাকটি শুনতে পাবে না সে। 
ইতির কেবল মনে হচ্ছিলো সে আবিরকে ঠকিয়েছে।অথচ আবির না থাকলে ইতি হয়তো সে রাতে মারাই যেত।  এতো ভয়ঙকর কথাটি জানবার পরও সে রাতে আবির ছিল একদম শান্ত।

ইতিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে ওর কানে কানে বলেছিলো, 'পাগল। এমন কেউ করে? 
কত জনেরই তো বাচ্চা হয় না, তারা কি বেঁচে থাকে না? আমরা দুজনই টোনাটুনির মতো রয়ে যাবো সারাজীবন। আমাদের আর কিছুর দরকার নেই।'
আবিরের এই কথাটুকুই ইতির অন্তরে সে রাতে শীতল পরশ বুলিয়ে দিয়েছিলো। 
আবিরকে দুহাতে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে তার বুকে শেষ আশ্রয় খুঁজেছিলো সে।

সেই আবিরের আজ বিয়ে। ইতি নিজেই বিয়ে দিচ্ছে আবিরের।আসলে কিছুই করার ছিলো না। 
ওরা যতোই ভালো থাকতে চাক, সমাজ ওদের ভালো থাকতে দিলো না। ওদের দিকে আঙুল তুলে তুলে বারবার দেখালো, 'দেখ দেখ, ঐ অভাগা অলুক্ষুণেদের কোনো বাচ্চা নেই।' 
কোনো অনুষ্ঠানে ওরা দুজন গেলে ওদের ঘিরে কানাকানি ফিসফাস শুরু হয়ে যেত। 
কারো নতুন বেবি হলে ওদের কাছে দেয়া হতো না, যদি বাচ্চার অমঙ্গল হয়? 
আবিরের মা 'নাতি নাতি' করে আফসোস করতেন ইতির সামনে। 

উঠতে বসতে খোঁটা দিতেন। ইতি আর নিতে পারছিলো না। আবির মুখে কিছু বলতো না, 
কিন্তু ইতি বুঝতো, ওরও একই অবস্থা।এভাবে আর চলা যায় না। 
ইতি নিজের মনের উপর ছুরি মেরেই সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিলো, বিয়ে দিতে হবে আবিরের। 
আবিরকে বোঝাতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হলো, কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজি হলো সে। 
মেয়েও ঠিক করে ফেলল ইতি, আনিরের মামাতো বোন ইতু। এর আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো ওর, 
কিন্তু বছর না ঘুরতেই স্বামী মরে বিধবা হয় মেয়েটা। এরপর থেকে বাবার ঘরে বোঝা হয়েছিলো
আবিরের সাথে বিয়ে হলে কষ্ট কমবে মেয়েটার।

ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে গেল আবির আর ইতুর। ইতি ওর আর সামিনের রুমটা ছেড়ে দিলো নবদম্পতির জন্য, নিজের হাতে ওদের বাসরঘরে রেখে এলো। তারপর পাশের গেস্টরুমটা, যেটা ও আজ থেকে নিজে থাকবার জন্য গোছগাছ করে রেখেছে, সেখানে গিয়ে দরজায় খিল দিলো। 
এতক্ষণ নিজেকে শক্ত করে ধরে রেখেছিলো সে, আর পারলো না। বিছানায় পরে আকুল হয়ে কাঁদলো। 
কে যেন তার অন্তরটা তীক্ষ্ণছুরি দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করছে, এতো যন্ত্রণা হচ্ছে তার। 
কাঁদতে কাঁদতে হাঁপাতে লাগলো ইতি, মাথা ঘুরছে,বমি বমি লাগছে ওর। 
রুমের সাথে অ্যাটাচড বাথরুম ছিলো, সেখানে দৌড়ে গিয়ে বেসিনে হড়হড় করে বমি করে দিলো সে।

হঠাৎ এক সন্দেহ উঁকি দিলো ওর মনে। ওর পিরিয়ড মিস হয়েছে গত মাসে। অ্যান্টি ডিপ্রেশনাল মেডিসিন নিচ্ছিলো ও কয়েকমাস ধরে, এটাকে সেই মেডিসিনের সাউড ইফেক্ট মনে করে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি ব্যাপারটাকে। কিন্তু যদি এটা অন্য কিছু হয়?ইতির ব্যাগে ওর বোন শিলা ওর নিজের জন্য কেনা প্রেগনেন্সি কিট রেখেছিলো আজকে, এতো ব্যস্ততায় ওটা দেয়ার কথা আর মনে ছিলো না। 
সেই কিটটাই বের করলো ইতি, টেস্ট করে দেখবে। দেখলো। খুব সুন্দর রিং ফুটে উঠলো টেস্ট কিটে। রেজাল্ট পজিটিভ।ভিজে বাথরুমের মেঝেতেই বসে পড়লো ইতি, কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। 
এ কি করে সম্ভব? কিভাবে ও কনসিভ করলো?
সেই অন্ধকার বাথরুমে একা বসে রইল ইতি, সারারাত।

   
একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা  ।   @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা
                                                                                               পড়ুন👉এই কথাগুলো আপনাকে জানতেই হবে

একটা কোল বালিস 

একদিন সাকালে ভাবি বলল মারুফ তুমি আজকে কাজে যাইবা না।
:-হুম যাব কেন?
শুনলাম চরাইল অনেক লেপ তোষক এর দোকান আছে তুমি কাজ থেকে আশার সময়, 

আমার জন‍্য একটা কোলবালিশ নিয়ে আসবা।
:-ওকে ঠিক আছে।
কে জানে তো, সেই দিনটাই আমার জন‍্য কাল হয়ে দাড়াবে। 
এটকা দোকানে পৌছে একটা সুন্দর কোলবালিশের অর্ডার দিলাম দোকানদার আমায় বিলল চিন্তার কোন কারন নেই তুমি বিকেল বেলা নিয়ে যাইবা। কাজ কর্ম শেষ করিয়া কোলবালিশের দাম মিটিইয়া দেখি পকেট আমার ফাকা এখন হেটে হেটে বাসায় পৌছতে হবে।
                                                                                                 পড়ুন👉এই কথাগুলো আপনাকে জানতেই হবে

পথ চলতে শুরু করলাম পথি মধ‍্যে কিছু মেয়ে আমাকে দেখে হাসতে লাগল।মনে হয় আমি ছারর্কাস খেলা দেখাচ্ছি। ওদের ছেড়ে একটু সামনে যেতেই কিছু bf gf বা hasbend and wife আমাকে দেখে হাসছে আর ডংকরে bf এর গায়ে পরছে।আশ্চর্য আমার কোলেতে না হয় একটা কোল বালিশ তাতে এত হাসার কি আছে।
সবাই বউকে নিয়ে ঘুরে আমি না হয় কোল বালিশ নিয়েই ঘুড়লাম। যতই পথ চলছি ততই যেন বিপদ বেরেই চলেছে।যত লোকের সাথে দেখা হচ্ছে সবাই আমাকে টিটকারি মারছে মনে হয় আমি কোন জন্মে যেন ওদের bf কিংবা বোনের জামাই ছিলাম।
কেউ কেউ হাসতে হাসতে হার্ড এডার্ক করার মতো অবস্থা। যাক বাবা বাচলাম সর্ব শেষে মেইন রাস্তা ছেড়ে গলির রাস্তায় প্রবেশ করলাম।একটা সরু গলি পথে চলতে লাগলাম।এখানে মাঝে মাঝে ছিন্তাই ডাকাতি এবং মেয়েরা ইপ্টিযিং এর শিকার হয় তবে আমার জানাছিল না যে আমাকে কোল বালিশ এর জন‍্য ইপ্টেযিং এর শিকার হতে হবে।
সবাই আজ একটু বেশিই হাসছে ছেলেরা মেয়েরা বুড়া গুলা। মনে হয় আমি পরি মনিকে সাথে নিয়ে ঘুরতাছি।
প্রবেশ করলাম মডেল টাউন এ যেহেতু খুবই উন্নত এলাকা তাই সিসি ক‍্যামেরায় রেকর্ড হতে সময় নেয়নি মনিটরে সামনে যেই ছিল সেই হাসছিল এক বাড়ি ওয়ালার মেয়ে তো হাসতে হাসতে জালানা ভেঙ্গে নিচেই পরে গেছে।আর যারাই ক‍্যামেরায় দেখছে সবিই পিক তুলে ফেইসবুক এ আপলোড করে দিচ্ছে।
                                                                                               সত্যিকারের ভালবাসা কেমন হওয়া উচিত?????
আমি যেই বাসায় থাকি সেই বাড়ি ওয়ালার নতিন ও মিছ করে নাই, এমন রোমানটিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে।
খুব শিগগিরই ফেইসবুক এ ভাইরাল হয়ে গেল আমার আর আমার gf ও কোল বালিশ এর ছবি।
বাসায় এসে ভাবির কোলে কোল বালিশ টি হস্তান্তর করে ফ্রেশ হয়ে ভাত খেয়ে বলকোনিতে এসে দাড়িয়ে আছি তখন বাসার নিচে চিল্লা চিল্লি গেনজামের মতো লাগছিল।
নিচে তাকিয়ে দেখি আনেক সাংবাদিক আর কিছু পাবলিক,কিছু পুলিষ আমাদের বাসা ঘিরে রেখেছে।তারা সকশে ঘেট ভেঙ্গে এই ভবনে প্রবেশ করবে এমন মনে হচ্ছে।তাতে আমার কি!?
টিভি টা অন করে অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে গেলাম।কে যেন সময় সংবাদ আগেই ধরে রেখে ছিল এখন চ্যানেলে লাইভ চলছিল আর সেটা আর কোথাও না আমাদের বাসায় নিচে!!
আর এক রিপোটার বকবক করেই চলেছে 

:এখন আমরা আছি আমাদের সকলের প্রিয় সুনামধন্য কোল বালিশ সেলিব্রেটির বাসার নিচে অবস্থান করছি।আর আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন ইতিমধ্যে অনেক লোক এখানে জরো হয়েছে আমরা এখন ও পুলিশ  পাহারায় থাকায় আমরা কোল বালিশ সেলিব্রেটি মারুফ এর মুখোমুখি হতে পারি নি।
তবে আমরা দেখেছি তিনি ইতিমধ্যে তার বেলকনি থেকে উকি দিয়েছেন 
তিনি কোন একটা ব্যাবস্থা অবশ‍্যই করবেন।

    
একটি কাল্পনিক প্রেমের সূচনা  ।   @মিঃ বুদ্ধিমান গাধা
                                                                                               সত্যিকারের ভালবাসা কেমন হওয়া উচিত?????

ভাইয়া
লেখাঃ- সাদিয়া ইসলাম কেয়া। 

সকালবেলা দেখলাম টুথপেস্টের বদলে সেভিং ক্রিম ব্রাশে নিয়ে দাঁত ঘষতে শুরু করলো ভাইয়া, অল্প ঘষায় এতবেশী ফেনা হওয়ায় ভাইয়া অবাক! খেয়াল করলো টুথপেষ্টের বদলে সেভিং ক্রিম দিয়ে ব্রাশ করছে। তারপর আড়চোখে আমার দিকে তাকালো, আমি জীবন বাজি রেখে হাসি কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। ভাইয়া চোখ গরম দিয়ে অন্যদিকে চলে গেল।
গত দুদিন যাবত আমি, আব্বু, আম্মু সবাই চিন্তিত ভাইয়ার মন খারাপ নিয়ে।
বিকেলে ফেসবুকে ঢুকে দেখলাম ভাইয়া তার টাইমলাইনে বিরহের স্ট্যাটাস পোস্ট করছে। আমি তো অবাক! চার লাইনের বিরহের কবিতা, তাও আবার ভাই লিখছে। ভাইয়ের এত গুণ! আবেগে আমার চোখে জল আসার জন্য প্রস্তুত, ছাদে আরও লোকজন ছিল বলে আসতে নিষেধ করে দিলাম।
সোজা নিচে নেমে এসে ভাইয়ার রুমে উপস্থিত। ভাইয়া চিৎ হয়ে শুয়ে সিলিংয়ের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি গলা খাঁকারি দিয়ে বললাম, ‘ছন্দ কি এখন সিলিংয়ে খোঁজা হচ্ছে ভাইয়া?’
ভাইয়া হকচকিয়ে উঠে বললো, ‘মানে কী?’
: হঠাৎ করে দেখলাম তুমি সাহিত্যের ভুবনে পদার্পণ করছো।
: কেয়া ফাজলামো করবি না একদম।
: ফাজলামো মানে, হঠাৎ করে বিরহের কবিতা, বিরহী ভাব, এগুলোর মানে কী? আম্মুরে বলা লাগবে।
: কেয়া মাথা গরম করবি না, যা ফোট এখান থেকে।
: আমি আইসক্রিম খাবো।
: খাবি, তোকে বারন করলো কে!
: তুমি এনে দিবা এহন।
                                                                                             পড়ুন👉এই কথাগুলো আপনাকে জানতেই হবে
ভাইয়াকে দেখলাম কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ উঠে টিশার্ট পরে বিরক্তির ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে।
আমি এগিয়ে গিয়ে হাত ধরলাম। ভাইয়া বললো, ‘ যাচ্ছি তো, আবার কী?’
: ভাইয়া আমিও তোর সাথে দোকানে যাবো।
: কেন চেহারা দেখাতে।
: হু, তোমার এমন একটা সুন্দরী বোন আছে দেখলে পোলাপানের কাছে তোমার কদর বেড়ে যাবে।
ভাইয়া আমার কান টেনে দিয়ে বললো, ‘পাকনামির সীমা থাকা উচিৎ, বাদরামী বন্ধ কর।’
ভাইয়ার হাত ধরে হাঁটছি। এই হাতটা ভরসার হাত, এই হাতটা ধরে থাকা অবস্থায় মনে এই বিশ্বাস কাজ করে যে– আমি সম্পুর্ন নিরাপদ, অশুভ শক্তির সাথে যুদ্ধ করে হারিয়ে দিয়ে আমাকে বিপদমুক্ত করার জন্য আমার ভাই আছে। ভাই মানেই তো ভরসা। ভাই মানেই শক্তি, ভাই মানেই সাহস, ভাই মানেই মা-বাবার পাশাপাশি আর একটা ভরসাস্থল।
একটা ফুচকার দোকানের সামনে দিয়ে যাবার সময় থমকে দাড়ালাম। ভাইয়া বললো, ‘ কি ব্যপার কি?’
: ভাইয়া পঞ্চাশ টাকা ধার দিবি!
: তোরে ধার দেওয়া মানেই তো চিরতরে সেই টাকার মায়া ত্যাগ করা, তারচে বল পঞ্চাশ টাকা লাগবে। কিন্তু করবি কি?
: তোমাকে ফুচকা খাওয়াবো।
: এহ! আমার টাকা দিয়ে আমাকে ফুচকা খাওয়াবে, বললেই হতো আমি কিনে দিতাম।
: তোমার টাকা আমার টাকা আমি আলাদা ভাবিনা ভাইয়া, তাইতো যখন প্রয়োজন হয় তোমার মানিব্যাগ থেকে নিজের মনে করে নিয়ে নেই। এখন আমি কিনে দিবো তুমি খাবা।
: আমি ওসব খাইনা।
: আহা! মীরার ফুচকা পছন্দ ছিল বলে ফুচকা খাওয়া শেষে খালি প্লেটেও দুইটা চাটা দিয়া তারে বুঝাইতে চাইতা মীরার ফুচকা প্রিয় বলে তুমি ফুচকার প্লেটও চেটেপুটে খাচ্ছো, কি প্রেম আহা!
ভাইয়া বাম হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে বললো, ‘কি পাব্লিক প্লেসে এসব হচ্ছে কি! বান্দর একটা।’
আমি বললাম, ‘পাব্লিক প্লেসে তোমার পার্সোনাল প্রেম কাহিনি পাব্লিসিটি হবার আগে চুপচাপ ফুচকা খাওয়ায় মন দাও ভাই, নইলে সর্বনাশ!
ফুচকার প্লেট আসতেই ভাইয়া ফুচকা খাওয়া শুরু করোলো, একটু যে রাগ করলো তা ভাইয়ার দাঁতের নিচে ফুচকা পিষে যাবার অতিরিক্ত কড়মড় শব্দ শুনে আঁচ করতে পারলাম।
হঠাৎ বললাম, ‘ ভাইয়া তোর মন খারাপ হলে কি খুব একলা লাগে?’
ভাইয়া মুখের কাছে নেওয়া ফুচকা আবার প্লেটে রেখে অবাক হয়ে বললো, ‘হঠাৎ এই প্রশ্ন! হ্যাঁ লাগে তো।’
: আমার মন খারাপ হলে কিন্তু একা লাগেনা ভাইয়া।
                                                                                                 সত্যিকারের ভালবাসা কেমন হওয়া উচিত?????
: কেন?
: কারণ আমার তোর মতো একটা লক্ষীসোনা বড়ো ভাই আছে, আমার ভরসা, আমার মন খারাপ হলে তোকে জ্বালাই, মন ভালো হয়ে যায়। খুব গর্ব হয় আমার তোর মতো একটা ভাই পেয়েছি। খুব ভাগ্যবতী ফিল করি সবসময় তোর বোন হতে পেরে। আচ্ছা তোর মন খারাপ হলে আমার কি ভালো লাগে বল!
ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, আমি ফাজলামো করে পার্সব্যাগ থেকে টিসু বের করে এগিয়ে ধরে বললাম, ‘ নে হাতের কাছে টিসু রাখ, আবেগে কিনা আবার কেঁদে ফেলিস।’
ভাইয়া চুপচাপ সেভাবেই তাকিয়ে আছে, আমি আবার বললাম, ‘ মীরাকে এত ভালোবাসার পরেও সে তোকে আঘাত দিলো, তার কথা ভেবে তুই মন মরা হয়ে আছিস। এদিকে তোর মন খারাপ দেখে আমার, আব্বুর, আম্মুর সবার যে মন খারাপ সেদিকে খেয়াল আছে? তোর আর মীরার পার্সোনাল পৃথিবীর বাইরেও যে আমাদের বলে একটা পৃথিবী আছে সেদিকে খেয়াল আছে?! তোর, আমার, আব্বু, আম্মুর পৃথিবীতে ছুটে আসা মীরা নামের ক্ষনিকের একটা উল্কার আঘাতে আমাদের সুখের পৃথিবীটা নষ্ট হয়ে যাবে? যে তোর ভালোবাসার দাম দিলনা তার কথা ভুলে যা, কারণ তোর আবেগ অনুভূতি তারকাছে মূল্যহীন। তবে সে কোন একদিন তোর ভালোবাসা ঠিকই উপলব্ধি করতে পারবে, সেদিন ফেরার আর রাস্তা থাকবে না, অনুশোচনায় ভুগবে দেখিস। এবার বল তোর মন খারাপের জন্য আমাদেরও কষ্ট দিবি, নাকি পরিস্থিতি মেনে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করবি। মীরার পেছনে ঘুরঘুর করে আমাদের সময় দিসনি, কিন্তু তোর মন ভালো রাখতে আমাদের সময় তোর জন্য বরাদ্দ। আমি আবার আমাদের সেই হাসিখুশি পৃথিবী চাই ভাইয়া।
ভাইয়া উঠে দাড়িয়ে বললো, ‘ চল বাসায় চল।’
: আমার আইসক্রিম।
: আজকে এত খুশি লাগছে যেটা বলার বাহিরে, সেই কারণে আজকে তোর আইসক্রিম খাওয়া ক্যান্সেল।
: ওম্মা! এটা আবার কেমন খুশি ভাই?
: কেয়া তুই বড়ো হয়ে গেলি কেন?
: কেন বড়ো হবোনা বলে কি কোথাও সাক্ষর করেছিলাম নাকি?
: আরে না, ছোট্ট থাকলে আজ তোকে ঘাড়ে বসিয়ে পুরো শহর ঘুরাতাম পায়ে হেটে।
: থাক, যখন ছোট ছিলাম তখন তো কান ধরে ঘুরাইতা!
: হা হা হা, চুপ করবি তুই।
পার্সব্যাগ থেকে ভাইয়ার জন্য কেনা ঘড়িটা বের করে ভাইয়ার হাতে পরিয়ে দিলাম। ভাইয়া থমকে গেল। আমি বললাম, ‘এটাও তোমার টাকা দিয়েই তোমাকে কিনে দিয়েছি ভাইয়া, আমার তো জামাই নাই টাকা পাবো কই বলো। তাই বলে কি প্রাণপাখি ভাইকে গিফট দেবোনা!
ভাইয়ার ঠোঁটে এক মায়াবী হাসি ফুটে উঠেছে, এই হাসি আমার দেখা স্রেষ্ঠ হাসি, ভাইয়ার চোখের কোণে পানি চিকচিক করে উঠলো, এটা আনন্দাশ্রু। ভাইয়া আমার কান টেনে বললো, ‘ এত পাকনামি, বিশ্বাস কর আমার মনের সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে, তোর মতো বোন সব ভাইয়ের কপালে জোটেনা, আমি সত্যি ভাগ্যবান।’
আমি বললাম, ‘ ভাইয়া তুমি জানো, মা বাবা ছাড়াও একটা শব্দ আছে, যে শব্দ ভরসা আর ভালোবাসার।
: কি সেটা?
: সেটা হলো ভাই/ ভাইয়া।
ভাইয়া আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আবার বাইরে বেরিয়ে গেল। ফিরলো এক বস্তা আইসক্রিম নিয়ে। ভাইয়ার শুকনো ঠোঁটে এখন হাসির ঝিলিক। তেমন একটা মন মরা হয়ে থাকেনা।
আমরা সময় পেলেই মোবাইল নামক যন্ত্রে বিজি হই যে যার মতো, অথচ প্রিয়জনের খোঁজ নেবার সময় হয়না! অথচ আমাদের দেয়া সময় ভালো করে দিতে পারে প্রিয়জনের মন, সবাই সবাইকে সময় দিলে মজবুত হয় সম্পর্কের বন্ধন সেটা আমরা ভুলে গিয়েছি।
অনলাইনে নয়, সময় দিন প্রিয় মানুষগুলোকে, মজবুত হোক সম্পর্কের বন্ধন।
শেষ কথাঃ চলতি ধারার বাইরে গিয়ে গল্প লেখার চেষ্টা করলাম, জানিনা কার কেমন লাগবে! তবে কিছু গল্প এমন হওয়া উচিৎ। ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
বোনদের কাছে স্পেশাল ভালোবাসা এবং ভরসা মানেই ভাই / ভাইয়া। 
ভালো থাকুক পৃথিবীর সব লক্ষীসোনা ভাইয়েরা।

সমাপ্ত।
                                                                                                 সত্যিকারের ভালবাসা কেমন হওয়া উচিত?????



ধন্যবাদান্তেঃ------
মওদুদ আহমেদ মধু 
@মিঃ বুদ্ধিমান গাধা


No comments

Powered by Blogger.