পুরোটা ঘর অন্ধকার, কোন আলোর ব্যাবস্থা নেই।
জীবন থেকে নেওয়া টুকরো ও বিচ্ছিন্ন কিছু লেখাকে,
একত্রিত করে অনুভূতির কাব্য নিয়ে,
আর্টিকেল সিরিজ প্রকাশের,
আজ পঞ্চম এপিসোড।
এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে জীবনের নানান বাঁকের,
নানান পথের দর্শণ উপলব্ধি ।
পুরোটা ঘর অন্ধকার, কোন আলোর ব্যাবস্থা নেই
বাতাস বইছে, বেশ জোড়েই সোরেই বইছে ।
হিম হিম বাতাস তবে হিম হিম হলেও কেন যেন
খুব আরাম লাগছে ।
এত রাতে এত হিম হিম বাতাস কারও ভাল লাগে ?
আমার লাগছে ।
যে ঘরটায় বসে আছি ঘরটা বেশ ছোট,
উপরে টিনের চালা । ঘরটা পুরোটাই পানির উপড়ে ভাসছে, পুকুড়ের পানি ।
কিভাবে ভাসছে কে জানে ?
পানি খুবই সচ্ছ আয়নার মত, মুখ দেখা যায়।
ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করে ।
কিন্তু কি আশ্চর্য এত কাছে থেকেও পানিটা কখনও ছোয়া হয়নি ।
ঘরটা ছোট হলেও বেশ গোছানো পরিপাটি ।
দুজন মানুষের জন্য বেশ মানিয়ে যায় ।
দুজন বলতে আমি আর নিয়তী ।
পুকুড়ের তিন দিকে ঘন জংলায় ভরা,
মাঝখানে আমাদের ছোট্ট ঘর ।
আমি যে জানালার পাশে বসেছি,
শুধু সেদিকটায় কোন জংলা নেই, খোলা ।
বাতাস সেদিক থেকেই আসছে ।
যেন ইচ্চে করেই কেউ এভাবে বানিয়ে রেখেছে ।
এও কি সম্ভব ?
ঘর পুরোটা অন্ধকার, কোন আলোর ব্যাবস্থা নেই ।
শুধু জোছনার আলোর আভায় কেমন যেন সাদা হয়ে আছে ভিতরটা ।
সম্পূর্ণ কাকতালিয় ভাবেই কিনা কে জানে,
আজ দেখি ভরা পূর্ণিমা !
আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেছে ।
মন খারাপের কারন হচ্ছে, এক সঙ্গে এত প্রিয়'রা কেন জড়ো হবে ?
মানুষ আশার অতিত কিছুর মধ্যে দিয়ে গেলে ভাবলেশহীন হয়ে যায় । আমিও তাই হলাম ।
জানালা লাগোয়া টেবিলে খাতা নিয়ে বসেছিলাম কিছু লিখা যায় কিনা ।
কিন্তু কিছুই লিখতে পারছি না, কিছুই মাথায় আসছে না । কেন আসছে না ?
অথছ আজই তো কত কাব্যিকতা ফলানোর সুযোগ গভীর রাতে পাগল করা পূর্ণিমার মায়াময় আলো, সেই আলো জংলার ভিতরের ছোট্ট পুকুড়ের পানিতে পড়ে এক রহস্যময় পরিবেশ তৈরী হয়েছে, যে পুকুড়েই ভাসছে আমাদের কুটিরখানি ।
কুটিরের ভিতরেই রয়েছে আরও বেশী মায়াময় নিয়তী ।
আমি চুপ করে আছি, কি করবো বুঝতে পারছি না । নিজেকে বোঝাই, "থাক এর চেয়ে বেশী বুঝতে যেয়ো না, গেলে ভয়ংকর কোন বিপদ হতে পারে ।
কখন যেন নিয়তী উঠে এসে আমার টেবিলে হাত দুটো একটার উপড়ে আর একটা রেখে দাড়িয়ে আছে ।
আমি কিছুই টের পাইনি ।
এতক্ষন সে খাটের উপড় পা তুলে বসেছিল। পড়েনে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি, হাত ভর্তি নীল কাচের চুড়ি এত চুড়ি কেউ হাতে কি করে পড়তে পারে কে জানে।
অবশ্য চুড়ির রং নীল দেখা যায় না । জোছনার আলোর জন্যই হয়তো রংটা ফিকে লাগছে । কিন্তু তবুও ভাল লাগছে । কেমন একটা মাদকতায় ছেয়ে গেছে ঘরটা ।
;দুই হাতে মোট কয়টা চুড়ি বলতো,
;জানিনা তো কয়টা,
;একশ দুইটা, একান্ন'টা করে ,
;এত সংখা থাকতে একান্নটা কেন ?
;জানি না কেন,
আমি অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, নিয়তী কাদঁছে । আমি তার চেয়েও অবাক হয়ে বল্লাম কাদঁছো কেন ?
;জানি না কেন,
পরিবেশ পাল্টে যাচ্ছে, দ্রুতই পাল্টে যাচ্ছে ।
আমি কিছু একটা বলার আগেই নিয়তী আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
;আমার চুড়ি পড়া হাত দুটি তুমি একবারও ধরে দেখোনি, আর একান্ন সংখা আমার পছন্দের সংখা সেটাও তুমি ভূলে গেছো ।
;সেজন্য কাদঁতে হবে ?
;অবশ্যই কাদঁবো একশবার হাজারবার কাদঁবো, তাতে তোমার কি ?
আমার মনটা অসম্ভব রকমের ভাল হয়ে গেল, পৃথিবীতে আমার চেয়ে সুখি আর কেউ কি আছে । আমার ভাল লাগাটা নিয়তীকে বুঝতে দিলাম না । সব ভাললাগা বুঝতে দিতে নেই । থাকনা একটু আড়াল ।
তাহলে কি আর এই মায়াময় কান্না পাওয়া যেত ?
আমি নিয়তীর কাছ থেকে উঠে গেলাম ।
ইচ্ছে করেই উঠে গেলাম ।
আমার মুগ্ধতায় নেমে আসা চোখের পানি নিয়তীকে দেখতে দিতে চাই না ।
শুধু নিয়তীই নয়, কাউকেই দেখাতে চাই না, এ হৃদয়ের গভীরে কতটা মায়া হাহাকার করে।
নিয়তী সেভাবেই দাড়িয়ে আছে । দুর থেকে নিয়তীকে রহস্যময় দেখাচ্ছে ।
যেন, এই নিষ্ঠুর মানুষটার হৃদয়হীন আচরনে সে অনুভূতিহীন হয়ে গেছে ।
থাক নিয়তী কিছুটা অনুভূতিহীন ।
ঘরের মধ্যের প্রচন্ড রোদের আলোয় আমার ঘুম ভাঙ্গলো । হায় হায় দশটা দশ বাজে ।
আর কত যে, এমন আশাহত হৃদয় ভাংগা দুঃস্বপ্ন দেখে অফিস লেট করবো কে জানে।
কাছে যেতেই মোহ কেটে যায় বলে—
আমি প্রতিবার তোমায় দূরে সরিয়েছি।
আমি জানি দূরে থেকে হয় না কিছুই—
কাছে যেতে হয়, ছুঁতে হয় আঙুল,
চোখে চোখ রেখে দুদণ্ড জিরোতে হয় দেহের বারান্দায়;
চিনে নিতে হয় মনের অলিগলি।
ভালোবাসা যক্ষেরধন করে রাখে যারা আমি তাদের দেখে হেসেছি কতবার,
কত কতবার প্রেমকে ছুড়ে ফেলেছি খোলা ডাস্টবিনে।
বিশ্বাসের চৌকাঠ ডিঙাইনি বলে—
তোমায় কখনওই বলা হয়নি, আমায় বিশ্বাস রাখো।
আমি কেবল মোহটুকু মারিজুয়ানা ভেবে গিলেছি প্রতিদিন।
অথচ তুমি পৃথিবীর তাবৎ মানুষের মতো ভেবে নিয়েছিলে—
ভালোবাসলেই একনায়কতন্ত্রী হতে হয়,
স্বৈরাচারী প্রাপ্তিতেই থাকে সবটুকু প্রেম;
চেয়েছিলে প্রভুভক্ত কুকুরের মতোন একজন বিশ্বস্ত প্রেমিক।
আমি জানি অবহেলা পেতে পেতে একদিন তুমি ঠিক দূরে চলে যাবে,
ভুলে যেতে চাইবে আমায়;
তবুও সাথে নিয়ে যাবে অবশিষ্ট মোহটুকু।
তারপর কোনো এক মাঝ রাতে তোমার ঘুম বালিশে আমার উষ্ণতা টের পাবে
অভিমানী প্রেমিকার মতো দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাববে— মানুষটা এমন কেন?
বিশ্বাস করো প্রিয়তম, তোমার এই ভাবনাটুকুই আমার অহংকার।
তুমি যতবার আমায় ভেবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়বে ঠিক ততবার আমার বরাদ্দকৃত শ্বাসে মিশে যাবে কিছু বিশুদ্ধ অক্সিজেন।
এমনকি তোমার নিজস্ব মানুষটার খামখেয়ালিতে যখন মেলে ধরবে শরীর
তখনও তুমি কোনো এক সঙ্গোপনে মনে করবে আমার মুখ।
প্রিয়তম আমার, তোমার ওই সঙ্গোপনটুকুই আমার সুখ।
তুমি যতদিন নিঃশ্বাস নেবে ঠিক ততদিন তোমার সংরক্ষিত অভিমানে আমিও বেঁচে থাকব।
তুমি যতদিন অতৃপ্তি পুষবে ঠিক ততদিন তোমার গোপন ব্যথায় ভালোবাসাও বেঁচে থাকবে।
তারপর একদিন তুমিও জেনে যাবে—
ভালোবাসার কাছে যেতে নেই
ভালোবাসা কাছে পেতে নেই।
আমরা যা দেখি তা যেমন সর্বদা সত্যি না
প্রদীপ পৃথিবীকে আলো ছড়ায়,
অথচ তার অন্তরতলেই রয়ে যায় জমাটবাধা অন্ধকার।
আমরা যা দেখি তা যেমন সর্বদা সত্যি না,
তেমনি যা দেখি না তাও সবসময় মিথ্যা হয়না।
বাস্তব জীবনে আমরা যে সুখ বা আনন্দটুকু উপভোগ করি তা কিন্তু কোন সুখের উৎস থেকে আসেনা। এর পেছনে থাকে কোন না কোন মহাজনের সহস্র খন্ড-অখন্ড কষ্ট, ক্লান্তি, ত্যাগ আর পরিশ্রম। কিন্তু দুদিন পরেই আমরা তাদের ভুলে যাই।
আমরা কারুকাজ খচিত অট্টালিকায় মহা সুখে বাস করি,
এসি গাড়িতে ঘুরে বেড়াই, হাই কোয়ালিটির মোবাইল, ল্যাপটপ ব্যাবহার করি।
কিন্তু আমরা ভাবিনা যে এগুলো কোন সুখী ভদ্রলোকেরা তৈরি করেনি। এই চাকচিক্যময় সুখের জিনিসগুলো তৈরির পেছনে আছে কষ্ট সহিষ্ণু মানুষগুলোর ময়লাযুক্ত শক্ত দু'টি হাতের ছাপ।
যে খাবার না খেলে আমরা বাচিনা, আমাদের পার্টি/ভোজ হয়না তাও হতভাগা কৃষকেদের ঘামের ফল।
এই খেটে খাওয়া দুখী মানুষগুলো না থাকলে পৃথিবীতে সুখের কোন অস্তিত্ব থাকতো না।
ফুল কত সুন্দর! কত সুখের অনুভূতি এনে দেয় আমাদের . অথচ নিজের জন্য কিছুই নেই। এই ফুলের আছে এক বেদনাময় জীবন কাহিনী। কাটার আঘাত সহ্য করে সে তিলে তিলে বড় বেড়ে উঠে পূজার অর্ঘ্য হয়। তার জন্ম'ই হয় যেন মানুষের পায়ে বলি হ'ওয়ার জন্য।
খেলায় জিতে গেলে আমরা তখন'ই আনন্দ পাই,
যখন অপর দলের বুকফাটা কষ্ট হয়।
এরকম কত শত ত্যাগ আছে, কষ্ট আছে যার বিনিময়ে আমরা আনন্দ পাই।
আপনাকে যে মানুষটি সুখ দিচ্ছে কখনো ভেবে দেখেছেন সে সুখের স্বর্গে আছে, নাকি নরকে থেকে সুখ তৈরি করছে?
এভাবে পৃথিবীতে কত যে হতভাগার জীবন কাহিনী আছে যারা সবার অগোচরে প্রতিনিয়ত প্রদীপের মত আলো দিয়ে যাচ্ছে , আর নিজের বুকেই ধারন করে যাচ্ছে তার ঘনকালো ছায়া।
""একবার না পারিলে দেখো শতবার""
গুনিজনের এই বাণীর মধ্যে একধরণের ফাঁকি বা সিদ্ধান্তহিনতা আছে !
শতবার চেস্টা করলেই যে সফল হওয়া যাবে,
তা নিশ্চিত করে বলা নাই ।
তেমনি শতবার কেন, কোটিবার! চেস্টা করলেও কোন সফলতাই যে আসবে না,
সেটাও নিশ্চিত করে বলা নাই ।
এক প্রকার উভয় সংকটে থাকতে হয় ।
ব্যাপারটা আসলে, কখনও কখনও সেরকমই হয় ।
কিছু কিছু বিষয়ে কেন জেন কোন সমাধানেই আসা যায় না, অথবা বলা যায় সমাধানে আসতে দেওয়া হয় না ।
বার বার নতুন করে স্বপ্ন দেখা,
আর প্রতিবারই নতুন করে হোচঁট খাওয়া,
একে অপরে পালা বদল করে জীবনের সিমানা অবধি পাড়ি দেয় ।
সব কলকব্জা, চাবি নিয়ে অদৃশ্যে নিয়তি যে মুচকি হাসে ।
আচ্ছা এমন কি করা যায়,
আম গাছ থেকে জাম ফল বের করা !!!
ধরা যাক, আম গাছের সামনে দাড়িয়ে শতবারের উপর আরও শতবার চোখ বন্ধ করে একাগ্র মনে ধ্যান-মগ্ন করা হলো । চোখ বন্ধ করার পর এক ধরনের ঘোর তৈরী হলো, চোখের ভিতরে নানা রঙের বিচিত্র সব অবয়ব খেলা করতে লাগল, তিব্র থেকে তিব্রতর ভাবে কামনা করা হতে লাগল ' এখন এই গাছ থেকে আমের বদলে একে একে নেমে আসবে কালো কালো জাম ' । সমস্ত মনোজগত একত্র করে তিব্র আকাঙ্খা নিয়ে প্রতিক্ষা করা হল প্রত্যাশিত জামের জন্য ।
আসবে কি জাম ?
মনোজগতে একধরনের আলোড়ন তুলবে, একটা ঘোর তৈরী হবে, এবং তাতে কিছু সময়ের জন্য প্রত্যাশিত ফল পাওয়ার একটা ভ্রান্ত উপলব্ধি হয় বৈকি ।
কিন্তু বেলা শেষে দেখা যায় ,
যেভাবে যা ছিল,
সেভাবেই তা আছে ।
বরই বিরক্তিকর, বরই যন্ত্রনার।
গলার কাছে সারাক্ষনই কিছু একটা আটকে থাকে,
ভিষন অসহ্যনিয়।
বুকের মধ্যে কিছু একটা দলা পাকিয়ে বুকটা আটকে থাকে।
কিছুতেই বুক ভরে বড় নিঃশ্বাস নিতে পারি না।
দম বন্ধ হয়ে আসে কখনও কখনও।
যেদিকেই তাকাই কোন সুবাতাস নেই ।
যেদিকেই ঘুরে দাড়াই কোন সুখকর কিছু দেখি না ।
কেন এমন হয় ?
কে জানে হয়ত সবই ঠিক আছে শুধু আমিই তা বুঝতে পারছি না, অথবা আমাকে দেখা দিচ্ছে না
এর নাম'ই কি কস্ট ?
কস্ট হলে কস্ট, প্রচন্ড কস্ট, নিদারুন অমানবিকার কস্ট আমাকে প্রতক্ষ করতে হয় প্রতিনিয়ত ।
মাঝে মাঝে চিৎকার করে গলার কাছ থেকে, বুকের মধ্যে থেকে সেই কস্টকে কর্পুরের মত উড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হয় ।
কিন্তু পারি না , পারা যায় না ।
নিজেকে ধিক্কার জানাই,
"তুই না পূরুষ মানুষ । তোর কিসের এত কস্ট থাকবে ? জানিসনা পুরুষের কস্ট পেতে নেই,
'পূরুষ' কস্ট দেওয়ার জন্য! "" ।।
আসলেই কি তাই ?
পূরুষ হলেই কি তার কোন কস্টের অধ্যায় থাকবে না ?
জগতের সব কস্ট নারীদের প্রাপ্য, বলে সমাজ অলিখিত অনুমূতি দিয়ে দিয়েছে !
কস্ট পেয়ে কাদো কাদো মুখে মাথা নিচু করে থাকা নারীর অলংকার । পুরুষের কস্ট বলে কিছু থাকবে না,
পূরুষ হবে লৌহমানব ।
কেন কেন ???
আচ্ছা এমন কি হতে পারে, নারীকে কস্টের উত্তারাধিকার করার ফলে আদৌ তার কস্টের কোন উপলক্ষ নেই !!
কাকতালীয় ভাবে যার কস্ট পাওয়ার অনুমূতি নেই,
সেই পূরুষের আশেপাশেই জড়ো হচ্ছে যতো
বেদনা-কস্টের মিলন মেলা !!!
আমি জানি না, আমি কিচ্ছু জানি না ।
শুধু জানি, আমি নির্মল কিছু সজীবতা চাই ।
জটিল হিসাব-নিকাস থেকে মুক্ত কোমল কিছু সময় চাই । লাভ-ক্ষতির বাইরে গিয়ে নির্মোহ কিছু মানবিকতা চাই ।
আর সেটা চাই বলেই ,
জটিল নীতির পৃথিবীতে বার বার হোচঁট খেয়েছি,
আবার বার বার স্বপ্ন দেখেছি ।
হোক যা ইচ্ছা, আমি জীবনের শেষ বেলা পর্যন্ত চেয়েই যাবো ।
পাবো কি কোন ক্ষনে নির্মোহ সেই মানবিকতা ?????????
বেদনা আমার অহংকার, বেদনা আমার গর্ব
"বেদনা বেদনা - সুখ " সমগ্র জীবনের এক পরম
সুখের অনুভূতি !
সমগ্র জীবন ভরে ছোট ছোট বেদনা,
গহীন গভীরে জমে
হৃদয়ের ভান্ডার পূর্ণ হয় । যার বেদনা যত বেশী হবে,
তার হৃদয় ততো সমৃদ্ধ হবে ।
আর যার হৃদয় যত সমৃদ্ধ, সেই উপভোগ করতে পারে
জীবনের পরম সুখানুভূতি । বেলা শেষে এটাই হবে সম্পদ !
ছোট ছোট বেদনা মিলে জীবনে অনুভূতি জাগায় ,
ছোট ছোট অনুভূতি হৃদয়কে সুখের পরশ দেয় ।
অনুভূতি ছাড়া হৃদয়ের সুখকে উপলব্ধি করা যায় না
মূল্যবান সেই অনুভূতির কারিগর " বেদনা " ।।
পরন্ত বেলায় যখন সৃত্মি রোমান্থন করবেনঃ----
''সে আমাকে যন্ত্রনা দিয়েছিল, ও আমাকে অশান্তিতে রেখেছিল,
তার জন্য আমার দূর্ভোগ হয়েছিল, আমার চোখের পানি ঝরিয়েছিল
এ-এ-সে-সে-অমুক-তমুক " ।
সেটা আপনার জন্য প্রশান্তির ।
তারা আপনার চোখের পানির 'কারন' ছিল,---
আপনি ছিলেন চোখের পানির 'ধারক' ।
এখানে আপনার কোন দ্বায় নেই ।
যার দ্বায় নেই তার উদ্দিগ্ন হওয়ারও কিছু নাই ।
আপনি নিশ্চিন্ত, মিস্টি মিস্টি সুখের অনুভূতি হৃদয় জুড়ে
দোল খাবে আপন মনে ।
দ্বায় নিয়ে কেউ কখোনও সুখি হতে পারে না ।
জগৎ জুড়ে কত জাগতিক সফল সমৃদ্ধ মানুষ আছে,
ভাবছেন নিশ্চয়ই তারা অনেক সুখি ! --- মোটেও না !
তাদের গহীনের ভান্ডার খালি, কিছুই জমাতে পারেনি সেখানে ।
হয়তো হাজার-লক্ষ দীর্ঘশ্বাসের কারন ছিল তারা ,
কত অশান্তি দূর্ভোগ যন্ত্রনা হয়তো বিরাজ করছিল তাদেরই জন্য ।
কত শত জন নিরবে নিভৃতে চোখের জল ঝড়িয়েছে তাদের কারনে ।
বেলা শেষে তাদের জন্য, " সুখ সুখ - বেদনা " নিয়েই থাকতে হয় ।
"বেদনা বেদনা - সুখে'র ছোয়া তাদের পাওয়া হয় না
আমি চিরকাল সেই "বেদনা বেদনা - সুখে'র পথেই হেটেছি ।
আমার নিয়তি অনুভূতিহীন, জাগতিক হিসেবে আমার যাত্রা গন্তব্যহীন,
কিন্তু আমার মূল যাত্রা সেই "বেদনা বেদনা - সুখের খোজে "।
বেদনা আমার অহংকার, বেদনা আমার গর্ব ,
বেলা শেষে অর্জন বলতে আমার এটুকুই ,
আর কোন অর্জন আমি চাই না ।
লেখায় ও ধন্যবাদান্তেঃ---
মওদুদ আহমেদ মধু
No comments