Ads

যে কথা যায়না বলা, শুধু বোঝা যায়।

আমার ব্যাক্তিগত দৃশ্যমান জীবনের 

অদৃশ্য কিছু কাব্য


যে কথা যায়না বলা, শুধু বোঝা যায়।  আমার দৃশ্যমান জীবনের অদৃশ্য কাব্য।   #_মিঃ_বুদ্ধিমান_গাধা®️

জীবন থেকে নেওয়া টুকরো ও বিচ্ছিন্ন কিছু লেখাকে,

একত্রিত করে অনুভূতির কাব্য নিয়ে, 

আর্টিকেল সিরিজ প্রকাশের,

আজ চতুর্থ এপিসোড। 

এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে জীবনের নানান বাকের,

নানান পথের দর্শণ উপলব্ধি ও মোটিভেশান। 


আহা, সে বড় অদ্ভূত সময়

জীবন আছে বলেই, জীবনে নানান উপস্বর্গ আছে ।  সেখানে- মায়া আছে, রাগ আছে, অনুরাগ আছে, 

আছে ব্যাথা বেদনা ভালবাসা, হাসি কান্না তামাশা ।  

এর সাথে আছে কঠিন নিষ্ঠুরতাও   

এসব নিয়েই জীবন ।  


সেই জীবনের প্রয়োজনেই সময়ের সাথে তাল রেখে  বা সময়ের প্রয়োজনে আমাদের অনেক চরিত্রে রুপদান করতে হয় ।  আমারা সবাই প্রতিনিয়ত নানা রকম চরিত্র অভিনয় করছি জীবনের মঞ্চে ।  কখনও চেতনে, কখনওবা অবচেতনে ।  আমিও করছি ।  

আমাদের জীবনের সব কিছুই এই জগতের জন্য, বাস্তবতার প্রয়োজনে ।  

প্রতিটা দিন কত রকমের অধ্যায়ের সাথে মিট করে সময় পার করতে হয় । নিজেকে কত রকম ঘটনার সাথে ভাগ করতে হয় তার হিসেব করা বেশ কঠিন ।

শূধু, হৃদয়ের খুব গভীর গহীনের কোন এক ছোট্ট কোনে জমে থাকে একান্ত কিছু নিজস্বতা ।  যা শুধুই আমার । 

সেটার ভাগ কাউকে দিতে হয় না ।  


কোন কোন ভরা পূর্ণিমার রাতে হঠাত ঘুম ভেঙ্গে, টুপ করে দরজাটা খুলে খোলা বারান্দায় গিয়ে দাড়াই ।  

ধবধবে জোছনার সাদা আলো গায়ে মেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি অপলক ।  সঞ্চিত অনেক ব্যাথা ভিতর থেকে উঠে চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে ।  

সে এক অন্য রকম সুখ !  

এই সুখ যে আমার বড় প্রিয় সুখ । 

এর জন্য কাউকে কৈফীয়ত দিতে হয় না ।  

আহা, সে বড় অদ্ভূত সময় ।



নিয়তি মুচকি হাসে ......


প্রত্যেক মানুষের অভ্যন্তরে আলাদা ভাবে বাস করে ছোট্ট একটা জগত।

নানান বিচিত্র অনুভূতিতে পূর্ণ সে জগৎ ।

অদ্ভূৎ সব ভাবনা ভীর করে এখানে ।

কেউ বৃস্টির থেকে পাওয়া বেদনার কাব্য এখানে জমা করে রাখে ।

ফিনকি ফোটা জোছনার মায়াময় সাদা আলো জমিয়ে রাখে কেউ ।

কেউ জমিয়ে রাখে ছোট্ট ছোট্ট একান্ত ঘটনা ।

ভরা পূর্ণিমায় ব্যালকনিতে দাড়িয়ে চাঁদ দেখা,

ঘোর বর্ষায় ছোট্ট জানালা খুলে হাত বাড়িয়ে 

বৃস্টি ছুয়ে দেওয়া,

অন্ধকারে চুপটি করে বাড়ান্দায় বসে থাকা,

বেলা শেষের বিস্তৃত দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকা,

নির্জন কোন নদীর পাড়ে শেষ বিকেলে হেটে বেড়ানো,

গভীর বনে আনমনে এলোমেলো পথ চলা----

সম ভাবনার বিপরীত লিঙ্গের কাউকে 

স্বযত্নে সেখানের সাথি করার,

তিব্রো বাসনায় পার করে বসন্তের পর বসন্ত ।


নিয়তি মুচকি হাসে ......


মিষ্টি মিষ্টি নীলাভ অনুভূতিপ্রোবন 

কোন কপোতির জন্য অপেক্ষা করে,

অনুভূতিহীন নির্জিব বিস্মিত কোন একজন ম্যারমেড়ে কাঠখোট্টা কপোত ।

    -- বিপরীতে --

অনুভূতিহীন কোন কাঠখুট্টির জন্য 

অবলিলায়জুটে যাবে,

নীল নীল স্বপ্ন বুনতে পারদর্শি 

অনুভূতিপ্রবন কোন পুরুষ ।

প্রকৃতি এভাবেই সমন্বয় করে ।

ভাবুকের সঙ্গে ভাবুকি, স্বপ্ন বিলাসির সঙ্গে স্বপ্ন বিলাসিনী

কখোনও জোড়া হয় না । 

প্রকৃতিই এটা চায় না ।

তাহলে পৃথিবীর অর্ধেক যুগোল 

ভাবনার বাতাসে হারীয়ে যেতো !



কেন আমার প্রিয়'দের ষ্পর্শ করতে পারিনা ?


এলোমেলো,

কারও কারও জীবন আগা-গোড়া'ই এলোমেলো ।

সব কিছুই সাজানো-গোছানো,  কোন ঝঞ্জাট নেই , 

কোন ধুলিকনা নেই ,

কিন্তু তার মধ্যেই কোথায় যেন এলোমেলো ।  

কি এলোমেলো ?

নির্দ্দিস্ট কোন উত্তর যানা নাই ।

স্বাভাবিক ভাবেই মনে হবে,  

এ হলো মাথা খারাপের লক্ষণ ।

আসলেই কি তাই ? 

প্রায়ই ভাবি,  আচ্ছা-সত্যি আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল নাতো। কে জানে,  হলেও হতে পারে ।

নিজের কাছেই,  নিজের আচরণ কখনও কখনও অদ্ভুত লাগে। কেন লাগে কে জানে ? 

বাইরে থেকে যে কেউ দেখে বলবে,,

বাহ চমৎকার তো ছেলেটা, অসাধারণ স্বাভাবিক ।

আসলেই কি তাই ?  

না ।  আমার সব কিছু এলোমেলো ,  

সবকিছু আগোছালো ,

সব তছনছ হয়ে যাচ্ছে, কিছুই ধরতে পারছি না ।  

নিজের মতো করে কিছুই সাজাতে পারছি না ।

ভিতরে সারাক্ষন বয়ে চলছে বিপরীত স্রোত ।  

ধাবিত হচ্ছি উজানের দিকে ।  

অন্ধকার গ্রাস করছে চারদিক থেকে ।

মনের মধ্যে সারাক্ষন তোলপার চলছে অজানা আকুতির।

ধরতে পারার মতো,  অথচ থেকে যায় অধরা ।

যাদের হৃদয়ে অন্ধকার থাকে তারা আলো নিয়ে খেলতে পারে না ।

অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে,  আলো নিয়ে তারা'ই  খেলা করে  যাদের হৃদয়ে থাকে গভীর অন্ধকার ।


কেন আমার প্রিয়'দের ষ্পর্শ করতে পারিনা ?  

হাতার কাছে থেকেও নাগাল পাই না ।

মাঝে মাঝে সব ছেড়েছুরে দুরে কোথাও চলে যেতে ইচ্ছে করে ।

কিন্তু যেতেও পারিনা,  অপেক্ষা করতে হয় ।   

কিসের অপেক্ষা ?    



প্রিয়দের থেকে আমি অনেক দূরে থাকতে চাই


কাছেই থাকি কাছেই আছে,  

আসলে তা অনেক দুরে ।

কাছে থেকেও দুরে থাকা ভীষন যন্ত্রনার ।  

ছুয়ে দেখার মত  কিন্তু ছোয়া যায় না । 

কোন কিছুই হয়ত ঠিক নেই,  কিন্তু সারাক্ষন অভিনয় করে দেখাতে হয়  সবই ঠিক আছে ।


দূরে থেকেই, প্রিয়দের কাছে থাকা বোধহয় ভাল ।   

জীবনের অধিকাংশ সমস্যা তাহলে আপনা-আপনিই মিটে যায়।

যখন ঘর বন্ধ করে একা একা কিছুক্ষন কাদঁতে ইচ্ছে হয়,  

তখন মিথ্যে করে কাউকে কারন বলতে হয় না ।

যদি খুব ভোরে স্বচ্ছ দীঘির জল ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়,  তখন বাজে কোন অজুহাত খুজতে হয় না ।

আকাশ ভেঙ্গে ঝমঝমিয়ে বৃস্টি নামলে ,  

ঘর অন্ধকার করে আয়েশ করে বৃস্টির সাথে মিতালী করা যায় । 


প্রিয়দের থেকে আমি অনেক দূরে থাকতে চাই ।  

দূরে থেকেই দেখা যাবে কিন্তু ধরা যাবে না,  

হয়ত ধরা যাবে ছোয়া যাবে না ।

পৃথিবীর কেউ জানবে না ,

হিয়ার মাঝে কি বাঁশী বাজে ? 



দুর্বিষহ মন যখন যাতনায় এলোমেলো হয়


দুনিয়াতে দূরের বলে যা কিছু আছে,  তা আসলে দূরে নয় ।

দূরের অনেক কিছুই কাছের হয় ।

কাছে যা থাকে ,  তা আসলে কাছের নয় ।

কাছের সব কিছু কি  দূরে সরে যায় ? 


প্রায়ই দেখি হাতের কাছে যা থাকে ,  

হাত বাড়ালে তা পাওয়া যায় না । 

অথচ,  হাতের কাছে যা থাকে না,  

হাত বাড়ালেই তা হৃদয়ে এসে ধরা দেয় ।

দূরের অনেক কিছুই আমার ভীষণ প্রিয় ।   

'দূর' কে আমি কাছে রাখি ।

নির্জন রাতে দূর আকাশে রূপার থালার মত  ধবধবে চাঁদ'টাকে কত আপন মনে হয় ।

কত কাছের মনে হয় ।  কত বেদনার কথা বলা যায় চাঁদ'কে ।  বিষাদের কথা শুনে 

চাঁদ কভু হাসে না,  পরম মমতায় কাছে টেনে নেয়।

কাছের কাউকে বললে কি সে মমতা পাওয়া যায় ? 


দুর্বিষহ মন যখন যাতনায় এলোমেলো হয় ,  

দূরের মেঘমালা দেখলে কতনা প্রশান্তি ভাব হয় ।

বাদলের বর্ষণে সব যাতনা ধুয়েমুছে নিয়ে যায়  ।  

বৃস্টির নবধারা জ্বলে ভালবাসা থাকে মিশে ।

কোথা গেলে কার কাছে ,  তাপিত এ হিয়া জুড়াবে ? 


প্রতি রাতে একবার আকাশের দিকে তাকাই ।

প্রতি বর্ষার প্রথম কদম ফুলের জন্য অপেক্ষা করি ।

প্রতি জোছনার প্রথম আলোতে স্নান করার প্রতিক্ষায় থাকি ।

বল দেখি কোথা যাই,  কার কাছে বা এসব পাই ???




নিজেকে আড়াল রাখি, কোন বাধঁনে জড়ানোর ভয়ে


গভীর গহীনে কিছু একটা হয়েছিলো, 

কি হয়েছিলো বুঝতে পারিনি ।

চারদিক মনে হল  শুন্য হয়ে গেছে ।  

একেবারে নিস্তব্দ নিঝুম ।   

যেন কোথাও কেউ নেই ।  


কোথায় যেন সুর কেঁটে গেছে ।  অথচ কি আশ্চর্য,   চারিদিকে কত সুর,  কত ঝংকার, 

অসিম আনন্দের দামাল নৃত্য ।

শুধু আমার ভূবন খা খা করেছিল ।  

কেন করেছিল কে জানে ।


মাঝে মাঝে এমন হয় ।  হাজার কল-কাকলী'র মাঝেও কিছুই খুজে পাইনা ।

যখন বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছাসে যখন চারপাশ মুখরীত,  

আমার মাঝে তখন নীরবতা বিরাজ করে আবারিত।

আবার নিস্তব্দ নীথরে যখন সবকিছু নিঝুম, 

কেবলই ধু ধু প্রান্তর,  ঝিঁ ঝিঁ  পোকাড় ডাক ।

তখন তার মধ্যেই খুজে পাই,  সিমাহীন ছন্দ , 

কবিতা,  সুরেলা কত গান ।


এমনই আমি ,  কেন যেন একাকার হতে পারি না ।  নিজেকে ভাসিয়ে দিতে পারি না স্রোতের সাথে ।

কোথাও যেন কিছু আটকে থাকে  ।   

কেন আটকে থাকে ?


মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে ডুব দিতে , 

কাউকে কিছু না বলে  জনারণ্য থেকে লোকান্তরে । 

পৃথিবীর কেউ জানবে না, হিয়া আমার কেমন করে ।


নিজেকে আড়াল করে রাখি, 

কোন বাধঁনে জড়ানোর ভয়ে ।

কোন শৃংখলে থাকতে চাই না আমি।

যখন যেখানে খুশি হারিয়ে যাওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে  ।



সে এক ভয়ংকর সৌন্দর্যের হাতছানি 


শ্রাবন যতই ঘনিয়ে আসছে,  

হৃদয়ের উথাল-পাতাল ততই বাড়ছে ।

কিছুতেই মনকে বশে রাখতে পারছিনা ।  

মন শুধু উড়ে বেড়াতে চায়, এপাড়ে ওপাড়ে তেপান্তরে ।


আকাশজুড়ে যখন মেঘের আনাগোনা শুরু হয় ,  

মায়াবী বাতাস যখন ঝাপটে বেড়ায় গাছের পাতায়, 

মাল্লাদের নৌকার পালে,  তখন হৃদয়ের মধ্যে কি যেন উঠে দুলে ।

শেষ বিকেলে বিস্তৃত দিগন্ত জুড়ে সবুজ গালিচার সমারোহে, আধো আলো - আধো আধাঁরে সর্বনাশা এক 

মায়াময় পরিবেশ উঠে জেগে ।


হৃদয়টা তখন বিষাদে দুমড়ে মুচড়ে উঠে, তীব্র এক হাহাকারে আচ্ছন্ন হয় এ মন ।

কেউ যেন ছুয়ে যায় ,  কি যেন কয়ে যায় ,  

কি যেন আছে  কি যেন নেই , এই দেখি এই নাই ।

কোথাও যে কেউ নাই ।


এই হাহাকার,  এই বিষাদের কোন অন্ত নেই , নিরন্তর ।  এই বিষাদের জন্ম কোথায়  তা জানিনা ।

এই বিষাদের তেমন কোন কারনও জানিনা ।  এতেও আছে এক অন্য রকম সুখ ।  এ সুখ আমার প্রিয় ।


না,  জানিনা ।  জানতে চাইও না ।  শুধু জানি এটুকুই আমার সম্পদ,  এই আমার অহংকার ।

আমার কাছে জীবনের সংঘা, অন্যরকম ।  সেই   অন্যরকম   জীবনে আছে,  আনন্দ-ভালোবাসা, সুভ্রতা ,

বাধাহীন উড়ে চলা,   সেখানে কোন অন্ধকারকে জায়গা দিতে চাই না ।  

জীবনের মতো সুন্দর আর কিছু কি আছে ????



সে এক ভয়ংকর সৌন্দর্যের হাতছানি 


এখনো,  আষাঢ় আসেনি 

আসি আসি করছে ,  

মনের অন্দরে রিনিঝিনি রিনিঝিনি বাজছে 

না জানা কোন এক সুখস্বপ্নের প্রতিক্ষা করছে 

আষাঢ়, বাদল, বর্ষা এই শব্দগুলোর মধ্যেই ,  

মনে হয় করুণ কিছু একটা মিশে আছে ।


আমার সমস্ত অনুভূতিকে নাড়িয়ে যায় ,  

এই বাদল ঝড়া দিনের সময়গুলি। 

পুরো বর্ষাজুড়েই অন্য এক সুখের আবেশে জড়িয়ে থাকে মন ।


বৃস্টির প্রায় বিকেলগুলোই কাটে  নির্জন একটি ঘরে  একা লোকান্তরে 

বরণ করে নিতে  অপেক্ষা করি আচঁল দিয়ে হাত বাড়ায়ে 

ঘন মেঘে চারদিক আচ্ছন্ন ,  বিদায় বিকেলের আলো আধাঁরি খেলা 

দুরন্ত বাতাসের ঝাপটায়  অজানা কিছু শব্দ 

ভেসে আসে কানে। 

শুরু হয় আকাশ ভেঙ্গে আবিরাম বর্ষন । প্রকৃতির সবাই একাত্ত হয়ে তাল মিলায় 

বেদনা ঝড়ানোর গানে ।  সে এক ভয়ংকর সৌন্দর্যের হাতছানি 

মাঝে মাঝে ঝাপটা দিয়ে আমার চোখমুখ ছুয়ে যায় বৃস্টি 


হয়তো কিছু বলেও যায়,  আমি শুনি কিন্তু বুঝি না   

বিস্ময়কর সৌন্দর্য দেখিয়ে যায়, আমি অপলক তাকিয়ে দেখি  কিন্তু ভেদ করতে পারি না

মোহময় এই ইন্দ্রজাল ছেদ করবো আমি কেমন করে ?


আমি জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে ছুয়ে দেই বৃস্টিকে,  

সমস্ত শরীর বেয়ে নেমে আসে শীতল শান্তি ।

আমিও বলে দেই,  পেয়েছি পেয়েছি  তারে আমি দেখেছি ,  আজানা যা এতকাল চেয়েছি ।


এটা চেনা জানা কোন পৃথিবী নয়


তখন ঘোর বর্ষা,,, 

বৃস্টি পড়ছে অবিশ্রান্ত ,  বর্ষার পানিতে ময়ূরাক্ষী নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে ।  তীব্র স্রোত  ।

বড় বড় গাছের গুড়ি ভেসে আসছে ,  যেন মূর্তিমতী এক রাক্ষুসী ।

অনেক দুরে বনের ভিতর থেকে কেউ একজন বেড়িয়ে এলো । 

 আমার বয়সী, বিচিত্র স্বভাবের ,  শান্ত মুখশ্রী ।

আমাকে ডাকতে লাগল,  আমি বের হয়ে এলাম ।  

যেন দীর্ঘ দিনের চেনা ।  বলল, বনে যাবে বেড়াতে ? 

সে আমাকে নিয়ে বনে ঢুকে গেল । ক্রমেই ভেতরের দিকে যাচ্ছে ।  আমি একসময় শংকিত হয়ে বললাম ,

ফেরার পথ মনে আছে তো ?  

সে আমার দিকে তাকিয়ে এমন ভাবে হাসল যে এরকম অদ্ভূত কথা কখনো শুনেনি ।

তার পরই হঠাৎ উধাও হয়ে গেল । আর কোন খোঁজ নেই ।

দিন কয়েক পরে আবার ডাকতে এল-  আমি খুব ভাল করে জানি, 

এ আমাকে গভীর জঙ্গলে একা ফেলে চলে যাবে ।

আমার কোন রাগ হল না । বরং মনে হল এর পাশাপাশি থাকার বিনিময়ে আমার সমস্ত পৃথিবী দিয়ে দিতে পারি ।

এই মোহকে কি বলে ?  আমি জানি না ।  

শুধু জানি,  যদি একদিন সে না ডাকত তবে হাউমাউ করে বুক ভেঙ্গে কান্না আসত ।

আমি ময়ূরাক্ষী নদীর তীর ঘেঁসে দৌড়াচ্ছি,  

আমাকে যেতে হবে অনেক দূরে ।  কোথায় সে ? 


আজ থেকে অনেক কাল আগে গভীর রাতে যে সুখস্বপ্ন দেখে জেঁগে উঠেছিলাম ।  

অজানা এক বেদনায়  আচ্ছন্ন হত সমস্ত হৃদয় । 

সেই ইন্দ্রজালের রহস্য হারিয়ে ফেলেছি ।  

কিন্তু, সত্যিই কি হারিয়ে ফেলেছি ? 

হৃদয়ের নরম ঘরে যাদের স্থান দেওয়া হয় ,  

তারা কখনো হারায় ? 


মনে তীব্র ব্যাথা কমানোর উপায় হচ্ছে কিছু লেখা ।  

যে লেখা সমস্ত বিষাদকে ছড়িয়ে যায় আকাশে ।

নির্জন দুপুরে লিখতে বসে,  মনের বেদনাকে যেমন ছড়িয়ে দেওয়া যায় ।  তেমনি নতুন কিছু বেদনা এসে বাসা বাধে ।

নির্জন দুপুরে বাড়ির পেছনের গাছে ক্লান্ত ভঙ্গিতে কাক ডাকে ।  এছাড়া চারিদিকে কোন শব্দ নেই ।

অদ্ভূত নৈঃশব্দের জগৎ ।  

এটা চেনা জানা কোন পৃথিবী নয় ।  অন্য কোন ভূবন ।



আমি মনের সুখে একবার কাঁদতে চাই


ভরা বর্ষায়,  তোমরা কি নির্জন রাত দেখেছ ? 

এরকম নির্জন রাতে থেকে থেকে ব্যাঙের ডাক,  

অবিরাম ঝিঁ ঝিঁ ডাক বুকে কাপঁন ধরিয়ে দেয় ।

অজানা আকুতিতে হৃদয় ব্যাকুল হয়ে উঠে ।  

কোন এক  গহীন গভীর থেকে ভেষে আসে  ঐশ্ব্যরীক আহ্বান ।


অনেক দিন যাবৎ হৃদয় খাঁ খাঁ করছিল ,  

এই ভরা বর্ষার প্রতিক্ষায় । 

আমার জন্য এ বড় সুখের সময় । 

গভীর রাত শুনসান নীরাবতা চারিদিকে,  

শুধু একা আমি জেগে ।

না, আমি একা না ।  সাথে আছে হাজারো ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক, কয়েকটি ব্যাঙের ব্যাকুল করা আর্তনাৎ ।

খোলা জানালা দিয়ে হিমেল হাওয়া এসে ঘর ভরিয়ে দিচ্ছে। 

জানালার পাশে এসে বসলাম ।

আশ্চর্য,  ঘুটঘুটে অন্ধকার অথচ আমার মনে হচ্ছে সব পরস্কার দেখতে পাচ্ছি ।

ওই তো,  ব্যাঙটা লাফ দিয়ে ঝুপ করে পানিতে ডুব দিল।  কি যেনো একটা নরেচড়ে চলে যাচ্ছে ।


আচ্ছা ব্যাঙের ডাকে কি মিশে আছে ?  

শুনলে হৃদয় হু হু করে কেন ? 

কেন ওদের ডাক আর্তনাতের মত শোনায় ?  

গভীর মনযোগ দিয়ে আমি তাদের ডাক শুনি ,  

ধরতে চেস্টা করি আর্তনাতের কারন ।

কিছুই ধরতে পারি না ।  তবে বড় আপন মনে হয় ।  

খুব কাছের মনের হয় ।

পৃথিবীতে থাকতে পারার মত আনন্দ আর কিছুতেই নেই ।

আনন্দময় কত কিছু ছড়িয়ে আছে আমাদের চারপাশে, চোখ মেলে আমরা তা দেখতে পারি না ।


বলা যায় আজপ্রায় সারাদিনই আকাশে মেঘ ছিল ,  

বৃস্টি খুব একটা  হয়নি ।  এখন নিশ্চয়ই হবে ।

কিছুক্ষন পর পর আকাশে বিদ্যুৎ এর চমকানি ।  

আমি অধির আগ্রহে বসে আছি ।  কিসের অপেক্ষা ?

বৃস্টি সব সময়ই আমার আশা পূরণ করেছে ।  

আজ তার ব্যাতিক্রম হল না ।

সমস্ত নিঃস্তব্দতাকে ভেঙ্গে শুরু হয়েছে তুমুল বৃস্টি ।  

যেন আজ সমস্ত জীর্নতাকে ভাষিয়ে নিয়ে যাবে ।


সমস্ত অন্তর্রাত্তা দুমড়ে মুচড়ে উঠছে ,  বুকের পাজর ভেঙ্গে কি  যেন বেরিয়ে আসতে চাইছে ।

চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছে,  আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই ।  আমার কোন বেদনা নেই ।

আমি আজ শুধু,  বৃস্টির ঝম ঝম শব্দের সাথে তাল মিলিয়ে মন খুলে সুখের কাঁদা কাঁদতে চাই ।

হে মমতাময়ী বৃস্টি তুমি আর একবার আসিয়া, 

যাও মোরে কান্দাইয়া ।

আমি মনের সুখে একবার কাঁদতে চাই ।  এই সুন্দর পৃথিবীর কাছে আমার আর কিছু চাইবার নেই ।


এমন একটা,  মূষলধারে বৃস্টিময় নির্জন রাতের চেয়ে আনন্দময় 

আর কিছু কি আছে ? 



এমন একটা পৃথিবী কি হতে পারে না?


একটা গাঁধা টাইপের আমি ,  অতি স্পর্শকাতর । 

যে কোন কিছুই অতি দ্রুত আমাকে ছুয়ে যায়  ।

কেউ স্নেহ-মমতার হাত বাড়ালে আবেগাপ্লুত হয়ে যাই  ।

তেমনি, অতি তুচ্ছ কোন কটুক্তিতেও বিচলিত হই,  হৃদয়কে আহত করে 

যা খুবই বাজে স্বভাব । 


যদিও জানি  এমন  স্বভাব,  জীবনকে ব্যাহত করে ।  তবুও এর থেকে বের হতে পারিনা ।

কেন পারি না কে জানে ।


মাঝে মাঝে নিজেকে ধিক্কার দেই , কেন এমন কর তুমি ?  কোন উত্তর পাই না ।

কি হবে উত্তর জেনে ?  এমন কিছু লাভ হয়ত হবে না। আমার হাতে তো কিছুই নেই ।

সব তো " ডি এন এ "  দ্বারাই চালিত হচ্ছে  ।  

হাল ছেড়ে দিয়ে এখন অপেক্ষা করি ,  যা হবার হবে । 

এর জন্য হেনস্তা হতে হলে হব ।  হোক না কিছু নিয়মের ব্যাত্তয় ।  পৃথিবীতে কিছু নিয়ম,  ভাঙ্গার জন্যই তৈরী হয় ।

আলো-আঁধার নিয়েই তো জীবন ।  আলোর অপর পিঠে অন্ধকার থাকবেই ,  এটাই স্বিকৃত সত্য  ।

কিন্তু আমার মেনে নিতে কস্ট হয় । কেন কস্ট হয় কে জানে ।

এমন একটা পৃথিবী কি হতে পারে না? যেখানে,  শুধু আলোর বর্ণচ্ছটা থাকবে। সরল সুন্দর শুভ্রতা থাকবে ।

কোন ,  গ্লানি হতাশা  হীনমন্যতা বঞ্চনা থাকবে না ।  থাকবে শুধুই ভালোবাসা ।

হৃদয়ের ক্যানভাসে এমন একটা পৃথিবীর ছবি'ই আমি আঁকি ।

কোন দিন কি হবে,  এমন একটা নির্মল পৃথিবী ? 




আমি খুবই স্বার্থপর,


আসলে ,

আমি খুবই স্বার্থপর,  শুধু আমার কথাই লিখি ,  

আমার ব্যাথাই ভাবি  আর কারও না ।

হোক না,  ক্ষতি কি ?  থাকনা দুএকজন আমার মতো ,  না হলে  "নিঃস্বার্থের" মর্মতা কি করে বুঝবো ?


আমি এমনই,  খুজি শুধু নিজের ভাবনা  লিখি নিজের কথা ,

কি জানি, হয়তো নিজের কথায়ই লুকিয়ে আছে  হাজার মনের ব্যাথা ।


কিই বা লিখি আমি ?  কি লিখবার ক্ষমতাই বা আছে আমার ?  একজীবনে সব ধারণের সাধ্য আছে কার ?

 

এই আকাশ, যে বিশালতা নিয়ে হাত বাড়ায় , 

সে আমার একার নয় , আকাশ যে সবাইকেই ছেয়ে দেয়।

এই দিগন্ত, যে মোহময়তা ছড়ায় ,  সে শুধু আমার নয় ,  সব হৃদয়কেই তাড়িয়ে বেড়ায় ।

এই বৃস্টি, যে বেদনা ঝড়ায় ,   সে আমার একার বেদনা নয় ,  সব হৃদয়ের হাহাকার বোঝায় ।

এই নদী, যে ভালোবাসা বিলিয়ে দেয় ,  

তা শুধুই আমাকে নয় ,  সব অস্তিত্তকেই জাগিয়ে দেয় ।


প্রকৃতির সান্নিদ্ব পাওয়ার এই আকুলতা, 

এ আমার একার নয়,  সবার ।

কেউ লিখতে পারে  কেউ লেখাতে পারে,  

কেউ ভাবে  কেউ ভাবাতে পারে ,

কেউ শোনে  কেউ শোনাতে পারে ,  

কেউ বলতে পারে  কেউ বলাতে পারে ।


আমি আমার বিষাদের কথা  বৃস্টির কাছে বলি 

আমার সুখ স্বপ্নের কথা  বিস্তৃত দিগন্তের কাছে বলি 

ভালোলাগা ভালোবাসার কথা  নদী ও আকাশের কাছে বলি ।

এ আমার কথা, আমাদের কথা, আমাদের সবার কথা       



অনেক কথা হয় বিনিময় তাহার সনে


প্রায়ই আকাশের দিকে তাকাই ,  

কখনো রাতের আঁধার কেটে ভোরের নতুন আলো ফোটার সময় ,

কখনো আলোকে বিদায় দিয়ে  আঁধার'কে বরণ করার রহস্যময় সন্ধ্যায়  ।

মাঝে মাঝে গভীর রাতে,  যখন চারদিক নিস্তব্ধ নিঝুম ।

আকাশের রূপ এত আপরূপ কেন ?

সময়ের সাথে সাথে হরেক রূপে হাজির হয় ।  

নিরবে, বারে বারে কত বার্তা দিয়ে যায় ।


দুপুরের ঝকঝকে আকাশ বলে,  কোথাও কোন ঝঞ্জাট নেই,  কিছু লুকিয়ে নেই কোনখানে ।   

কিন্তু,মেঘলা আকাশে, কিছু কি লুকিয়ে থাকে 

হিয়ার মাঝে অন্তরের অতলে ।

ভারি বাতাসের গন্ধে, মাতাল করে দেয় সব কিছু । 

অজানা দূর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে কিছু করুন সুর আমি কান পেতে রই ।


জোছনা রাতের আকশ বড় নিষ্ঠুর ,  পুরো মনোজগতে আলোরণের ঝর তোলে 


এলোমেলো ভাবনাগুলির নিরুদ্দেশ ছোটাছুটি ,  

কিছুই যে ধরতে পারিনা ।

আলতো ছুয়ে, কি জানি কি কয়ে, সাথে নিয়ে যায় বয়ে আমার যত প্রিয় যাতনা ।


গভীর রাতে আমি একা নিঃশ্চুপ আকাশ দেখি ,  

শুধু অপলক দেখি ।

না নিঃশ্চুপ নয় ,  অনেক কথা হয় বিনিময় তাহার সনে ,

আমরা বলি নিরব রাত ।  বোকামি কথা ।

কত চঞ্চলতা  উচ্ছাস তারকারাজীর মিছিলে ।  

উল্কা নক্ষত্র চাঁদ গ্রহানুপূঞ্জের বিশাল মেলায় ,

কে বলে আমি একা ? 



যখন বাতাস কানে কানে কিছু বলতে যায়


ঘুম ভাঙ্গলো শেষ বিকেলে ।

শেষ বিকেলে ঘুম ভাঙ্গলে কেমন অস্থির অস্থির লাগে,  কেন লাগে কে জানে ।

সময়'টাও অদ্ভুৎ  ।  আধো-আলো, আধো-আঁধারের লুকোচুরি খেলা ।

তখন খুব-একজন প্রিয়জনের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে ,  কেন করে ? 


শেষ বিকেলের অনেকটা সময় ,  জানালায় চুপটি করে বসে থাকি ।

কি যে ভাল লাগে ,  একটা শান্তি শান্তি ভাব হয়  ।

আমার জানাল'টা দখিনমূখি , যতদুর চোখ যায় শুধু সবুজের মাখামাখি -

কোন কোলাহল নেই শুধুই নিরাবতা ।


এ জানালা'টা আমার ভীষন আপন,  অতি প্রিয় ।  

শ্রাবনের আকাশ যখন  ঘন কালো মেঘে একাকার রণপ্রস্তুতির ,  

সব ফেলে আমি জানালায় এসে বসি ।

ভরা-পূর্ণীমায় যখন আকাশ ভেঙ্গে জোছনা নামে,  

গভীর রাতে একা নীরবে জানালায় বসে দেখি ।  

আষাঢ়ের বিষাদ-মাখা অবিরাম বৃস্টির সাথে  মিতালী,

সেতো জানালায় বসেই করি ।


এ মন যখন অকারন  কাঁদতে চায় ,

যখন বাতাস কানে কানে কিছু বলতে যায় ,  

হৃদয় যখন কিছু খুজে পেতে চায় ,  

আমি জানালায় এসে বসি 


মাঝে মাঝে ভর-দুপুরে  নির্জনে অলস আবেশে ,  

দুরে তাকিয়ে দেখি -

কে যেন এসেছে ,  এদিক সেদিক কিছু খুজছে । 

আমাকে কি কেউ ডাকছে ?




যখন অকারণ কাঁদতে চায় এ হৃদয়


আমরা হয়তো,  সাদা চোখে দেখতে পাইনা 

কিন্তু, একটু গভীর দৃষ্টি দিলেই দেখা যাবে প্রকৃতির কাছে আমরা কতটা ঋণি ।

আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে রহস্যময় প্রকৃতি ।  জন্ম থেকে মৃত্যু, কোথায় নেই প্রকৃতি ?


আমার যত বেদনা, যত যাতনা, যত সুখ, যত ভালোবাসা সবই এই প্রকৃতিকে ঘিরে ।


হ্যাঁ আছে,  কিন্তু তা নিয়ে ভাবার জন্য অনেক গুনিজনও দুনিয়াতে আছে ।  আমি অতি তুচ্ছের সেটা নিয়ে না ভাবলেও চলবে ।

আমি যা ভালোবাসি তাকে নিয়েই ভাববো, আমি যার কাছে থাকি  তাকে নিয়েই তো লিখবো ।

আমি যা পারি না, তা নিয়ে ভাবি না । যা নিয়ে ভাবি না, তা নিয়ে কাঁদি না, হাসি না,  কোন কথা বলি না ।


যখন খুব বিষাদে ভরে উঠে মন,  তখন আমি নদীর কাছে যাই  চুপটি করে বসে থাকি কোন কথা নয় ।

জোয়ারে জল, সব বেদনা ভাষিয়ে নিয়ে যায় ,  

না শোনা কতকথা চুপিসারে হয় বিনিময় ।

যখন স্বপ্নে ভাসতে ইচ্ছে করে, তখন বিস্তৃত খোলা দিগন্তের দিকে হাটি একা , তারে ছাড়া  কোন সারা নয় ।

মাতাল হাওয়া, কোথায় কোন অজানায় মেঘের ভেলায় করে উড়িয়ে বেড়ায় , কোন মিছে নয় ।

যখন খুব ইচ্ছে করে পাইতে,  ভালোবাসা বাসিতে, 

তখন রাতের জোছনার রুপালী আকাশে তাকাই ,  

কোন ভুল নয় ।

অন্যরকম মাদকতায় পুরোটা সময় , তছনছ হয়ে যায় অশুভ সব, মন ভরে যায় ঝকঝকে সোনালী আভায় ,  কোন ফাঁকি নয় 

যখন অকারণ কাঁদতে চায় এ হৃদয় , দুখবিলাসী হতে চায়, তখন বৃস্টির কাছে দুহাতে আঁচল বাড়াই , 

কোন পিছুটান নয় ।

ঘোরতর ঘোরে ঘোরে সময় যে যায় বয়ে, সবকিছু ছেড়েছুরে বৃস্টির জলে ধুয়ে , নতুন এক ভোরকে স্বাগত জানাই ।




আমার স্বভাব খানিকটা বোধহয় শামুকের মত 


গভীর রাতের নিস্তব্ধ সময়গুলো এত আনন্দময় হয় ,  

যে  মন কেমন করে উঠে ।

স্বর্গীয় এক অনুভূতি এনে দেয় মনে ।  

কিভাবে আনে কে জানে 

ভয়ংকর এক সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করে চারদিকে ,  অসহ্য সুন্দর ।


বেশীর ভাগ রাতগুলোই বারান্দায় বসে কাটাই ,

বাতী নিভীয়ে পুরো অন্ধকার করে ।

অন্ধকার দেখতে যে এত ভাল লাগে কে জানত ? 

ঐতো, জোনাকি পোকা জ্বলছে নিভছে ।  

ঝিঁ ঝিঁ পোকার ব্যাকুল করা ডাক কানে আসছে ।

কি অদ্ভুত সুন্দর !


আমার স্বভাব খানিকটা বোধহয় শামুকের মত ।

নিজের খোলসের ভিতরে মাঝে মাঝেই ঢুকে যেতে ইচ্ছে হয় ।

অতি প্রিয়জনের সঙ্গও সে সময় অসহ্যবোধ হয় ।

আচ্ছা, অতি প্রিয়জন বলে কি কেউ আছে ?


নীরব নির্জন বারান্দায় গভীর রাতের রহস্যময় অন্যরকম পরিবেশে ,

তন্দ্রাচ্ছন্য হয় ।  ভাবনাগুলো সব এলোমেলো স্বপ্ন আঁকে ।

তন্দ্রাচ্ছনের কল্পনাগুলো জীবন্ত হয়ে যায় , কথাও হয় ।  এই যেমন"   


কেমন সেই প্রিয়জন ?  কেমন সে জীবন ?  

গভীর রাতে যদি, পছন্দের কোন বইয়ের কয়েকটা পাতা পড়তে ইচ্ছে করে ,  তখন সে কি বলবে  । 

কিংবা মাঝে মাঝে যখন শামুকের মত নিজেকে গুটিয়ে  ফেলতে ইচ্ছে করবে,  তখন কি সে বলবে- 

কি সমস্যা তোমার , দরজা বন্ধ করে বসে আছ কেন ?  

সমস্যা তো নিজেই  জানিনা, তাকে বলবো কি করে ?  কি করে তবে হবে সে প্রিয়জন ।  


চাই না এমন প্রিয়জন ,  চাই না এমন প্রিয়তম ।

যে প্রিয়'রা আমায় ঘিরে রাখে সারাক্ষন , আমি তাদের কাছে যেতে চাই ।

শাবনের বৃস্টির কাছে যেতে চাই , যে আমার বিষাদ মাখা আনন্দগুলোকে বোঝে ।

আষাঢ়ের বাদল আমাকে ডাকছে,

আমি কিশরীদের মত ছুটছি , তীরের ফলার মত বৃস্টি এসে আমার গায়ে বিধছে ।

হাওয়ায় উড়ছে শাড়ীর আঁচল , আমি ছুটে যাচ্ছি হাওড়ের দিকে ।

বৃস্টিতে ভিজতে ভিজতে হাওড়ের পানি ছুয়ে দেখব 

হাওড়ের দিক থেকে শোঁ শোঁ শব্দ হচ্ছে ,  বাতাস পেয়ে ফুলে ফেঁপে উঠেছে হাওড়ের পানি ।

আমি সেদিকেই যাব ।


লেখা এবং ধন্যবাদান্তেঃ-------

মওদুদ আহমেদ মধু 

#_মিঃ_বুদ্ধিমান_গাধা®️



No comments

Powered by Blogger.