Ads

ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প। @মিঃ মধু

ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প।  



ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য
আনন্দের উৎস আসলে বেদনার কাছে, আর বেদনার উৎস আনন্দের কাছেই নিহিত। 
আনন্দ-বেদনা পিঠাপিঠি দুইভাই। একজন ছাড়া অন্যজনের কোন অস্তিত্তই নাই।
কিছু বোঝা গেলোনা তাইতো?

ধরুন, আপনি একটি মামলায় জিতেছেন। আপনার কি অনুভূতি হচ্ছে?
প্রচন্ড আনন্দ, খুশি, এবং সুখ উপলিব্ধি হচ্ছে তাইনা?
কেন? কারন আপনার প্রতিপক্ষ হেরে গিয়ে কস্টে দুঃখে, কাতর হয়েছে বলে।
অর্থাৎ, আপনি কিছু পেয়েছেন বলেই, প্রতিপক্ষ হারিয়েছে।
তা সেটা যা কিছুই হোক- ধন, সম্পদ, সন্মান, ইজ্জত, মর্যাদা, দায়িত্ব, দ্বায় বহুকিছু আছে।।
আপনার কিছু পাওয়া মানেই, বিপরীত দিকের হারানো।


ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য

এর সব থেকে বড় উদাহরণ হলো, বিশ্বকাপ ফুটবল মহাযজ্ঞ।
একদল যখন আনন্দে হই হুল্লোড় মাতামাতি করছে, সুখে ভেসে যাচ্ছে।
পাশেই তখন বিপরীত দল শোকে দুঃখে বিধ্বস্ত হয়ে নুয়ে পড়ছে অশ্রুসজল চোখে।
একসঙ্গে দুইজন (দুই দল) কখনই সুখ বা আনন্দের দাবিদার হতে পারবে না। 
তেমনি একইসাথে দুইপক্ষ কখনও বেদনা বা কস্ট প্রাপ্তি হবে না।
একজন (একপক্ষ) দুঃখ পেলে তবেই অন্যজনের আনন্দ প্রাপ্তি হবে,সুখ অনুভব হবে।
আপনাকে আনন্দ পেতে হলে প্রতিপক্ষকে বেদনা পেতেই হবে, এটাই বিধান এটাই নিয়ম। 

আপাতত জগতের শুরু থেকে এভাবেই চলে আসছে। জীবনের পরতে পরতে সব ক্ষেত্রে ছোট বড় সবরকম আনন্দ অথবা সবরকম বেদনার সুত্র বা উৎস এই একটাই।
যখনই একটা সুখের উৎপত্তি হয়, ঠিক তার পিছনেই দুঃখের ভিত থাকে।
সমস্যা হলো! এই চিরন্তন সহজ সত্যকে আমরা অনেকেই সহজভাবে নেই না। 
নিতে চাইনা বা নিতে পারিনা।

ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য

কিন্তু আমি এবার মেনে নিয়েছি!!!
কিভাবে??
৯০ এর বিশ্বকাপ ফাইনালে বিতর্কিত পেনাল্টি গোলে জার্মানী'র সাথে ০-১ ব্যাবধানে হেরে গিয়ে, আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি খেলোয়ার ম্যারাডোনা'র মধ্য মাঠে উবু হয়ে অঝোরে কান্নার দৃশ্য- 
আমার সেই ছোট্ট শিশু বয়সের কোমল হৃদয়ে প্রচন্ড রকমের দাগ কেটেছে। 
সময়ের সাথে সাথে সে দাগ মুছে তো যায়ইনি বরং আরো বেড়েছে। ম্যারাডোনার প্রতি যে মায়া তৈরী হয়েছিলো বহুবছর আগে, সেটা গিয়ে পড়েছে আর্জেন্টিনা নামক দলের প্রতি। একটা সময়ে "আর্জেন্টিনা" শব্দটার উপড়ে প্রেমে পড়ে গেলাম। দুঃখ, বেদনা, মায়া, ভালবাসা এর সমস্টি হয়ে গেলো আর্জেন্টিনা। ম্যারাডোনা যদি ঘানা বা কঙ্গোর হতেন, তখন ঐ নামটাই মায়ায় জড়িয়ে থাকতো।

পরবর্তী কালে ম্যারাডোনার ছায়া পড়েছে লিওনেল মেসির উপড়ে। 
চক্রাকারে আমার ভালবাসার মায়াজালে মেসিও আটকা পড়লেন। 
যদিও ব্যাক্তি মেসি অনেক সভ্য, সরল, ভদ্র। 
তবুও ভালবাসার উৎস সেই গুরু ম্যারাডোনা।

ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য

২০১৪ এর ফাইনালে- সেই একই আদলে, অপয়া জার্মানির সাথে ০-১ গোলে হেরে গেলো আমার মায়া-আমার অনুভূতির সবটুকু জুড়ে থাকা লিওনেল মেসি। 
৯০র সাথে পার্থক্য হলো বিতর্কিত পেনাল্টির জায়গায় অতিরিক্ত সময় ।

ভোর রাতে খেলা শেষে খোলা রাস্তায় হাওয়া খেতে খেতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, আজই শেষ আর কোনদিনই আর্জেন্টিনার সাপোর্ট করবো না!
প্রতিবারই এত বেদনা আর নিতে পারছিনা। ভালোবাসার সেই শুরু থেকেই বেদনারও শুরু হয়েছে। 
প্রতিবার শুধু কেঁদেই ফিরতে হচ্ছে।
বারবার যারা শুধু কান্না উপহার দিবে, তাদের সাথে আমি আর নেই!
এতবছর অপেক্ষার পর ফিরে এসে সোনালী সময়েও যখন স্বপ্নের ট্রফি পাওয়া হলো না। 
তখন আর আমি নেই এই মায়া'র জালের মধ্যে!

সিদ্ধান্ত স্থায়ী হলোনা, কয়েকদিনের ব্যাবধানেই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করতে হলো। ভেবে দেখলাম, মেসি বিশ্বকাপ ট্রফির কাছাকাছি পৌছেছে তিনবারের প্রচেস্টায়।
আর বড়জোড় একটা বিশ্বকাপ খেলতে পারবে সে। আগামী বিশ্বকাপ তার শেষ খেলা হতে যাচ্ছে। 
হয়তো শেষবারেই প্রিয় মেসি নিশ্চিত! হাতে কাপ নিয়ে, সেই বেদনার নীল আকাশের দিকে স্বপ্নের কাপ তুলে ধরে আমার এবং আমার মতো কোটি প্রাণের লালিত মায়ার পূর্ণতা এনে দিবে। 
আর সেই মাহেন্দ্রক্ষনে স্বাক্ষি হিসেবে আমি থাকবো না সেটা কি করে হয়?


ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য

সব হিসেব নিকেশের বাইরে গিয়ে শুধুমাত্র অদৃশ্য ভালবাসার বিশ্বাসের উপর ভর করে 
প্রতিক্ষা শুরু হলো ২০১৮ বিশ্বকাপের।
অপেক্ষার প্রহর একসময় শেষ হলো, ভোরের আলো ফুটে উঠলো নতুন বিশ্বকাপের।
শুরু হলো লড়াই। আসরের প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা! বুকের কোথায় যেনো চিনচিনে একটা ব্যাথার অনুভব হলো। দ্বিতীয় ম্যাচে রীতিমতো খাঁদে পড়ে গেলাম। এবার বেদনার পারদ চুড়ায়।

সমস্ত চেতনা অনুভূতি ভোতা হতে শুরু করেছে। কি করবো- কি না করবো
কিছুই বুঝতে পারছি না। পুরোপুরি অস্থিরতা বোধ করছি।
ব্যাক্তিগত সমস্ত বিষয় ছাপিয়ে, প্রিয় মেসির চুড়ান্ত সফলতা পাওয়া-না পাওয়ার বিষয়টা মূখ্য হয়ে গেছে।
জ্যামিতিক নানান সমিকরন পেরিয়ে ভালবাসার মেসিরা পৌছে গেলো দ্বিতীয় পর্বে।
কিন্তু হৃদয় এতটুকু শান্ত হয়নি। অশনি সংকেত ঠিক ঘাপটি মেরে রইলো বুকের গভীর কোনে।
বেলায় গড়ালো ঠিক সেই অশনি সংকেত এর অনুমান অনুযায়ি।
মেসিরা থেমে গেলেন দ্বিতিয় পর্বেই। 
করুন ক্লান্ত মুখে আকাশের দিকে তাকিয়ে সমাপ্ত করলেন তার বিশ্বকাপ ।

এর সাথে সাথেই সারা পৃথিবীর অর্ধেক প্রান থেমে গেছে।
সাথে থেমে গেছি আমিও। শুধু আমার উপড়টা সচল রইলো। 
ভিতরের সমস্ত চেতনা সহ সম্পূর্ণ আমি নিস্তব্ধ নির্বাক হয়ে গেলাম।
সেই রাতের পুরোটা সময় ভেবেছি। সত্যি পুরো রাত ঘুমাইনি।


ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য

নিশ্চয়ই ভাবছেন, এবার তাহলে আর্জেন্টিনা নামক ভালোবাসার যন্ত্রনাকে চিরতরে বিদায় দিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি?!!
হ্যাঁ, এমনটাই হওয়ার কথা ছিলো, পরিস্থিতি অন্তত সেটাই বলে।
মজার ব্যাপার হলো সেদিন পুরো রাত ভেবে ভোরের দিকে এসে ঠিক করলাম-
আমি, বাকি জীবনে কখনই ওদের ছেড়ে যাবোনা। কোথাও না, কোনদিন না।
আসলেই আমি ম্যারাডোনাকে ভালবাসি। লিওনেল মেসিকে ভালবাসি।

সব ভালোবাসা পূর্নাতা পায়না। 
সেই পূর্ণতা না পাওয়া, ভালোবাসার কাতারে না হয় যোগ হোক, আমার ভালোবাসাটাও।
কিছু মায়ায় সব সময়ই বেদনা মিশে থাকে।
বেদনা মেশানো সে মায়াগুলোয় দৃশ্যমান কোন পূর্ণতা থাকেনা ঠিক।
কিন্তু গভীর অনুভূতিতে মিশে থাকে অদৃশ্য কিছু পূর্ণতা। যেটা দৃশ্যমান পূর্ণতার থেকে বহুগুন বেশী মূল্যবাণ।

আমি জানি এটা আসেই পাগলামি ছাড়া কিছুই নয়। 
তবুও আমি ইচ্ছে করেই এই পাগলামী করে যাওয়ার পক্ষে মত দিলাম।
একটা পুরো জীবন লজিক দিয়ে কাটানো যায় না। জীবনের কিছু অংশ থাকতে হয় আবেগের নিয়ন্ত্রনে।
আমার ক্ষেত্রে সেই অংশটা একটু বেশীই।

তাই, আমি মেনে নিয়েছি, আমার ভালবাসাগুলি অপূর্ণতায়'ই পূর্ণ থাক।
আমি মেনে নিয়েছি আমার অনন্দগুলি অপূর্ণ থাকার বিনিময়ে, অন্য কেউ আনন্দের পূর্ণতার ভেসে যাক।
তাদের আনন্দে ভেসে যাওয়া দেখতে পাওয়ার মধ্যেও থাকে আরেক ধরনের আনন্দ। 

ডিয়াগো ম্যারাডোনা তথা লিওনেল মেসি'র উপড়ে প্রেমে পড়ার গল্প ।  @অদৃশ্য কাব্য

যে আনন্দ-সুখ কাউকে দেখানো যায়না। কাউকে বোঝানো যায়না।
শুধু তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে হয়।

সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছি, প্রতিবার আমাদের বেদনায় মাখিয়ে অন্যরা হুল্লোড়ে মেতে থাকুক। 
আড়ালে বসে সেই সুখ উপভোগ করেই বাকি জীবন পার করবো।
তবুও আমি ওদেরকেই ভালবেসেছি, ম্যারাডোনা- লিওনেল মেসি- আর্জেন্টিনা'কেই 
আমরন ভালোবেসে যাবো।
যে ভালোবাসায় মিশে থাকে মায়া, সেই ভালোবাসা কি ভূলে থাকা যায়??????

বিঃ দ্রঃ--- ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে লিখবো এই আসর শেষ হওয়ার পরে। 



ধন্যবাদ সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।
ধন্যবাদান্তেঃ------
মওদুদ আহমেদ মধু 
#_অদৃশ্য_কাব্য✅
(মিঃ মধু)

No comments

Powered by Blogger.