Ads

এই অবেলায় পাগলামী পাগলামী প্রেমের ছোটো গল্প। #মিঃ_বুদ্ধিমান_গাধা®️

এই অবেলায় পাগলামী পাগলামী প্রেমের ছোটো গল্প।  #মিঃ_বুদ্ধিমান_গাধা®️




এই অবেলায় পাগলামী প্রেমের ছোটো গল্প।  #মিঃ_বুদ্ধিমান_গাধা®️





এই অবেলায়ঃ----- 


মাহমুদ বাসায় ঢুকেছে নিঃশব্দে পা টিপে টিপে ।
বেলা১১টা ৪০ বাজে। আজ অফিসে এ বেলা কোন চাপ নেই, দুপুরের পরে দম ফেলার সময় থাকবে না। হাতে সময় আছে এজন্যই মাহমুদের এই পরিকল্পনা।
অবশ্য সে প্রায়ই এমন সব উদ্ভট কান্ডকারখানা করে। আজ কেনো জেনো একটু বেশী মাত্রায় করতে খুব ইচ্ছে করছে।
এই সময়টা নিতু প্রচন্ড ব্যাস্ত থাকে বাসায়, অথচ এত ব্যাস্ত থাকার তেমন কোনই কারন নাই। 
তারা দুজন মাত্র মানুষ। চাল ফুটিয়ে দুটো ডিম ভেজে নিলেই মামলা শেষ। কিন্তু নিতুর এই তুচ্ছো ব্যাপার নিয়েও বাস্ততার শেষ নাই। 
মাহমুদের পছন্দের খাবার কিভাবে কিভাবে যেনো সামান্য জিনিসের মধ্যে দিয়েই সেরে ফেলে। 
খুব যন্ত করে প্রতিটা কাজ সে করবে। নিতুর বিশ্বাস, সামান্য উপকরণ দিয়েও অসামান্য খাবার তৈরী করা যায়, শুধু যত্ন আর সময়টা দিতে হবে বেশী করে। 
এই তথ্য নিতুর নিজের আবিস্কার।

মাহমুদ পরিস্কার জানে নিতু এই সময় রান্নাঘরে ছাড়া আর কোথাও থাকবে না। সে সোজা রান্না ঘরের দিকে চলে এসেছে। তার একটাই চিন্তার কারন, 
কোন অবস্থায়ই যেনো উদ্দেশ্য সফল হওয়ার আগে ধরা পড়ে না যায়। কিছুদিন আগের এমনই এক পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে ধরা পরে যাওয়ায়। 
আজ তার ভাগ্য ভাল, নিতু এখন পর্যন্ত কিচ্ছু টের পায়নি।
মাহমুদ আর কোন সময় না নিয়ে সোজা গিয়ে নিতুর পিছন দিক দিয়ে নিতুকে জড়িয়ে ধরলো। নিতুকে প্রায় কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কোলে তুলে নিয়ে উল্টো ঘুরে বেডরুমের দিকে হাটা দিলো। 
নিতু এখনও ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারেনি, ঘটনার ঘোরে সে শুধু এই কি করছো' এই কি করছো' ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছে না। মাহমুদের মুখে কোন কথা নেই। এখন কিছু বলা যাবে না, তাহলে আর চমক থাকলো কোথায় ?

রুমে এসে নিতুকে বেডের উপর ফেলে মাহমুদ তার দুই হাত দিয়ে নিতুর দুই হাত দুদিকে চেপে ধরেছে। এতক্ষনে নিতু বুঝতে পারলো কি হতে যাচ্ছে। মাহমুদের এই কান্ড নিতুর জানা। তবুও প্রতিবাই নতুন মনে হয়। প্রতিবারই ভিন্ন অনুভূতি দেয়। 
একারনেই এখন সে চুপ করে আছে আজকের নতুন সংযোজন কি সেটা দেখার জন্য। মাহমুদ নিতুকে এমনভাবে চেপে ধরেছে নিতু প্রায় নড়তে পারছে না। তারপরে অদ্ভুদ একধরেন ভালোলাগছে। এই ভালোলাগা নিতু আগে কখনও পায়নি।

মাহমুদ নিতুকে ইশারা করলো চোখ বন্ধ করতে। বিস্ময়ের ব্যাপার, নিতু মাহমুদের সব ইশারা চট করে ধরতে পারে। নিতু সাথে সাথে চোখ বন্ধ করলো । 

মাহমুদ নিজেও চোখ বুজে নিতুর কপালের ঠিক মাঝখানে লম্বা সময় নিয়ে গভীর একটা চুমো একে দিলো। এই পর্যায়ে এসে মাহমুদ প্রথম কথা বললো; "এই শোনো, তুমি এভাবেই থেকো শেষদিন পর্যন্ত, কখনও ভূল করেও ভূলে যাবে না, তাহলে তোমাকে নিজ হাতে খুন করে ফেলবো" ।

কথাটা শেষ করেই সে নিতুকে ছেড়ে উঠে পড়েছে। দেরী হয়ে যাচ্ছে.এখান থেকে অফিসে যেতে অনেক সময় লাগবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ১২টা১০। আর দেরী করা যাবে না। মাহমুদ নিজেকে গুছিয়ে দরজার দিকে অগ্রসর হলো।
নিতু যদিও সব বুঝতে পেরেছে, তবুও যেনো কিছুই হয়নি এমন ভাব করে মাহমুদের পিছনে পিছনে আসতে আসতে জিজ্ঞেস করলো;
- এই, তুমি হঠাৎ অফিস থেকে চলে এলে যে? এসেছো-এসেছো আবার যাচ্ছো কেনো?
- আজ অফিসে যাওয়ার সময় তোমার প্রাপ্য তোমাকে দিয়ে যেতে মনে ছিলো না, এজন্যই আবার এসেছি।
- শুধুই ওটা দেওয়ার জন্য!
- হ্যাঁ, আর কোন কাজ থাকলে তুমি তো দেখতেই।
- তাই বলে এভাবে? সাধারন ভাবেও তো দিতে পারতে।
- আশ্চর্য, আমি যেভাবে পারি সেভাবেই তো দিবো।
যাওয়ার সময় বিরক্ত করনাতো, আমি যাচ্ছি দরজা লাগিয়ে দাও। এটা মাহমুদের নিজস্ব একটা কৌশল! নিতুকে ভালোবাসা দেওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকবে, কিন্তু উপরে রাগী একটা ভাব ধরে রাখবে। 
বড় অদ্ভূত সে ।

নিতুর এখন কান্না পাচ্ছে। কি হয় মানুষটা সারাটা সময় বাসায় থাকলে? নিতু মনে প্রানে চাইছে আজ সারাদিন মাহমুদ বাসায় থাকুক। 
তাকে কিছুই করতে হবে না, শুধু নিতুকে চোখে চোখে রাখবে। নিতু তুচ্ছো সব কাজে ব্যাস্ত থাকবে, মাহমুদ চুপচাপ বসে বসে দেখবে। বিরাট ব্যাস্ততার ফাকে ফাকে এসে মাহমুদের সাথে অকারনে চেচাঁমেচি করবে;

"কি করেছো বিছানার? দুই মিনিট হয়েছে বসেছো, 
এর মধ্যে বালিস দুটো নিচে ফেলেছো।
"একি, কিছুক্ষন আগেই টেবিলের উপরে চুলের ক্লিপ রেখেছিলাম। এখন গেলো কোথায়? পাচ্ছিনা কেনো? তুমি নিয়েছো নাকি?"

মাহমুদ প্রথমে হয়তো ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাবে। নিতুর আচরণের মাথামুন্ডু কিছুই ধরতে পারবে না। নিতু তখন মুচকি মুচকি হাসবে। আর মনে মনে বলবে; "মানুষটা কি গাধা নাকি? 
সে জানেনা নিতুর একান্ত গভীরে এখন অসিম সুখের বারিধারা বইছে। কেনো মানুষটা বুঝতে পারছে না, 
এই মূহুর্তে একমাত্র সুখি মানুষ যদি কেউ থাকে তাহলে সেটা নিতু!



পাগলামী পাগলামী ভালোবাসাঃ---- 

আচ্ছা প্রেমে পড়েনি, বা প্রেম করেনি এমন মানুষ কি সত্যিই আছে ????
সাধারনভাবে দেখলে হয়তো মনে হবে-
অমুক মানুষ প্রেম করে না! কর্কট স্বল্পভাষি মানুষ, সে আবার প্রেমট্রেম কি করবে?
কথাটা বোধ হয় সত্য না। আবার ঠিক মিথ্যাও না। একটু গভীরভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে,
আসলে সকলেই প্রেমের ষ্পর্শ অনুভব করে।

মাহমুদও এমনটাই জেনে এসেছে এতদিন,
এই ব্যাপারটা তাকে দিয়ে হবে না।
কিন্তু, খুবই অবাক হয়ে সে আবিস্কার করলো, সে আসলে প্রেমের ছায়াতলে আছে, এবং বেশ জোড়েসোরেই আছে। অবশ্য তার এই প্রেম কেউ দেখতে পায় না, সে নিজেও তো দেখতে পায় না।
শুধু অনুভব করতে পায়।
মাহমুদ কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না, তার বেলায় কিভাবে সম্ভব হলো এটা? মাহমুদ ভেবেই নিয়েছিলো, এই অধরা তাকে কখনও স্পর্শ করবে না। কিন্তু গভীর বিস্ময়ে সে লক্ষ করলো, কোন কারন ছাড়াই তার হৃদয়ে কেমন কেমন করে। যেনো সবকিছুই ঠিক আছে, তবুও যেনো কিছুই ঠিক নাই ধরনের একটা বোধ।
বহুকাল আগে মাহমুদ মানষ কল্পনায় একেঁছিলো তার প্রিয় মানুষের প্রতিকৃতি। সেই মানুষটার আচরণ কি হবে, কোন ভঙ্গিমায় সে কথা বলবে, কোন ধরনের অভিমান করবে? মাহমুদের খুব যখন মন কেমন কেমন করবে, তখন সেই মানুটা কি কি ভাবে সব সামলাবে এসব কিছুই মাহমুদের ইচ্ছানুযায়ি আঁকা। খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার, মাহমুদ গভীর বিস্ময়ে লক্ষ করলো, মানষপটে আঁকা তার সেই প্রতিমা এখন জীবন্ত হয়েছে। মাহমুদের খুঁজে নিতে হয়নি, কল্পনার রানী'ই মাহমুদকে খুঁজে নিয়েছে।

সেই ভাবনার রানী এখন প্রায়ই মাহমুদের সামনে বসে থাকে, চুপি চুপি হাটাচলা করে, নিঃশব্দে কথা-বার্তা বলে। নিঃশব্দ হলেও মাহমুদ প্রতিটি কথা শুনতে পায়, বেশ পরিস্কার শুনতে পায়। যেকোন অবস্থায়ই মাহমুদ দেখতে পায়, মেয়েটা তার সাথেই আছে, একটা মূহুর্তের জন্যও মেয়েটা তার কাছ থেকে সরে যায় না।
মেয়েটা এত মায়াবী কেনো? এত লক্ষি কেনো? এটাই মাহমুদ বুঝতে পারে না।

নানা রকমের খুনসুটি করে পার হয় তার প্রেমের এক একটি দিন। খুনসুটি পাগলামী যা করার পুরাটা অবশ্য নিতুই করে। মাহমুদ শুধু প্রান ভরে উপভোগ করে। পার্থক্য শুধু এখানেই. নিতু কিছুতেই মাহমুদের এই আনন্দ দেখতে পায়না! বুঝতে পারে কি না কে জানে।
গভীর দুঃখ মেশানো আনন্দে মাহমুদের চোখ ছলছল করে উঠে।
মাহমুদের খুব জানতে ইচ্ছে করে, নিতু কি বুঝতে পারে?- মাহমুদের সবটা তাকে দিয়ে রেখেছে। পাগলীটার জন্য গভীর মমতায় মাহমুদের চোখ ভিজে উঠে।
ভাগ্যিস নিতু তার চোখের পানি দেখে না, দেখলে বড় লজ্জার ব্যাপার হতো। ভিতরে কোথায় যেনো ডুকরে ডুকরে কেদেঁ উঠে। এমন করে মাহমুদকে কেউ শাষন করবে, তার প্রতিটা সময়ের হিসেব কেউ কোনদিন রাখবে, এটা যে তার কল্পনাতেও ছিলোনা। কথাটা ঠিক হলো না! কল্পনাতে অবশ্য ছিলো, কিন্তু সত্যি সত্যি এটা ঘটবে সেটা ছিলো না।

কত বিচিত্র সব কান্ড করে মেয়েটা--
মাহমুদ নিজে নিজেই হাসে, কখনও কাঁদে !
-এই, আমি যতক্ষন ছিলাম না, ততক্ষন কি কি করছো ?
-এই কোথায় তুমি? এখোনও আসোনায়, দাড়াও আজ তোমার খবর আছে।
-এই দাড়াও তোমার মাথায় পানি ঢালবো। না, তোমাকে পুকুরে চুবাবো।
-
মাহমুদের ভয় হয়, খুব ভয় হয়!
সে কি পারবে নিতুর এই পবিত্র সরলতার মূল্য আমরন রক্ষা করতে ??



বদলে যাওয়া প্রেমের ভাষাঃ---- 

একটু কি বদলে যাচ্ছে নিতু!
অথচ এমন হওয়ার কথা তো ছিলো না। কেনো এমন হলো??? মাহমুদ বুঝতে পারছে না ।
সময়ের সাথে সাথে মাহমুদ একটু একটু করে মরে যাচ্ছে! নিতুর নিশ্চয়ই সেটা চোখে পড়ার কথা।
অবশ্য মাহমুদ যা করছে তাতে চোখে না পড়ারই কথা!
মুসকিল হলো, মাহমুদ খুবই অন্তর্মূখি স্বভাবের। যা হওয়া উচিৎ মেয়েদের। এ নিয়ে মাহমুদ নিজের কাছেই অস্বস্তিতে থাকে। কিছুতেই ভিতরের কথা নিতুকে বলবে না। কোথায় যেনো শুনেছে; গভীর ভাললাগা বুঝতে দিতে নেই, তাতে সে ভালোলাগা গুরুত্বহীন হয়ে যায়। কি ভয়ংকর কথা! যার জন্য সমস্ত অন্তরাত্বা হাহাকার করে, তাকে সেটা বুঝতে দেওয়া যাবে না!
তবুও এই ব্যাপারটা মাহমুদের মনে ধরেছে। সে ঠিক করে রেখেছে, নিতুকে সে কখনই তেমন কিছু বলবে না। মাহমুদ দেখতে চায়, তার অব্যাক্ত ব্যাথা নিতু ধরতে পারে কিনা?
কে জানে হয়তো নিতু বদলে যায়নি, মাহমুদের দেখার ভূলও হতে পারে। নিতু আসলে আরও একটু বাজিয়ে দেখছে ।

মাহমুদ নিতুর সাথে কথা বলে অন্যদিকে তাকিয়ে । চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বললে যদি নিতু তার দুর্বলতা বুঝে ফেলে। বড় লজ্জার ব্যাপার হবে।মাহমুদ প্রতিনিয়ত গভীর গোপনে গুটুর গুটুর করে নিতুর সাথে গল্প করে। বেলা অবেলায় নানান বাহানায় সে নিতুকে চমকে দেয়। নিতু কি তা টের পায় ??
কোন কোন গভীর রাতে মাহমুদ ঘুম ভেঙ্গে উঠে পড়ে, চারিদিকে উথাল পাথাল জোছনা। মন কেমন কেমন করা পরিবেশ ।
বুকের ভিতরে কোথাও একটা শীতল কিছু বয়ে যায়। মাহমুদ মনে মনে বলে;
"এই পাগলী, তুমি আমার এই ভাঙ্গা বুকে শুয়ে থাকো। আর যখন খুব কাঁদতে ইচ্ছে করবে, আমার বুক ভিজিয়েই কাঁদো। আমাকে ভালো টালো না বাসলেও চলবে, শুধু তুমি ভালো থেকো...
তোমার অভিমানের পালা শেষ হয়ে গেলে,
কখনো খুব ঘুম পেলে আমার পাশেই ঘুমিয়ে যেও...
মাঝরাতে চোখটা খুলেই যাতে তোমার মায়াবী মুখটা
দেখতে পাই...বেশী কিছু না, এভাবেই শুধু
পাশের বালিশে একটু জায়গা দিও !!"
আমি কখনো কোনদিন জানতে চাইবো না,
''তোমার অতীতে কে ছিল ? তোমার
শরীরে কারো গন্ধ লেগে আছে কিনা,
সেটা শুঁকে দেখারও আগ্রহ নেই !!
কারণ আমি কুমার যার দরুন তুমি ও এমন হবে।

মজার ব্যাপার হলো, মাহমুদ মনের একটা অংশ চায়, তার এই অবিব্যাক্তি নিতু ধরে ফেলুক।
নিতু কি কখনও পারবে ধরতে??
নাকি কোনদিন কেউ জানবে না, মাহমুদের ভিতরে কতটা ক্ষত হয়েছিলো ??




  মওদুদ আহমেদ মধু 
#_মিঃ_বুদ্ধিমান_গাধা®



No comments

Powered by Blogger.